খুঁজুন
রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১০ কার্তিক, ১৪৩২

তীব্র ভাঙন আতঙ্কে ফরিদপুরের পদ্মা পাড়ের দুই শতাধিক পরিবার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৫২ এএম
তীব্র ভাঙন আতঙ্কে ফরিদপুরের পদ্মা পাড়ের দুই শতাধিক পরিবার

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার পদ্মা নদী তীরবর্তী গ্রামগুলোতে আবারও শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। বছর জুড়ে নদীর ভয়াল তাণ্ডবে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, বসতভিটা হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে অসংখ্য পরিবার। এবারে নতুন করে শুরু হওয়া ভাঙনে আতঙ্ক আরও বাড়িয়ে দিয়েছে স্থানীয়দের মাঝে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আকোটের চর ইউনিয়নের শয়তানখালী ও ছলেনামা গ্রাম এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এছাড়া আকোটের চর গুচ্ছ গ্রামের পরিস্থিতি এখন সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এই তিন এলাকার প্রায় ২’শ পরিবার নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছেন।

স্থানীয় বাসিন্দা মালেক প্রামানিক বলেন, বছরের পর বছর ধরে আমরা ভাঙনের শিকার হচ্ছি। এখন আবার নদী খেয়াল করেছে আমাদের ঘাড়ে। ঘর-বাড়ি ছেড়ে কোথায় যাব, কিছুই বুঝতে পারছি না।

শয়তানখালী ঘাটের চা বিক্রেতা মোতালেব বেপারী জানান, এই এলাকায় এবছর নদীতে প্রায় শতাধিক বিঘা জমি ও গাছপালা নদীগর্ভে চলে গেছে। অনেক পরিবার ঘরবাড়ি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকিয়া সুলতানা জানান, বিষয়টি সম্পর্কে আমরা অবগত আছি এবং জরুরি ভিত্তিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা চলছে বলে তিনি দাবি করেন।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান, পদ্মার পানি কমতে শুরু করলেও ভাঙনের ঝুঁকিও বাড়ছে। আমরা ভাঙনপ্রবণ এলাকাগুলোতে পর্যবেক্ষণ করে ৬০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৩ হাজার জিও ব্যাগ ফেলেছি । নতুন করে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে সে বিষয়ে খুব শিগগিরই টেকসই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয়দের জোর দাবি, ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও দ্রুত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। না হলে আগামী দিনে এই অঞ্চল থেকে বহু পরিবার স্থায়ীভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়বে।

ফরিদপুরে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরবাসীকে ফুল দিয়ে বরণ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৩৭ এএম
ফরিদপুরে মাদারীপুর ও শরীয়তপুরবাসীকে ফুল দিয়ে বরণ

ফরিদপুর বিভাগ ঘোষণার কার্যক্রম শুরু হলে তার বিরোধীতা করে আন্দোলনে নামে মাদারীপুর ও শরিয়তপুর জেলার বাসিন্দারা। এই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে ফরিদপুরের মানুষের সাথে উতপ্ত বাক্য বিনিময় এই অঞ্চলে বেশ কয়েকদিন আলোচনায় ছিল।

মাদারীপুর ও শরিয়তপুর জেলার মানুষ ফরিদপুর বিভাগে থাকতে রাজি না হওয়ায় এই জেলায় আসা না আসা নিয়েও নানা কথা চলছিল। এরই মধ্যে শনিবার (২৫ অক্টোবর) খাদ্য অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক পদে নিয়োগ পরীক্ষা ছিল। বৃহত্তর ফরিদপুরের জেলা হিসেবে শরীয়তপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জের ভ্যেনু ছিল ফরিদপুর।

ফলে পরীক্ষার্থীয় অংশ নিতে ফরিদপুরে আসতে হয়েছে মাদারীপুর ও শরিয়তপুরবাসীদেরও। তাদের যেন ফরিদপুরে থাকা খাওয়ার কোন সমস্যা না হয় তার জন্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস পোষ্ট করেন ফরিদপুরের ছাত্রনেতা খায়রুল ইসলাম রোমান।

খায়রুল ইসলাম রোমান বলেন, পোস্ট দেওয়ার পর ওই দুটি জেলার ৪০ জন পরীক্ষার্থী তার সাথে যোগাযোগ করেন। তারা একদিন আগে গতকাল শুক্রবার ফরিদপুর চলে আসেন। তাদের হাতে লাল গোলাপ তুলে বরণ করে নেওয়া হয়। পাশাপাশি ওই ৪০ জনের আবাসন ও খাওয়ার ব্যবস্থা বিনামূল্যে করা হয়।

বেলা ১১টার দিকে এ নিয়োগ পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজে কেন্দ্রের সামনে “আমরা ফরিদপুরবাসী”র পক্ষ থেকে দূর দূরান্ত থেকে আগত অন্তত দুই শতাধিক পরীক্ষার্থীদের হাতে খাবার পানি, জুস, ফুল দেওয়া হয়।
পরীক্ষা শুরুর আগে তাদের মোবাইল ও ব্যাগ সংরক্ষণ করা হয় এবং পরীক্ষার পর তা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। ব্যতিক্রমধর্মী এ আয়োজন করে তরুণদের উদ্যেগে গঠিত ফরিদপুরের কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। এর সমন্বয়ক ছিলেন তরুণ স্বেচ্ছাসেবী খায়রুল ইসলাম রোমান।

শরীয়তপুরের পরীক্ষার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, দুশ্চিন্তায় ছিলাম। কিভাবে সকালে রওনা দিয়ে পরীক্ষা দিতে আসবো। আবার একদিন আগে এসে কোন হোটেলে থাকবো। কিন্তু হঠাৎ ফেসবুকে এমন আন্তরিক পোস্ট দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। ফরিদপুর শহর অনেক সুন্দর। একসময় আমরা একই জেলার মানুষ ছিলাম।

মাদারীপুর থেকে আসা পরীক্ষার্থী জহির উদ্দিন বলেন, ফেসবুকে পোস্ট দেখে ভেবেছিলাম কি না কি হয় সত্যি নাকি মিথ্যা বুঝতে পারছিলাম না। কিন্তু আসার পর ফরিদপুরের মানুষের আন্তরিকতা দেখে অবাক হলাম। দূর থেকে এসেও এক বারের জন্যও মনে হয়নি ভিন্ন কোন জায়গায় এসেছি। ফরিদপুরে পরীক্ষা দিতে এসে আন্তরিকতার যে ছোঁয়া পেয়ে গেলাম তার তুলনা নেই।

“আমরা ফরিদপুরবাসী”র ব্যানারে ছিলেন, আবরার ফাহাদ, কাজী রিয়াজ, মাহমুদুল হাসান, নিলয় চৌধুরী, পারভেজ হাসান, বাহারুল ইসলাম, আশিকুর রহমান, অমি চৌধুরী, ইয়াসীন মন্ডল, রবিউল ইসলাম, রাহুল ভান্ডারী প্রমুখ।

আবরার ফাহাদ বলেন, সম্প্রতি ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নের বিরোধিতা করে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ফরিদপুর সম্পর্কে অনেক নেতিবাচক কথা বলেছেন। আমরা আমাদের আচরণের মধ্যে দিয়ে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। যে ভাবে তারা আমাদের চিত্রিত করার চেষ্টা করছে সেটি সঠিক নয়। আমরা সকলেই বৃহত্তর ফরিদপুরের অধীবাসী। আমরা একই সংস্কৃতির মানুষ।

সালথা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে জামায়াতের সংবর্ধনা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৩৮ পিএম
সালথা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটিকে জামায়াতের সংবর্ধনা

ফরিদপুরের সালথা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কার্যনির্বাহী কমিটিকে সংবর্ধনা দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। ফরিদপুর-২ (সালথা-নগরকান্দা) আসনে দল মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মাওলানা সোহরাব হোসেনের পক্ষ থেকে এই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।

শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে নগরকান্দা উপজেলার তালমা বাজারে মাওলানা সোহরাব হোসেনের নির্বাচনী কার্যালয়ে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সালথা প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত কমিটির সকল সদস্যদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা সোহরাব হোসেন নবনির্বাচিত সাংবাদিকদের অভিনন্দন জানান এবং সমাজ উন্নয়নে সাংবাদিকদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা আবুল ফজল মুরাদ আশা প্রকাশ করেন, নতুন কমিটি বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে সালথার উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরাও জামায়াতের পক্ষ থেকে এই সংবর্ধনা দেওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

সালথা উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মাওলানা আবুল ফজল মুরাদের সভাপতিত্বে এবং সালথা উপজেলা সেক্রেটারি মো. তরিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম নাহিদ, সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, সহ-সভাপতি মো. লিয়াকত হোসেন, মো. রেজাউল করিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক মো. মোশারফ মাসুদ, দপ্তর সম্পাদক মো. লাভলু মিয়া, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আকাশ সাহা, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক নিজাম তালুকদার, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. পারভেজ মিয়া, এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মো. জাকির হোসেন, এমকিউ হোসাইন বুলবুল, মো শরিফুল হাসান, জামায়াতের নগরকান্দা উপজেলা সেক্রেটারি বিএম মাওলানা ফজলুর রহমান, তালমা ইউনিয়ন সভাপতি মো. এনায়েত হোসেন, সালথা উপজেলা জামায়াত নেতা মো. ওয়ালিউজ্জামান, মো. লিয়াকত হোসেন মিয়া সহ সালথা ও নগরকান্দা উপজেলা জামায়াতের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও কর্মীরা।

ফরিদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৮ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:০০ পিএম
ফরিদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে ৮ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

হঠাৎ ছিনতাই বেড়ে যাওয়ায় ফরিদপুরে ছিনতাই বিরোধী বিশেষ অভিযান চালিয়েছে পুলিশ। এসময় ৮ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারীদের শনিবার (২৫ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময়ে ফরিদপুর শহরের বিভিন্ন মহল্লায় এ অভিযান চালায় পুলিশ।

গ্রেপ্তার হওয়া ছিনতাইকারীরা হলেন, ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরের মালাঙ্গা এলাকার সমর বসুর ছেলে সাগর বসু (২৫), শহরের লালন নগর বস্তি এলাকার হান্নান বেপারীর ছেলে তাকবির বেপারী (২০), একই বস্তি এলাকার লুৎফর শেখের ছেলে সোহান শেখ (২২) ও ইয়ামিন শেখ (১৯), শহরের লক্ষীপুর এলাকার জয়নাল আবেদীন তারার ছেলে মো. রাব্বি (৩০), যশোরের অভয়নগর উপজেলার গোপীনাথপুর এলাকার ইমান আলীর ছেলে মুকুল শেখ (৩৬), হাবেলী গোপালপুর এলাকার মো. রাকিবের ছেলে সোহেল মিয়া (৩৭) এবং ছাপরা মসজিদ এলাকার বাবুল হকের ছেলে মো. রফিক (১৯)।

এছাড়া অন্য একটি মামলায় মীর শাখাওয়াত হোসেন নামের অপর এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেন।

তিনি ফরিদপুর প্রতিদিনকে বলেন, ‘শুক্রবার দিবাগত রাতের বিভিন্ন সময়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ছিনতাই বিরোধী অভিযান চালানো হয়। এ সময় ৮ ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছিনতাই নির্মূলে পুলিশের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।’