খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে ফরিদপুরের কুমার নদ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে ফরিদপুরের কুমার নদ
দখল-দূষণে ফরিদপুর কুমার নদ। এ যেন দেখার কেউ নেই। মাঝে  মাঝে জেলা প্রশাসন এবং শরীতুল্লাহ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি কুমার নদটি বাঁচানোর চেষ্টা করলেও কেউ শুনেন না কারোর কথা।
কুমার নদের  তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল ফরিদপুর শহর। সময়ের বিবর্তনে সেই শহরই এখন নদটিকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে চলেছে।
দূষণ আর অবৈধ দখলের কারণে নদটি আগের রূপ হারিয়েছে। নদের বেশকিছু অংশ এতটায় দূষিত হয়েছে যে, দুর্গন্ধে পশু-পাখিরাও পানি পান করতে পারে না।
এদিকে, ফরিদপুর পরিবেশ রক্ষায় কুমার নদের দূষণরোধে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল। তা না হলে আর কয়েক বছর পর চেষ্টা করেও কুমার নদকে বাঁচানো সম্ভব হবে না বলেই অভিমত তাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুরের হাজী শরীয়তুল্লা বাজারের সিংহভাগ , বড় বাজারের সব আবর্জনা ফেলা হয় নদের ধারে। পূর্ব পাশে নিউমার্কেট এলাকার মিষ্টি কারখানা ও খাবার হোটেলের সমস্ত বর্জ্য পঁচাবাসি থালা-বাটি ধোয়ার সমস্ত আবর্জনা ফেলা হয় নদের পানিতে। এছাড়া পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নদীতে এসে শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন স্থানের আবর্জনাও নদীর পাশে স্তূপ করে ফেলা হয়েছে। ফলে আবর্জনাগুলো নদীর পানিতে মিশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করছে।
এদিকে, শুধু দূষণই নয়, ফরিদপুর কুমার  নদের দুই তীরবর্তী স্থান দখল হয়ে গড়ে উঠছে বড় বড় দালানকোঠা। তবে প্রশাসন নদটির বিষয়ে যেন একেবারেই উদাসীন।
ফরিদপুর কুমার নদ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, নদটির পানি দূষণমুক্ত রাখতে আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি এবং এখনো অব্যাহত আছে। আমরা একাধিকবার বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছি কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। শুধু প্রশাসন আশ্বাসের সুর দিয়ে চলেছে দূষণ-দখল মুক্ত হবে কিন্তু বাস্তবে তা পূরণ হয়নি। দিনদিন দূষণ বাড়ছে, একইসঙ্গে বাড়ছে দখল।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষা করতে হলে নদী/ নদ বাঁচাতে হবে। তাই প্রশাসন যদি এগিয়ে আসে মাথাভাঙ্গা নদীও বাঁচানো সম্ভব।
নদের তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা আ. রহিম ইসলাম বলেন, এই নদের পানি আগে সব কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হওয়ায় পানি ব্যবহার করা যায় না। নদীতে এখন গোসল করা তো দূরের কথা, পানির দুর্গন্ধের কারণে কাছেই যাওয়া যায় না।
নদের পাড়ের আরেক বাসিন্দা তানিয়া বেগম বলেন, আগে আমরা এই নদের পানি দিয়ে রান্নার কাজ সারতাম। আর এখন তো গোসল করাই যায় না।
আর্বজনা কুমার  নদে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর  পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক  (ডিডিএলজি) চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, আমাদের পৌর শহরের যত ময়লা-আর্বজনা ড্রেনের মাধ্যমে কুৃমার  নদে যায়। আসলে আমাদের এ আবর্জনার জন্য নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় এগুলো হয়ে থাকে। তবে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আমরা পৌর শহরের আর্বজনা ও ড্রেনের ময়লা পানি যেন কুমার নদে না যায় সেজন্য ড্রেনের মুখে নেট দেবো। এতে কিছুটা হলেও পানি দূষণ থেকে বাচাঁতে পারবো।
নদী সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর  পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, নানাভাবে এখন কুমার নদের পানি দূষণ হচ্ছে। একইসঙ্গে দখলও হচ্ছে। এ নদ আর আগের মতো নেই। এজন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। যতটুকু সম্ভব আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তারপরও সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই কেবল নদটি আগের রূপে ফিরে আসা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ফরিদপুর কুমার নদটি প্রমত্তা পদ্মার ফরিদপুর জেলার প্রধান শাখা নদ। এই নদটি বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলাকেই  ঘিরে আছে।
২০ বছর আগেও ফরিদপুর জেলা থেকে বহত্তর জেলা নৌকায় করে ব্যবসা বাণিজ্য চলতো হরদম। ৪০ বছর আগে এই নদ দিয়ে রীতিমত লঞ্চ চলাচল করতো। ফরিদপুর-গোপালগঞ্জ, টেকেরহাট, মুকসুদপুর, কাশিয়ানি, মাদারীপুর, ডাসা, ডাম্যুইডা,নশরীয়তপুরের সাথেও ছিল নৌকা, ছোট ছোট লঞ্চ চলাচলের জনাকীর্ণ অবস্থা। আজ সেই যৌবন ভরা ও ব্যবসাবান্ধব নদটির দীর্ঘ ২ শত কিলোমিটার নদ আজ দখলও ভরাট হয়ে কালের স্বাক্ষী হতে চলছে। জরুরি ভিত্তিতে সরকারি  হস্তক্ষেপ চান বৃহত্তর ফরিদপুরের মানুষ।

ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে লিয়াকত মোল্যা (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাদিরদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সংকোচ খালী এলাকার তিন ব্যবসায়ী কয়েকটি গরু বোঝাইকৃত ট্রাক নিয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিলেন। তারা মহম্মদপুর-বোয়ালমারী উপজেলার সীমান্ত ব্রীজ পার হয়ে ফরিদপুর জেলার কাদিরদী বাজার এলাকায় পৌঁছালে পিকআপ থেকে গরু লাফ দিলে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা লিয়াকত মোল্যাসহ দুই ব্যবসায়ী আহত হয়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অপর ব্যবসায়ী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান, মাগুরা সদর থেকে গরু বোঝাইকৃত পিকআপটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিল। গরুর গাড়িটি কাদিরদী বাজারে আসলেই একটি গরু লাফ দিলে গাড়ীটি উল্টে ব্যবসায়ীরা চাপা পড়ে। সেখান থেকে আহত দুইজনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি লিয়াকত নামে ব্যবসায়ী মারা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো অবগত নই। এমনকি ঘটনাটি আমাদের কেউ জানায়নি।

ফরিদপুরে তাল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৮ পিএম
ফরিদপুরে তাল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু 
ফরিদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইমন শেখ (১৪) নামে  এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ইমন শেখ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুক শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলা সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের মো. ফারুক শেখের ছেলে ইমন শেখ তাল পাড়ার উদ্দ্যেশ্য বাঁশ নিয়ে বাড়ির পাশে তাল গাছে উঠে। গাছে ওঠার পর বাঁশ দিয়ে খুচিয়ে তাল পাড়ছিল। এ সময় ওই গাছের পাশ দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের লাইনে তারে ইমনের হাতে থাকা বাঁশ স্পর্শ করলে  বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে গিয়ে সে মারাত্মক ভাবে আহত হয়।
পরে স্থানীয়রা ইমনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৩ পিএম
ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর গোলাম হায়দারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।
মঙ্গলবার (৩ জুন) গভীর রাতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
বুধবার (০৪ জুন) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, মেজর হায়দারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফরহাদ হোসেনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজু মোল্ল্যা অভিযোগ করে বলেন, অভিযানের সময় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ফরহাদ হোসেন ‘মেজরের বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ বলে গুজব ছড়ান। এতে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরে পুলিশ সাইরেন ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানায়—এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব, ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এলাকাবাসীর সহায়তায় ফরহাদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মেজর হায়দারকেও নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
এর আগে উপজেলার ডাংগি ইউনিয়নে বৈষম্য বিরোধী এক নারী নেত্রীকে ঘিরে উত্তেজনার সময় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ চলাকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে উগ্র আচরণ ও অশোভন মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন মেজর হায়দার। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, “রাজু মোল্লা নামের এক ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ দিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার (০৩ মে) সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে তাদের।”