খুঁজুন
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ফরিদপুরের কুমার নদে গভীর রাতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১:২২ পিএম
ফরিদপুরের কুমার নদে গভীর রাতে চলছে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের আদেশ অমান্য করে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের কুমার নদের উৎসমুখ মদনখালী এলাকায় রাতের আঁধারে অবৈধভাবে বেকু দিয়ে বালু উত্তোলন করছে প্রভাবশালী মহল।
সরেজমিনে রোববার (১৬ ফেব্রয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ইউনিয়নের এম এম ভাটা সংলগ্ন এলাকায় কুমার নদ থেকে একাধিক ভেকু দিয়ে অবৈধভাবে রাতের আঁধারে বালু উত্তোলন করতে দেখা যায়।
একাধিক সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকা থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছেন এম এম ব্রিংকসের মালিক শাহজাহান মিয়া। তার লোকজন দিয়ে রাতে ৩টি বেকু দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। মাটিগুলো ১০টি ট্রাকে নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নির্দেশ অমান্য করে এম এম ব্রিংকের মালিক শাহজাহান মিয়া গভীর রাতে তাদের নির্দেশ অমান্য করে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বেকু দিয়ে বালু উত্তোলন করছে। তারা প্রভাবশালী তাই তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে কেউ রাজি হয়নি।
 স্থানীয় বাসিন্দা আরো জানান, শাহজাহান স্থানীয়দের ভয়ভীতি দেখিয়ে বালু উত্তোলন করছে, আমরা যারা নদী তীরবর্তী বাসিন্দা রয়েছি তাদের জন্য এখানে বসবাস হুমকির মুখে।
তারা জানান, বালু উত্তোলনে অনেক ফসলী জমি বিলীন হয়ে গেছে। আমরা যারা নদী তীরে বসবাস করছি এভাবে বালু উত্তোলন করায় আমরা বসবাস করতে পারবো না। এছাড়া রাতে বালু উত্তোলন করে শহর রক্ষা বাঁধের উপর দিয়ে তারা ট্রাকে করে বালু নিয়ে যায়। শহর রক্ষা বাঁধও হুমকির মুখে রয়েছে। ধুলায় নদী তীরের বাসিন্দারাও আক্রান্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা ইরশাত জাহান জানান, বিষয়টি আমাদের জানা ছিলনা। জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার স্যার ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিদর্শন শেষে স্যাররা অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে নির্দেশ দিয়েছেন। স্যারদের নির্দেশ উপেক্ষা করে যারা বালু উত্তোলন করেছে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করা হবে। কোনো ছাড় দেওয়া হবে না, সে যেই হোক।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো: রাকিব হোসেন জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করায় বাঁধের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে, এখনই বালু উত্তোলন বন্ধ করা না হলে বর্ষা মৌসুমে বাঁধ ধ্বসে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে ০২ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসক মো: কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার মো: আব্দুল জলিল সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা বালু উত্তোলনের স্থানগুলো ও শহর রক্ষা বাঁধ পরিদর্শন করেন এবং নদী তীরের বাসিন্দারের সাথে কথা বলে তাদের সমস্যার কথা শুনেন। তাৎক্ষণিকভাবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করেন। এসময় তারা জানান, আজকের পর থেকে কেউ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে পারবে না। যদি কেউ দু:সাহস দেখায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যাবস্থা নেওয়া হবে।
পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে যারা বালু উত্তোলন করছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও এখনো অবৈধভাবে সূর্য্যর আলো অস্তমিত হওয়ার পরেই বালু উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
গত ২০১০-১১ অর্থবছরে ১শ ৬৫ কোটি টাকা ব্যায়ে সাড়ে ১০ কিলোমিটার শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে পানি উন্নয়ন বোর্ড, কাজটি সম্পন্ন হয় ২০১৪-১৫ অর্থবছরে, অবৈধভাবে বালু উত্তোল করায় হুমুকির মুখে রয়েছে শহর রক্ষা বাঁধ।

ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:২৪ পিএম
ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

 

 

ভাঙ্গা উপজেলা থেকে ফরিদপুর জেলা সদর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় এবারের ঈদ যাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঘর মুখো মানুষকে।

একদিকে খানাখন্দে ভরপুর সড়ক দিয়ে চলাচলে প্রায়শ ভেঙ্গে যাচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রপাতি, অন্যদিকে ওই সড়ক অতিক্রমে ভোগান্তির পাশাপাশি ধীর গতির কারণে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌছাতে না পারাসহ রাতে ছিনতাই ও ডাকাতির শংকা রয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের মাঝে। যদিও ফরিদপুরের পুলিশ সুপার বলছেন, ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই অংশে রাতের বেলায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। তাই শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলা এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের দুরত্ব ৩০ কিলোমিটার, যা দীর্ঘদিন প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরে গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেড়েছে খানা-খন্দের পরিমান।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করা ফরিদপুরসহ অন্তত ১০ জেলার মানুষ। ফরিদপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের এই সড়কটির ব্যাপারে উদাসীনতাকে দায়ি করছে এই সড়কে যাতায়াতকারীরা।

ওই সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহন চালক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খানাখন্দের কারণে প্রায়শ গাড়ীর যন্তপাতি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া ধীর গতিতে যানবাহন চালাতে হচ্ছে, ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পেছানো যাচ্ছেনা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

এই সড়ক দিয়ে ঢাকাগামী মাইক্রোচালক আবুল হোসেন বলেন, এয়ারপোর্টে যাচ্ছি যাচ্ছি আনতে ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত সড়কের যে অবস্থা তাতে গাড়ির গতিসিমা সর্বোচ্চ ১৫ বেশি চালানো যায় না। মহাসড়কের গতি যদি এরকম হয় সে ক্ষেত্রে ডাকাতি সহ নানা পদের ঝামেলার আশঙ্কা থাকে।

এদিকে গাড়ী নষ্ট হওয়া ও ধীর গতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘরমুখো মানুষেরাও। এছাড়া রাতে ধীর গতির কারণে ছিনতাই বা ডাকাতির মতো ঘটনার শংকাও রয়েছে তাদের মধ্যে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী তাদের।

যদিও ছিনতাই ও ডাকাতির বিষয়টি মাথায় রেখে ওই অংশে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল।

তিনি জানান, ৩০ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারটি ভাগে ভাগ করে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হযেছে। কোনো ধরনের সমস্যা বা সন্দেহ হলে দ্রুত পুলিশকে জানানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুর রহমান জানিয়েছে, আপাতত চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক করতে সড়কটির সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।

‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’– এ্যাড. বুলু

এহসানুল হক, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:১৪ পিএম
‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’– এ্যাড. বুলু

‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’ বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. লিয়াকত আলী খান বুলু।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।  এসময় লিয়াকত আলী খান বুলু জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন।

বুধবার (৪ জুন) নগরকান্দা পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুজ্জামান অনু, উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন ঝিলু, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মো. বিল্লাল হোসেন মোল্লা, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মহিদ বিল আল মাহিম প্রমুখ।

আলোচনাসভা শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেন তাঁরা।

ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে লিয়াকত মোল্যা (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাদিরদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সংকোচ খালী এলাকার তিন ব্যবসায়ী কয়েকটি গরু বোঝাইকৃত ট্রাক নিয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিলেন। তারা মহম্মদপুর-বোয়ালমারী উপজেলার সীমান্ত ব্রীজ পার হয়ে ফরিদপুর জেলার কাদিরদী বাজার এলাকায় পৌঁছালে পিকআপ থেকে গরু লাফ দিলে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা লিয়াকত মোল্যাসহ দুই ব্যবসায়ী আহত হয়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অপর ব্যবসায়ী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান, মাগুরা সদর থেকে গরু বোঝাইকৃত পিকআপটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিল। গরুর গাড়িটি কাদিরদী বাজারে আসলেই একটি গরু লাফ দিলে গাড়ীটি উল্টে ব্যবসায়ীরা চাপা পড়ে। সেখান থেকে আহত দুইজনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি লিয়াকত নামে ব্যবসায়ী মারা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো অবগত নই। এমনকি ঘটনাটি আমাদের কেউ জানায়নি।