খুঁজুন
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে শত বছরের প্রাচীন মেলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:৫২ পিএম
ফরিদপুরে শত বছরের প্রাচীন মেলার মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভিযোগ 

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে শত বছরের ঐতিহ্যবাহী নৌকা বাইচ অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতাদের বাদ দিয়ে প্রধান অতিথি করা হয়েছে বিগত আমলে টাকার কুমির বনে যাওয়া শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠ সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে। আর বিশেষ অতিথি করা হয়েছে জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের আরেক নেতাকে৷ এমনকি অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ পাননি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানও। এ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বোয়ালমারী উপজেলার শেখর ইউনিয়নের তেলজুড়িতে ২৬ সেপ্টেম্বর আয়োজন করা হয়েছে এই নৌকা বাইচ ও মেলার। আর ওই অনুষ্ঠান সফল করতে চলছে ব্যাপক আয়োজন। ইতোমধ্যে এ উপলক্ষে উপজেলাজুড়ে সাঁটানো হয়েছে রঙিন পোস্টার। ওই পোস্টার প্রধান অতিথি হিসেবে নাম লেখা রয়েছে ছাত্রলীগের বুয়েট শাখার সাবেক সভাপতি আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদারের। আর বিশেষ অতিথি করা হয়েছে খন্দকার ওমর হাফিজ মুক্তি। অবশ্য পোস্টারে তাদের রাজনৈতিক পরিচয় উল্লেখ না করে তাদের ব্যবসায়িক পরিচিতি উল্লেখ করা হয়েছে। আর ওই নৌকা বাইচ ও মেলার উদ্বোধক হিসেবে রয়েছে বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরীর নাম।

জানা গেছে, আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদার ছাত্রাবস্থায় বুয়েটে ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদারের চাচাতো ভাই। বিয়ে করেছেন বরিশাল-১ থেকে পাঁচবার নির্বাচিত এমপি আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ফুফাতো বোনকে। মূলতঃ সেই সুবাদেই তিনি শেখ পরিবারের ঘনিষ্ঠজন হয়ে উঠেন এবং সালমান এফ রহমান ও ওয়াসার সাবেক এমডি তাকসিম আহমেদ খানের আশীর্বাদ পেয়ে গত ১৭ বছর বড় বড় ঠিকাদারি কাজ বাগিয়ে নেন। সম্প্রতি ঢাকার একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ডেভিড শিকদারের টাকার কুমির হয়ে বনে যাওয়ার কাহিনী নিয়ে বিশদভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্ট পরবর্তী প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগ নেতাদের অনুপস্থিতিতে তিনি এই টাকার জোড়েই নিজের রাজনৈতিক পরিচয় আড়াল করে এলাকায় তৎপরতা শুরু করতে যাচ্ছেন। আর সেখানে কিছু বিএনপি ঘরোনার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকেও তিনি হাত করে ফেলেছেন।

বোয়ালমারী সরকারি ডিগ্রী কলেজের ছাত্রদলের সাবেক এজিএস ও জিএস এবং উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো: রোকনুজ্জামান মিয়া বকুল বলেন, তেলজুড়ির নৌকাবাইচ ও মেলার যেই মাইকিং শুনছি, সেখানে দেখতে পাচ্ছি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ডেভিড শিকদারকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত শিকদারের চাচাতো ভাই ডেভিড শিকদার গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, আয়োজক কমিটির সভাপতি রইসুল ইসলাম পলাশ এর আগে উপজেলা নির্বাচনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোশাররফ হোসেন মুসা মিয়ার নির্বাচন করেছেন। এখন তাদের টাকা দিয়ে ডেভিড শিকদার ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হয়ে কার্যত আওয়ামী লীগকেই পুনর্বাসন করার চেষ্টা করছেন। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। বোয়ালমারী উপজেলা প্রশাসনের কাছে অনুরোধ, তারা যেনো এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন।

শেখর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ বলেন, আমি এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও ওই মেলা কারা মেলাচ্ছে, কিভাবে মেলাচ্ছে তার কিছুই জানিনা। শুধু এটুকু জেনেছি যে, সাবেক এক ছাত্রলীগ নেতা ও আওয়ামী লীগ নেতাদের দিয়ে ওই অনুষ্ঠানের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। পোস্টারে একই পরিবারের দুই ভাইয়ের নাম আছে। ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে আমার নাম পোস্টারে থাকাতো দুরের কথা, দাওয়াতও পাই নাই। এটা খুবই দুঃখজনক। তারা শেখর ইউনিয়নে একটা রাজত্ব কায়েমের চেষ্টা করছে। আমিতো কোন বিশেষ গোষ্ঠী বা দলের চেয়ারম্যান না। অথচ একজন চেয়ারম্যান হিসেবে আমি এবিষয়ে অবগত না।

তিনি বলেন, গত বছরেও মেলায় অনেক অনিয়ম হয়েছে। সকলেই জানেন কিভাবে বিভিন্ন দোকান থেকে চাঁদা তোলা হচ্ছে। তবে এসব নিয়ে বলার কোন জায়গা নেই।

এ বিষয়ে তেলজুড়ী নৌকা বাইচ ও মেলার আয়োজক কমিটির সভাপতি রইসুল ইসলাম পলাশ ১৯ বছর বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন উল্লেখ করে বলেন, এটা আমাদের দুইশো বছরের ঐতিহ্যবাহী মেলা। এর আগে যখন আওয়ামী লীগের আমলেও মেলা হয়েছে তখনো আমি সভাপতিত্ব করছি। আমরাই নেতৃত্ব দিয়েছি। এখন আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলাম না, তার আগেই যদি এলাকার লোকজনকে বাদ দিয়ে মেলা করি সেটা কেমন দেখায়। এজন্যই আমরা এলাকার সকলকে সাথে নিয়ে তাদের সাথে আলাপ-আলোচনা করেই সব সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এমনকি কোন রাজনীতিবিদকেও রাখিনি। তাছাড়া পোস্টারে আমাদের কারো রাজনৈতিক পরিচয় বা পদপদবিও উল্লেখ করা হয় নাই।

রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, আগামী শুক্রবার ২৬ সেপ্টেম্বর এ নৌকা বাইচের পাশাপাশি গ্রামীণ মেলায় ইলিশ মাছ, গ্যান্ডারি কুশর, আমিত্তি জাতীয় মিষ্টি সহ সাধারণ গ্রাম্য মেলার মতো নানান পণ্য ও শিশুদের মনোরঞ্জনের বিভিন্ন সমাহার হবে মেলায়। আমরা আশা করছি সবাইকে সাথে নিয়ে এলাকার ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই মেলা শেষ করতে পারবো।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে আজিজুল আকিল ডেভিড শিকদারের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে নাম্বারটা বন্ধ পাওয়া যায়।

পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে ফরিদপুর-১ আসনে আবুল বাশার খানের গণসংযোগ

মো. ইকবাল হোসেন, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪:৫০ পিএম
পরিবর্তনের বার্তা নিয়ে ফরিদপুর-১ আসনে আবুল বাশার খানের গণসংযোগ

শিল্পায়নের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও সহিংসতামুক্ত রাজনীতির অঙ্গীকার নিয়ে ফরিদপুর-১ আসনে নতুন দিনের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী, সুনামধন্য শিল্পপতি ও সিআইপি আবুল বাশার খান। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তিনি মাঠে নেমে সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছেন—শুনছেন তাদের কথা, জানাচ্ছেন নিজের উন্নয়ন ভাবনার কথা।

রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত আলফাডাঙ্গা উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাপক গণসংযোগ করেন আবুল বাশার খান। এ সময় পথচারী, ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী মানুষসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তিনি।

গণসংযোগকালে আবুল বাশার খান বলেন, “মধুখালী, বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা—এই তিন উপজেলা নিয়ে গঠিত ফরিদপুর-১ আসন। আমার জন্ম মধুখালী উপজেলায়। এই মাটির সঙ্গে আমার শেকড় জড়ানো। একজন শিল্পপতি হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, টেকসই উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হলো কর্মসংস্থান সৃষ্টি।”

তিনি বলেন, “আমার পাটপণ্য উৎপাদন কারখানায় বর্তমানে প্রায় আট হাজার শ্রমিক কাজ করছেন। ভবিষ্যতে এ সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। বোয়ালমারী ও আলফাডাঙ্গা উপজেলায় পাটকল স্থাপনের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। দুই উপজেলার মাঝামাঝি স্থানে ইতোমধ্যে জমি ক্রয় করা হয়েছে। সেখানে বসবাসের ব্যবস্থাও করা হবে, যাতে এ অঞ্চলের মানুষের সঙ্গে আমাদের একটি দৃঢ় ও স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি হয়।”

আবুল বাশার খান আরও জানান, খুব শিগগিরই ফরিদপুর-১ আসনে নতুন শিল্পকারখানা স্থাপন করা হবে। এসব কারখানায় স্থানীয় বেকার যুবকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হবে। পাশাপাশি শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সামাজিক নিরাপত্তা জোরদারের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।

সহিংসতা ও দুর্নীতিমুক্ত রাজনীতিতে বিশ্বাসী আবুল বাশার খান অল্প সময়ের মধ্যেই সর্বস্তরের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছেন। স্থানীয়রা বলছেন, একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তার বাস্তব অভিজ্ঞতা এলাকার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

রপ্তানি বাণিজ্যে বিশেষ অবদানের জন্য সিআইপি সম্মাননায় ভূষিত আবুল বাশার খান পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সকলের দোয়া, আশীর্বাদ ও সমর্থন প্রত্যাশা করেন।

ফরিদপুরে কুমার নদের তীর রক্ষায় নেই উদ্যোগ, ধসের হুমকিতে বাড়ি-সেতু

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩:২৯ পিএম
ফরিদপুরে কুমার নদের তীর রক্ষায় নেই উদ্যোগ, ধসের হুমকিতে বাড়ি-সেতু

ফরিদপুর শহরের কুমার নদের তীর সংরক্ষণ কাজের কোন উদ্যোগ নেই। তাইতো ৬ কোটি টাকার ব্রীজসহ তিনশত বাড়ি-ঘর ভয়াবহ মাটি ধসের হুমকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে (পাউবো) একাধিকবার জানানো হলেও বিষয়টি বারবার এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

‘শুকিয়ে গেছে কুমার নদের পানি। সকাল বিকেল সন্ধ্যায় নদের পানির স্তর কমছেই। একদিকে নদের তলদেশে শুকিয়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি বড় বড় মাটির চাপ ধসে নদের গর্ভে আছড়ে পড়ছে। বাড়ছে মাটি ধসের প্রবণতা। কুমার নদে ভাঙনের বাঁচানোর কেউ কি নেই!’ – এমন কথায় বললেন ভুক্তভোগী মো. কবির হোসেন।

কবির হোসেনের অভিযোগ, ‘পাউবো কর্তৃপক্ষ কুমার নদের তীর সংরক্ষণের কাজ করার কথা বললেও তীর সংরক্ষণ কাজের কোন উদ্যোগ নেই। তাদের মুখে একটি কথাই ঘুরে-ফিরে শোনা যাচ্ছে ‘বাজেট নেই’। ফরিদপুর কুমার নদের ভাঙনের হাত থেকে বাঁচানোর কেউ কি নাই!

জানা যায়, ফরিদপুর পৌরসভার ১৭ নং ওয়ার্ডের চুনাঘাটা এলাকাটি কুমার নদের ভাঙনের ভয়াল চিত্র নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে সংবাদ পরিবেশন করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আপতকালীন অবস্থায় সামান্য কাজ করে ২০২৪ সালে। তবে, স্থায়ীভাবে তীর সংরক্ষণের কোন উদ্যোগ নেইনি আজও। তাইতো এই কাজ কোন উপকারে আসেনি নদের পাশে মাটি ধসে ক্ষতিগ্রস্ত কোন পরিবারের। এমনই দাবি ভুক্তভোগী কমপক্ষে শতখানেক পরিবারের।

এলাকাবাসীর দাবি, ‘ওই ওয়ার্ডের শতাধিক পরিবারের বাসা-বাড়ি রক্ষা করতে চুনাঘাটা ব্রীজ সংলগ্ন এলাকা হতে বসার মিয়ার বাড়ী সড়কের নদীর পাড় পর্যন্ত সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়ে দ্রুতই সিসি ব্লকের মাধ্যমে প্যালাসাইডিং প্লেসিং এবং কমপক্ষে ২০-২৫ টি গভীরের পাকা সিটু পাইলিং খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে।’

অন্যথায়, এলজিআরডি অর্থায়নে পাশের কুমার নদের উপর নির্মিত প্রায় ৬ কোটি টাকার ব্রীজটিও ধসে পড়তে পারে। ইতোমধ্যেই, ব্রীজের চার নম্বর পিলারে গোড়া থেকে মাটি ফেঁটে নদের মধ্যে ধসে পড়তে শুরু করছে। পাশাপাশি দুই-তিনটি পিলার জুড়ে বড় বড় মাটির চাপ ফাঁটল ধরে নদের মধ্যে পড়ে যাবার উপক্রম হয়ে পড়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ২৩-২৪ সালে ভরা বর্ষা মৌসুমে পুরো এলাকাটির কয়েক শত বিঘা জমি, ফলদ ও মূল্যবান গাছ-গাছালি আঁছড়ে পড়ে নদে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে যদি ওই এলাকার নদীভাঙ্গনের কাজ দ্রত শেষ করা না হয়, চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্তের সম্মুখীন হবে নদী পাড়ের মানুষ। ভেঙ্গে পড়তে পারে চারটি ইউনিয়ন ও দুটি উপজেলার একমাত্র সংযোগ সড়কের উপর নির্মিত মূল্যবান ব্রীজটিও।

এই বিষয়ে স্থানীয় একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, ‘বাংলাদেশের পুরাতন জেলা ফরিদপুর। শহরের গুহলক্ষ্মী ও ভাটিলক্ষীপুর এলাকা দুটি তথা ১৭-১৮ নং ওয়ার্ড দুটি প্রায় ৪’শ বছরের পুরানো, কিন্তু তবুও অবহেলিত। সম্প্রতি পদ্মার ভয়াল ভাঙনের থাবার কবলে পড়েছে পদ্মার প্রধান শাখা নদ কুমার। ১৭ নং ওয়ার্ডের কমপক্ষে ৭০-৮০টি বাড়ী ইতোমধ্যে নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। নতুন করে নদে আঁচড়ে পড়ছে কমপক্ষে ৮-১০টি বাড়ীসহ বিল্ডিং ভবনও।’

অভিযোগ রয়েছে, বিগত আ.লীগ সরকার এই পুরানো কুমার নদকে নতুন করে খনন করার নামে লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করার পর কুমার নদের খনন হওয়া মাটি লুট করার কারণে নদের পাড় দেবে ও ধসে যায়।

তবে, দীর্ঘদিন যাবৎ পাড় ধসে পড়ার রক্ষায় কোন পদক্ষেপ নেয়নি সরকার। নদ খননের নামে হয়েছে প্রায় দুইশত কোটি টাকা লোপাট এমনটাই গুঞ্জন আছে আজও।

বর্তমানে গুহলক্ষীপুর ও ভাটীলক্ষীপুর এলাকা দুটির নদের এপার-ওপার মিলে প্রায় চার কিলোমিটার করে মোট ৮ কিলোমিটার। ওই এলাকায় তথা নদের দুই পাশে কমপক্ষে ১০ হাজার মানুষ বসবাস করছে। নতুন করে নদে ভাঙন, পাড় ধসে বড় বড় মাটির চাপ পড়ে দেবে যাওয়া অব্যাহত থাকায় ওইসব পরিবারগুলো চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

এলাকাবাসী বলছেন, ‘ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে দরকার বড় বাজেট। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এলাকাবাসীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরপর দুইবার সামান্য বাঁশ ও বালির ব্যাগ দিয়ে পানির চাপ ও মাটি ধসে যাওয়া ফেরানোর চেষ্টা করলেও প্রকৃতির রূপ ভিন্ন। উপরন্ত আগের চেয়ে ১০ গুন ভয়ঙ্করী রূপ নিয়েছে মাটি ধস ও ভাঙন।

এখনই যদি চুনাঘাটা ব্রীজ হতে স্লুইসগেট পর্যন্ত নদের দুই পাশে সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়ে পাড় সংরক্ষণ করা না হয় তাহলে এসব পরিবারগুলোও নদী ভাঙনে তাদের ভিটা-মাটি সহ সবই হারাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

এব্যাপারে বক্তব্য জানতে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেনের মুঠোফোনে দু’দফায় একাধিকবার যোগাযোগ করেও বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

তবে এব্যাপারে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) সাজু শিকদার ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে ইতোমধ্যে অবগত হয়েছি। অতিশ্রীঘ্রই এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।’

ফরিদপুরে বিএনপির ভেতরে পরিবর্তন, বহিষ্কৃত ৭ নেতা ফিরলেন দলে

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:৪৮ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির ভেতরে পরিবর্তন, বহিষ্কৃত ৭ নেতা ফিরলেন দলে

ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের ৭জন নেতার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এর আগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপন ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রবিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির ফরিদপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা এবং সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং উপজেলা বিএনপি ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর সুপারিশক্রমে নিম্নবর্ণিত নেতৃবৃন্দের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হলো। এ আদেশ আজ থেকে কার্যকর হবে।

বহিষ্কৃত আদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতারা হলেন- মো. রাফিউল আলম মিন্টু (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাতৈর ইউনিয়ন বিএনপি, বোয়ালমারী উপজেলা), আব্দুল মালেক মুন্নু (সাবেক সভাপতি, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), আবু বক্কর ছিদ্দিক (সাবেক সহ-সভাপতি, নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), আজাদ খান (সাবেক সহ-সভাপতি, জাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), মো. কাজী সিরাজুল ইসলাম (সাবেক সভাপতি, ৭নং ওয়ার্ড, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), মো. আরিফুল ইসলাম (সাবেক সদস্য, মধুখালী উপজেলা বিএনপি) এবং আবু জাফর সরদার (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা)।

প্রেসবিজ্ঞপ্তির অনুলিপি কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপন ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে তাদের পূর্বের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছে এবং আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছে। এছাড়া তারা দলের বিপক্ষে আর কখনো কাজ করবে না বলেও জানিয়েছে আবেদনে। আর এই আবেদনের উপর উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি সুপারিশ করেছে। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি ও ধানের শীষের যে প্রার্থী সেও সুপারিশ করেছে। আর তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দলের জন্য কাজ করতে বলা হয়েছে।’