খুঁজুন
শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫, ৬ বৈশাখ, ১৪৩২

মোবাইলে ১০০ টাকায় খরচ ১৪২ টাকা

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:০৮ এএম
মোবাইলে ১০০ টাকায় খরচ ১৪২ টাকা

বছর না ঘুরতেই আবারও বেড়েছে মোবাইল সেবার খরচ। মেবাইল ফোনে কথা বলা, মেসেজ আদান-প্রদান এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

মাত্র সাত মাসের ব্যবধানে খরচ বাড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মোবাইল সেবাদানকারী অপারেটররা।

 

রাজস্ব বাড়াতে সরকারের এই পদক্ষেপকে অবিবেচনা প্রসূত উল্লেখ করে তা অপারেটরদের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং সরকারের রাজস্ব কমবে জানিয়ে অপারেটররা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবিচেনার আহ্বান জানিয়েছেন।

মোবাইল সেবায় উচ্চ কর হার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে এবং নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে বলে মনে করে মোবাইল গ্রাহকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে অন্তর্বতী সরকার।

৯ জানুয়ারি রাতে এ সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অধ্যাদেশ দুটি হলো, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এবং দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫।

এ অধ্যাদেশের ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরও বেড়ে যাবে বলে বিভিন্নখাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

গত বাজেটের আগে ১শ টাকা ব্যবহার করলে ১৩৩ দশমিক ২৫ টাকা খরচ হতো। বাজেটে মোবাইলফোনের সেবার ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। ৯ জানুয়ারি ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তা ২৩ শতাংশ করা হয়।
এই সিদ্ধান্ত টেকসই উন্নয়ন ও ডিজিটাল অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন মোবাইল অপারেটরের জোট এবং অপারেটররা।

দেশের মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব) মহাসচিব লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার বলেছেন, মোবাইল ব্যবহারের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার মূল্য আরও বাড়াতে, যা প্রান্তিক ও স্বল্প আয়ের মানুষ বিশেষত শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করবে। এর ফলে অপারেটরদের আয় কমবে, যা এই খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ের ওপরও নিম্নমুখী প্রভাব ফেলতে পারে।

‘আমরা চাই, অব্যহিতভাবে কর না বাড়িয়ে মোবাইল সেবাকে জরুরি ও মৌলিকখাত হিসেবে বিবেচনা করে করের হার যৌক্তিক পর্যায়ে এনে সেবার মানোন্নয়নে সহায়তা করা হোক। আমরা আশা করি, সরকার বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা করবে। ’

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদ এক বিবৃতিতে বলেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর হঠাৎ আরও তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় আমরা বিস্মিত। এমন পরিস্থিতিতে এটি বাড়ানো হলো যখন ধকল কাটিয়ে উঠছে অর্থনীতি, দেশে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে, দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই নিয়ে গত সাত মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলো। ২০২৪ সালের জুনে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। এখন আবারও তিন শতাংশ বাড়ানো হলো। সেক্ষেত্রে মাত্র সাত মাসের মাথায় গ্রাহকদের ওপর পরোক্ষ করের বোঝা বাড়ল ৯ দশমিক ২ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট। এখন থেকে গ্রাহকরা প্রতি ১শ টাকার সেবা নিলে দিতে হবে ১৪২ দশমিক ৪৫ টাকা (ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জসহ)। গত বাজেটের আগে যা ছিল ১৩৩ দশমিক ২৫ টাকা।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য সংকল্পবদ্ধ টেলিযোগাযোগ শিল্প। কিন্তু এমন পদক্ষেপ এই অগ্রগতি ব্যাহত করবে এবং ডিজিটাল বৈষম্য বাড়াবে। গ্রাহকদের স্বার্থে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সমাজ গঠনের বৃহত্তর লক্ষ্যে আমরা সরকারের কাছে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, টেলিকম সেবা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি। এছাড়া ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে অপরিহার্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছে এই খাত। মোবাইল ফোনের সেবার ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এতে গ্রাহকের খরচ বাড়বে। মাত্র কয়েক মাস আগে, গত বাজেটে সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়, যা ইতোমধ্যে গ্রাহক ও টেলিকম খাতের জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই পদক্ষেপ ডিজিটাল বৈষম্য বাড়ানোর পাশাপাশি এই খাতের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত এবং সরকারের রাজস্ব আয় কমবে। টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে আমরা সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।

মোবাইল অপারেটরদের মতো গ্রাহকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনও সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভয়েস কল এবং ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নতুন করে ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার ওপর ১০ শতাংশ এসডি ও ভ্যাট আরোপ করেছে এনবিআর। আমরা মনে করি, এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত একমাত্র তারাই নিতে পারে যাদের ওপর বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের পেতাত্মা ভর করে আছে। ইন্টারনেট সেবায় আমরা বিশ্বের মধ্যে তলানিতে আছি অন্যদিকে ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে। যেখানে দেশের এখনো ৪৮ শতাংশ জনগণ ইন্টারনেট সেবার বাইরে আছে সেখানে নতুন করে এই উচ্চ কর হার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে হাজার হাজার প্রাণ দিয়েছিল জবাবদিহিতা গণতন্ত্র ও সেবামূলক কমবে বলে। কিন্তু বর্তমান সরকার এবং এনবিআর সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি ভুলে গিয়ে রাষ্ট্রের অর্থ যোগানোর জন্য জনগণের পকেট কাটার যে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অযৌক্তিক এবং ফ্যাসিবাদীমূলক আচরণ। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে তাদের সরে আসতে হবে।

মোবাইল সেবায় ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর প্রতিবাদে রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

বোয়ালমারীতে বালুমহল ইজারা বাণিজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, আহত-৩

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ৯:৩৭ পিএম
বোয়ালমারীতে বালুমহল ইজারা বাণিজ্যের ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষ, আহত-৩

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বালুমহল ইজারা বাণিজ্যের (নিকো) টাকা ভাগাভাগি নিয়ে সংঘর্ষে ৩ জন আহত।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে দফায় দফায় এ সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে।

জানা যায়, বোয়ালমারী উপজেলাধীন মধুমতী নদীর বালুমহল ইজারা দরপত্র বাণিজ্যের টাকা ভাগাভাগি নিয়ে এ সংঘর্ষ হয় ।

প্রতি বছরের ন্যায় ১৪৩২ সালের ১ বছরের জন্য উপজেলাধীন লঙ্কারচর বালুমহল ইজারার দরপত্র আহ্বান করে ফরিদপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়।
এতে প্রায় ১৫ টি দরপত্র বিক্রয় হলেও দরপত্রদাতাদের মাঝে সমঝোতার ভিত্তিতে গোপন নিলাম ডাকের মাধ্যমে ক্রয়বিক্রয় সম্পাদিত হয়। সমঝোতার ভিত্তিতে দরপত্রদাতাদের মাঝে টাকা ভাগাভাগির কথা থাকলেও নিকো-বোর্ড দরপত্র দাতা জুয়েল বিশ্বাসকে পাওনা টাকা না দিয়ে সময়ক্ষেপণ করতে থাকে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে । এ নিয়ে বুধবার রাতে বোয়ালমারী উপজেলা পরিষদের সামনে মা ফার্মাসি মার্কেট চত্বরে এক শালিশ বৈঠক বসে পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ, বিএনপি নেতা মহসিন আলম চান, মিরাজ মৃধাসহ স্থানীয়রা। শালিশ বৈঠক শুনানির সময় দরপত্র দাতা আঁধারকোঠা গ্রামের মঈনুদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে জামায়াতে কর্মী জুয়েল বিশ্বাসের কোমরে থাকা একটি দেশীয় অস্ত্র দেখে ফেলে লোকজন। এসময় অস্ত্র উদ্ধার করতে গিয়ে জুয়েল বিশ্বাসের সাথে ধস্তাধস্তি হয় স্থানীয়দের। পরে জুয়েলের নেতৃত্বে ২৫/৩০ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মা ফার্মাসিতে আক্রমণ চালায়। এতে বোয়ালমারী সরকারি কলেজের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যা ও মা ফার্মাসির কর্ণধার রিয়াজ মৃধা মারাত্মক আহত হয়। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায় বুধবার দিবাগত রাত ১০টার দিকে কাঠের বাটাম ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আঁধারকোঠা গ্রামের একদল যুবক আক্রমণ চালায়। এসময় মা ফার্মাসিতে আশ্রয় নেওয়া রাসেল আহমেদের ছোট ভাই কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যার মাথা লক্ষ্য করে আঘাত করে আক্রমণ কারিরা। আক্রমণকারীদের প্রতিহত করতে গিয়ে আহত হন রিয়াজ মৃধা। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। রিয়াজ মৃধাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিলেও রবিন মোল্যা বোয়ালমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ বিষয়ে বোয়ালমারী থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
জুয়েল বিশ্বাস জানান- বালুমহলের নিকোর ৪৫ হাজার টাকা জমা ছিলো রাসেল আহমেদ ও মিরাজ মৃধার নিকট, সে টাকা চাওয়ায় আমাকে মা ফার্মাসিতে ডেকে নেয় রাসেল আহমেদ। সেখানে গেলে তারা টাকা না দিয়ে টালবাহানার আশ্রয় নেয় ও আমার উপর আক্রমণ চালায়। খবর পেয়ে আমার গ্রামের ভাইব্রাদার আমাকে উদ্ধার করতে ছুটে আসে। সেখানে রাসেল আহমেদের ভাই রবিনকে পেয়ে তাকে মারধর করে।

এ বিষয়ে পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ বলেন – জামায়াতে ইসলামীর ক্যাডার জুয়েল বিশ্বাস আমার নিকট চাঁদা দাবি করে । এ বিষয়ে জানতে মহসিন আলম চান ও মিরাজ মৃধা তাকে ডাকলে সে পরিকল্পনা করে আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে সন্ত্রাসী বাহিনী প্রস্তুত রেখে কোমরে অস্ত্র নিয়ে আসে। লোকজন তা দেখে কেড়ে নিলে আগে থেকে ওতপেতে থাকা তার সন্ত্রাসী বাহিনী আমাদের উপর হামলা চালায়, জীবন রক্ষার্থে আমি পালিয়ে গেলেও আমার ছোট ভাই মা ফার্মাসিতে আশ্রয় নেয়। সেখানে ঢুকে সন্ত্রাসী বাহিনী তাকে বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেছে।

বিএনপি নেতা মিরাজ মৃধা বলেন – রাসেলের সাথে জুয়েল বিশ্বাসের দেনাপাওনা নিয়ে ফোনে কথা-কাটাকাটি হয়, পরে সমঝোতার জন্য আমার ফার্মাসিতে আসে জুয়েল। কথা বলার সময় তার কোমরে একটি ধারলো অস্ত্র দেখে লোকজন তা কেড়ে নেয়। এসময় সে পালিয়ে গিয়ে কিছু সময় পর ২৫/৩০ জনের একটি দুর্বৃত্ত দল নিয়ে আমার ফার্মাসিতে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় আমার বড় ভাই ও ছাত্রদলের কলেজ শাখার সাবেক সভাপতি রবিন মোল্যার উপর হামলা চালায় এতে মারাত্মক আহত দু’জন । আক্রমণকারীরা ফার্মাসিতে ভাঙচুর ও লুটপাটও চালায় । এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

বোয়ালমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন- খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো পক্ষই অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে

‘ফরিদপুরে পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে বৃদ্ধ খুন’ থানায় হত্যা মামলা, তিনজন আটক

ফরিদপুর ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:৫২ এএম
‘ফরিদপুরে পাওনা টাকা চাওয়ার জেরে বৃদ্ধ খুন’ থানায় হত্যা মামলা, তিনজন আটক
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় পাওনা টাকা আদায়ের কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে মো. আব্দুল হালিম মোল্লা (৬১) নামে এক বৃদ্ধের জিহ্বা কর্তনের ঘটন্য়া দুইদিনের মাথায় চিকিৎসাধীন তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহতের একমাত্র মেয়ে রিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে বুধবার সকালে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ।
এর আগে মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃদ্ধ আব্দুল হালিম মোল্যা মারা যান। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে।
নিহত আব্দুল হালিম মোল্লা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের পাড়াগ্রাম বাজারে নৈশপ্রহরী হিসেবে কাজ করতেন। তিনি পাড়াগ্রামের মৃত আবু সাঈদ মোল্লার ছেলে। নিহত ব্যক্তির একটি মাত্র মেয়ে রিনা বেগমের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় এবং স্ত্রী মারা যাওয়ায় তিনি একাই বাড়িতে বসবাস করতেন।
মামলা ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মো. আব্দুল হালিম মোল্লা (৬১) তার মা তছিরণ নেছা ওরফে ছুটু বিবিকে (৭৫) নিজের ধার দেওয়া টাকা আদায়ের কথা বলে গত ১২ এপ্রিল বিকেলে আলফাডাঙ্গা উপজেলার পাড়াগ্রাম নিজ বাড়ি থেকে বের হন। পরেরদিন ১৩ এপ্রিল সকালে পাড়াগ্রামের লাল্টুর পরিত্যক্ত জমিতে ওই গ্রামের নুর ইসলাম (৫৮) নামে এক ব্যক্তি আব্দুল হালিম মোল্যাকে জিব্বা কাটাসহ জখম অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে ডাক চিৎকার করলে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে হালিম মোল্যাকে স্থানীয় গ্রাম পুলিশ বাবলুর সহায়তায় আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য আলফাডাঙ্গা হাসপাতাল থেকে তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করেন। ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) সকালের দিকে তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে নিহতের একমাত্র মেয়ে রিনা বেগম (৩৭) বাদি হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর-০৯। মামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই এলাকার তিনজনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
ঘটনার দিন আলফাডাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আবিদ হোসেন জানান, বৃদ্ধ আব্দুল হালিম মোল্যাকে জিব্বা কাটা অবস্থায় হাসপাতালে আনার পর অবস্থার অবনতি হলে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। তিনি গুরুতর জখম ছিলেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি হারুন অর রশিদ বলেন, খবর পেয়েই ওইদিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়। এ ঘটনায় নিহত আব্দুল হালিম মোল্যার মেয়ে রিনা বেগম বাদি হয়ে থানায় আজ হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। তবে মামলার এজাহারে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। বাদি কারো নাম উল্লেখ করেননি। মামলার পর ঘটনাস্থল এলাকার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। হত্যার রহস্য উৎঘাটনে পুলিশ কাজ করছে। আশা করি দ্রুতই প্রকৃত আসামিদের আমরা গ্রেপ্তার করতে পারবো।

ফরিদপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১০:১৫ এএম
ফরিদপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে দুদকের অভিযান
নানা অনিয়মের অভিযোগে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (১৬ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা করেন দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-সহকারী পরিচালক মো. কামরুল হাসানের নেতৃত্বে একটি দল।
অভিযানকালে সিটিজেন চার্টার না থাকাসহ নানা অনিয়ম পরিলক্ষিত হওয়ায় কিছু রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়। সেগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে বলে জানান দুদক কর্মকর্তা।
দুদক, সমন্বিত জেলা কার্যালয় ফরিদপুরের উপ-সহকারি পরিচালক মো. কামরুল হাসান জানান, দুদকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক চরভদ্রাসন উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানকালে সিটিজেন চার্টার পাওয়া যায়নি। এছাড়া অনিয়মের কিছু রেকর্ডপত্র জব্দ করা হয়েছে। সেগুলো পর্যালোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন কমিশন বরাবর পাঠানো হবে।