খুঁজুন
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫ কার্তিক, ১৪৩২

মোবাইলে ১০০ টাকায় খরচ ১৪২ টাকা

ইসমাইল হোসেন, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:০৮ এএম
মোবাইলে ১০০ টাকায় খরচ ১৪২ টাকা

বছর না ঘুরতেই আবারও বেড়েছে মোবাইল সেবার খরচ। মেবাইল ফোনে কথা বলা, মেসেজ আদান-প্রদান এবং ইন্টারনেট সেবার ওপর বাড়তি খরচ গুনতে হচ্ছে গ্রাহকদের।

মাত্র সাত মাসের ব্যবধানে খরচ বাড়ায় ক্ষোভ জানিয়েছেন মোবাইল সেবাদানকারী অপারেটররা।

 

রাজস্ব বাড়াতে সরকারের এই পদক্ষেপকে অবিবেচনা প্রসূত উল্লেখ করে তা অপারেটরদের আয়ে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং সরকারের রাজস্ব কমবে জানিয়ে অপারেটররা সিদ্ধান্ত পুনর্বিবিচেনার আহ্বান জানিয়েছেন।

মোবাইল সেবায় উচ্চ কর হার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে এবং নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে বলে মনে করে মোবাইল গ্রাহকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

চলতি ২০২৪–২৫ অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধে এসে শতাধিক পণ্য ও সেবার ওপর মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট এবং সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়েছে অন্তর্বতী সরকার।

৯ জানুয়ারি রাতে এ সংক্রান্ত দুটি অধ্যাদেশ জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। অধ্যাদেশ দুটি হলো, মূল্য সংযোজন কর ও সম্পূরক শুল্ক (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫ এবং দ্য এক্সাইজ অ্যান্ড সল্ট (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২৫।

এ অধ্যাদেশের ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ আরও বেড়ে যাবে বলে বিভিন্নখাত সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।

গত বাজেটের আগে ১শ টাকা ব্যবহার করলে ১৩৩ দশমিক ২৫ টাকা খরচ হতো। বাজেটে মোবাইলফোনের সেবার ওপর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়েছিল। ৯ জানুয়ারি ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে তা ২৩ শতাংশ করা হয়।
এই সিদ্ধান্ত টেকসই উন্নয়ন ও ডিজিটাল অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করেন মোবাইল অপারেটরের জোট এবং অপারেটররা।

দেশের মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (এমটব) মহাসচিব লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ জুলফিকার বলেছেন, মোবাইল ব্যবহারের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবার মূল্য আরও বাড়াতে, যা প্রান্তিক ও স্বল্প আয়ের মানুষ বিশেষত শিক্ষার্থীদের মোবাইল ব্যবহারে বাধা সৃষ্টি করবে। এর ফলে অপারেটরদের আয় কমবে, যা এই খাত থেকে সরকারের রাজস্ব আয়ের ওপরও নিম্নমুখী প্রভাব ফেলতে পারে।

‘আমরা চাই, অব্যহিতভাবে কর না বাড়িয়ে মোবাইল সেবাকে জরুরি ও মৌলিকখাত হিসেবে বিবেচনা করে করের হার যৌক্তিক পর্যায়ে এনে সেবার মানোন্নয়নে সহায়তা করা হোক। আমরা আশা করি, সরকার বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে কর কাঠামো পুনর্বিবেচনা করবে। ’

এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের চিফ করপোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার (সিসিএও) তানভীর মোহাম্মদ এক বিবৃতিতে বলেন, মোবাইল ফোন ব্যবহারের ওপর হঠাৎ আরও তিন শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করায় আমরা বিস্মিত। এমন পরিস্থিতিতে এটি বাড়ানো হলো যখন ধকল কাটিয়ে উঠছে অর্থনীতি, দেশে মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের ওপরে, দৈনন্দিন ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এই নিয়ে গত সাত মাসের মধ্যে দ্বিতীয়বার সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো হলো। ২০২৪ সালের জুনে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছিল। এখন আবারও তিন শতাংশ বাড়ানো হলো। সেক্ষেত্রে মাত্র সাত মাসের মাথায় গ্রাহকদের ওপর পরোক্ষ করের বোঝা বাড়ল ৯ দশমিক ২ পার্সেন্টেজ পয়েন্ট। এখন থেকে গ্রাহকরা প্রতি ১শ টাকার সেবা নিলে দিতে হবে ১৪২ দশমিক ৪৫ টাকা (ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও সারচার্জসহ)। গত বাজেটের আগে যা ছিল ১৩৩ দশমিক ২৫ টাকা।

তিনি আরও বলেন, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তির জন্য সংকল্পবদ্ধ টেলিযোগাযোগ শিল্প। কিন্তু এমন পদক্ষেপ এই অগ্রগতি ব্যাহত করবে এবং ডিজিটাল বৈষম্য বাড়াবে। গ্রাহকদের স্বার্থে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ডিজিটাল সমাজ গঠনের বৃহত্তর লক্ষ্যে আমরা সরকারের কাছে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি।

বাংলালিংকের চিফ করপোরেট ও রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, টেলিকম সেবা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম চালিকাশক্তি। এছাড়া ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে অপরিহার্য ভূমিকা রেখে যাচ্ছে এই খাত। মোবাইল ফোনের সেবার ওপর বিদ্যমান ২০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ২৩ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির মধ্যে গ্রাহকদের ক্রয়ক্ষমতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এতে গ্রাহকের খরচ বাড়বে। মাত্র কয়েক মাস আগে, গত বাজেটে সম্পূরক শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২০ শতাংশ করা হয়, যা ইতোমধ্যে গ্রাহক ও টেলিকম খাতের জন্য বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এই পদক্ষেপ ডিজিটাল বৈষম্য বাড়ানোর পাশাপাশি এই খাতের সামগ্রিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত এবং সরকারের রাজস্ব আয় কমবে। টেকসই অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে আমরা সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানাই।

মোবাইল অপারেটরদের মতো গ্রাহকদের স্বার্থ নিয়ে কাজ করা সংগঠন মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনও সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ভয়েস কল এবং ইন্টারনেট ডাটা ব্যবহার করার ক্ষেত্রে নতুন করে ৩ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক বৃদ্ধি ও ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবার ওপর ১০ শতাংশ এসডি ও ভ্যাট আরোপ করেছে এনবিআর। আমরা মনে করি, এ ধরনের হঠকারী সিদ্ধান্ত একমাত্র তারাই নিতে পারে যাদের ওপর বিগত ফ্যাসিবাদী সরকারের পেতাত্মা ভর করে আছে। ইন্টারনেট সেবায় আমরা বিশ্বের মধ্যে তলানিতে আছি অন্যদিকে ভ্যাটের ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্বোচ্চ স্থানে। যেখানে দেশের এখনো ৪৮ শতাংশ জনগণ ইন্টারনেট সেবার বাইরে আছে সেখানে নতুন করে এই উচ্চ কর হার নাগরিকদের ইন্টারনেট সেবা থেকে বিমুখ করবে নতুন করে বৈষম্য সৃষ্টি করবে। জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার বিপ্লবে হাজার হাজার প্রাণ দিয়েছিল জবাবদিহিতা গণতন্ত্র ও সেবামূলক কমবে বলে। কিন্তু বর্তমান সরকার এবং এনবিআর সামাজিক দায়বদ্ধতার বিষয়টি ভুলে গিয়ে রাষ্ট্রের অর্থ যোগানোর জন্য জনগণের পকেট কাটার যে হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা অযৌক্তিক এবং ফ্যাসিবাদীমূলক আচরণ। এ ধরনের সিদ্ধান্ত থেকে তাদের সরে আসতে হবে।

মোবাইল সেবায় ভ্যাট-ট্যাক্স বাড়ানোর প্রতিবাদে রোববার (১২ জানুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন।

দেশীয় মাছ রক্ষায় চরভদ্রাসনের পদ্মা নদী থেকে আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:২৪ পিএম
দেশীয় মাছ রক্ষায় চরভদ্রাসনের পদ্মা নদী থেকে আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ

দেশীয় মাছ রক্ষায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে একটি আড়াআড়ি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩১অক্টবর) সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১ টা পর্যন্ত উপজেলার পদ্মানদীর চর জাউকান্দা ইউনিয়নের জলসীমানায় এ ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।

এ বাঁধ অপসারণ করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি)ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট যায়েদ হোছাইন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাঈম হোসেন বিপ্লব ও চরভদ্রাসন থানা পুলিশ।

উপজেলা মৎস্য দপ্তর জানায়, পদ্মা নদীর ওই এলাকায় স্থানীয় একটি মহল অবৈধভাবে আড়াআড়ি বাঁধ দিয়ে মাছ শিকার করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় প্রায় দেড়শো মিটার একটি আড়াআড়ি বাঁধ ও একটি কাঠা ভেঙ্গে বিনষ্ট করা হয়েছে।

মাছের বংশবিস্তার ও অবাধ বিচরণের জন্য নদীতে মৎস্য দপ্তরের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা প্রশাসন।

নগরকান্দায় জাকের পার্টির জনসভা ও র‍্যালী

নগরকান্দা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৪০ পিএম
নগরকান্দায় জাকের পার্টির জনসভা ও র‍্যালী

দেশব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতার আহ্বানে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাকের পার্টি দলকে সু-সংগঠিত করার লক্ষ্যে এক জনসভা ও র‍্যালীর আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১ টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমার মোড়ের আমিন উদ্দিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জাকের পার্টির এ জনসভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

ডা. মো. ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন- জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সল, বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন জাকের পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ড. সায়েম আমীর ফয়সল, জাকের পার্টির জাতীয় স্থায়ী কমেটির সদস্য ফারাহ্ আমীর ফয়সল, ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগ ২ এর সভাপতি ডা. মো. ফজলুল হক, সালথা উপজেলার জাকের পার্টির সভাপতি সরোয়ার হোসেন (বাচ্চু) সহ জাকের পার্টি সকল সহযোগী সংগঠনের
নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দাওয়াতি মেহমানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এ সময় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভার্চুয়ালে বক্তব্য রাখেন।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দেশকে ঢেলে সাজাতে হবে। আর বাংলাদেশকে যদি সোনার বাংলায় রূপান্তর করতে হয় তাহলে প্রতিটি মানুষকে আগে সোনার মানুষে রূপান্তর করতে হবে। কেননা সৎ, জ্ঞানীগুনী মানুষ ছাড়া এদেশের মঙ্গল কামনা সম্ভব না কখনো।জাকের পার্টি বিগত ৩৬ বছর ধরে বিশ্বওলি আদর্শে আদর্শিত হয়ে, সেই পথের পথিক হয়ে জাকের পার্টির প্রতিটি সদস্য আজ সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছে। জাকের পার্টির নেতাকর্মীগণ ক্ষমতার লোভ নেই , চাঁদাবাজি করে না, টেন্ডারবাজি করে না, লুট হত্যার সাথে জড়িত নেই।

তিনি বলেন, ক্ষমতা আমাদের কাছে বড় না,দেশ আমাদের কাছে বড়। এজন্য আমাদের ষড়যন্ত্রের পথে যেতে হয় না। জাকের পার্টি একটি আদর্শের নাম, জাকের পার্টি ঐক্যর নাম, জাকের পার্টি জেহাদের নাম, জাকের পার্টি সংগ্রামের নাম।

জাকের পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এ সময় জাতির উদ্দেশ্য বলেন, জাকের পার্টি প্রতিটি নেতা কর্মী মজলুম,অসহায়, খেটে খাওয়া, গরীব-দুঃখী মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, কাজ করে যাবে। এদেশের তরুণ প্রজন্মের মেরুদণ্ড কে খুব সু-পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে,এই ধ্বংসের হাত থেকে জাকের পার্টি মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে। কোটি-কোটি মানুষ আজ বুঝতে পেরেছে জাকের পার্টি উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যের সম্পর্কে। বাংলাদেশে গত ৫৪ বছরে নির্বাচন নামে যে ছলনা, প্রহসন, কেন্দ্র দখল, ক্ষমতা ও পেশিশক্তি প্রয়োগ করা, কালো টাকার ছড়াছড়ি যে রাজনৈতিক ধারা চালু রয়েছে তা যদি সংস্কার করা না হয় তাহলে ২৫ শে আগস্ট এর আগে এবং পরে একই চিত্র অর্থাৎ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। নির্বাচন হবে উৎসবমুখর। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে কোনো প্রকার ভয়ভীতি ছাড়া ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবে।

তিনি বলেন, যদি নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি, কেন্দ্র দখল, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রবেশ নষ্ট করা হয় তাহলে জাকের পার্টি ৩০০ আসন থেকে এককভাবে নির্বাচন প্রত্যাহার করবে।

জনসভা শেষে তালমার মোড়ে জাকের পার্টি মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীগণ শান্তিপূর্ণ র‍্যালীতে অংশগ্রহণ করেন।

র‍্যালি শেষ করে উপস্থিত সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।

ফরিদপুরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও টায়ারে আগুন

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:১৯ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও টায়ারে আগুন

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেছে পদবঞ্চিত একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ফরিদপুরের মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী ওয়াবদা মোড়ে দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ করার কারণে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অবরোধকারীদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন ও আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে থাকা নেতাকর্মীদের নবগঠিত কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সকল ধরনের সড়ক অবরোধ করা হবে।

এ সময় পৌর সদরের ব্যস্ততম এলাকা ওয়াবদা মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে দুইঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এতে দুই কিলোমিটার এলাকা সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌরসভা, আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌরসভা এবং মধুখালী উপজেলা ও পৌরসভার ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপন। তবে বুধবার মধুখালী উপজেলা কমিটিতে থাকা দুইজন পদত্যাগ করেছেন।

কমিটিতে বিগত ১৭ বছর হামলা মামলা, জেল-জুলুম সহ্য করা ত্যাগী ও ছাত্রদল, যুবদল থেকে উঠে আসা নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকারান্তরে কমিটিতে স্থান পেয়েছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পদ পদবিতে থাকা একাধিক ব্যাক্তি, এমনটাই দাবী করেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা খন্দকার নাসিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটির তীব্র সমালোচনা করেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে যারা বিএনপির দুর্দিনে পাশে থেকে দলকে ধরে রেখেছেন, সেই ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে নতুন কমিটিতে চিহ্নিত আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, টাকার বিনিময়ে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত ব্যক্তিদের পদ দিয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে বিএনপিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বক্তারা এ সময় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা নাসিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি বাতিল এবং নতুন করে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান।

এ সময় বক্তব্য দেন, উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব নাজিম উদ্দিন মিলু মিয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবু, বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মুকুল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মিনহাজুর রহমান লিপন, সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি ও সাবেক শেখর ইউপি চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ, উপজেলা বিএনপির বর্তমান সহসভাপতি ডা. আব্দুস সবুর, পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কালা মিয়া, বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস এনায়েত হোসেন মেম্বার, সাবেক পৌর কাউন্সিলর শেখ আজিজুল হক, সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন চৌধুরী, গত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ উপজেলা জাসাসের সাবেক আহ্বায়ক মো. শাহিন আনোয়ার, রুপাপাত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আবুল কালাম, চতুল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একলিম শরীফ, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হোসেন সালেহ্ রুবেল, ছাত্রদল নেতা জাকারিয়া মোল্যা সুমন ও সাদমান পাপ্পু প্রমুখ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবরোধকারীদের আন্দোলনে যখন সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দুই কিলোমিটার যানজট হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী ও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আল আমিন দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে ইউএনওর অনুরোধে অবরোধকারীরা দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

সর্বশেষে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও শেখর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে সকল ধরনের রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ফরিদপুর -১ আসনে (বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা) এ দলটির অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরে দুইটি গ্রুপ পৃথকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এর একটি গ্রুপের নেতৃত্বে দেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

অপর গ্রুপের নেতৃত্ব রয়েছেন বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। দু’জনই আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। সম্প্রতি নবগঠিত কমিটিতে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।