সালথার সাংবাদিক বিধান মন্ডলের বাবার ১২তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ

দেশের পেঁয়াজ উৎপাদরে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর। এ জেলার চাষীরা বর্তমান পেঁয়াজের দরে লোকসানের মুখে পড়েছে। ফরিদপুরের বড় বড় বাজার গুলোতে পেঁয়াজের দর ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চাষীদের দাবি, ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা বিক্রি করতে পারলে তাদের লোকসানে পড়তে হতো না।
সরেজমিনে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ঠেনঠেনিয়ার পেঁয়াজ বাজারে গিয়ে দেখা যায়- প্রকার ভেদে এই বাজারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পনেরশো থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকায় মন প্রতি। বর্তমানে পেঁয়াজের দরের এমন চিত্র জেলা শহর ও আশে-পাশের বাজার গুলোতেও।
সালথার ঠেনঠেনিয়া পেঁয়াজের এই বাজারে সকাল ছয়টা থেকেই পেঁয়াজ চাষীরা কেউ ভ্যান যোগে, কেউ নসিমন, কেউ অটো, কেউবা বস্তা মাথায় করে, আবার কেউ ধামায় (ঝুড়ি) করে বাজারে তুলছে পেঁয়াজ। সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি দেশের দুর্দান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরাও বিক্রেতার কাছ থেকে দরদাম করে পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। ঠেনঠেনিয়া এই বাজারটি চলে দুপুর পর্যন্ত। সপ্তাহে রবি ও বুধবার বসে পেঁয়াজের হাট। প্রতি হাটে পেঁয়াজের দুই শতাধিক বড় ব্যবসায়ী আড়াইশো থেকে ৩০০ টন পেঁয়াজ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে নিয়ে যায়।
সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম খান সোহাগ বলেন, ঠেনঠেনিয়া বাজারের প্রতি হাটে কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ ক্রয় বিক্রয় হয় । ঢাকা, চট্রগ্রাম, রবিশালসহ বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা এখানে পেঁয়াজ কিনতে আসেন । যোগযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সহজেই কৃষি পণ্যটি ক্রয় করে নিয়ে যেতে পারেন তারা।
এ দিকে পেঁয়াজ চাষীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে তুলনামূলকভাবে ব্যয় বেড়েছে, কিন্তু সেই হারে দর বাড়েনি। এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদও বেশি হয়েছে।
কথা হয় বাজারের পেঁয়াজ চাষী নিজাম উদ্দিন শেখ, আলমগির মোল্লা, ঈব্রাহিম মাতুব্বর, নিছার উদ্দিন খানের সঙ্গে । তারা সকলেই জানান, পেঁয়াজ যখন ঘরে তুলি সেই সময় দাম হাজারের কম ছিল। একটু ভাল দরের আশায় এতোদিন ঘরে সংগ্রহ করে রেখে ছিলাম । কিন্তু এখন যে দর বাজারে আছে তাতে পুঁজি টিকানো কষ্ট । তার ওপর আবার এতো দিনে পেঁয়াজের ঘাটতি হয়েছে ।
এই চাষীরা দাবি করেন, বাজারের আমরা যাদি দুই হাজার থেকে ২২শ টাকায় দর পেতাম তাহলে লোকসানে পড়তে হতো না।
এদিকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বললেন, ফরিদপুরের যতগুলো পেঁয়াজের বাজার রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সালথার ঠেনঠেনিয়ার বাজারটি। ঈদের পরেই হঠাৎ করে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দর কিছুটা কমেছে বলে তাদের ধারণা।
পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খোরশেদ মোল্লা জানান, এ বাজার থেকে প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। গড়ে এক কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ প্রতি হাটে ক্রয় বিক্রয় হয় ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, জেলার তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এর মধ্যে শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ, হালি পেঁয়াজ এবং দানা পেঁয়াজ । এ তিন ধরনের পেঁয়াজের মধ্যে হালি পেঁয়াজ বেশি আবাদ হয় । এই মৌসুমে ফরিদপুরে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এ বারের উৎপাদনের হারও বেশ ভাল বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।
‘ভাপস্যা গরম। গতর দিয়ে দরদরিয়ে ঘাম ঝরছে। তবুও থেমে নেই রিকশার পেট্রল। বিড়বিড় করে নিজের সাথে নিজ কথা বলে চলছে। কি বলছে- সবকিছুই যেন অস্পষ্ট।’
নাম তার রহিম খাঁ (ছদ্মনাম)। গ্রাম ফরিদপুর সদরের কোনো একটি এলাকায় হলেও, থাকেন শহরের টিনের ভাঙাচোরা ভাড়া ঘরে। ছেলে আছেন, তবে ভাত দেননা তাকে। সারাদিন রিকশা না চালালে কিস্তির টাকাও জোগাড় হয়না, আর তো দুমুঠো বুড়ো-বুড়ির খাবার!
রিকশায় মটর বা ইঞ্জিন না থাকায়, পায়ে চালানো পেট্রলই তার শেষ ভরসা। আমি শহরের সোনালী ব্যাংক থেকে পুলিশ লাইন্সে এলাম। পথেমধ্যে একটুআধটু কথা হলো তার সাথে। খুব আক্ষেপ জীবন নিয়ে তার। বলা চলে কষ্টে কষ্টেই তার জীবন। সেই ছোট্ট সময়ে মা-বাবাকে হারিয়েছেন। হারিয়েছেন ভাই-বোনদেরও। পথে পথে জীবন। মানুষের লাঠি গুঁতাও কম খাননি জীবনে। তাইতো বেঁচে থাকাটা বিস্বাদে যেন রুপ নিয়েছে আজ।
এরপর জীবন নিয়ে প্রশ্ন করলেই, ‘এক বাক্যে বললেন’- “জীবনডা পুইরা গেসে রে বাজান, সুখ টা কি সেটা জীবনে কপালে দেখলুম না। সবই যেন কেমন হয়ে গেছেরে বাজান। এহন দেহ থ্যাইকা দমটা চলে গেলেই হয়। যদি আল্লাহ ও-ই পারে এট্টু সুখ দেয়।” অতঃপর বিড়বিড় করে কথা বলতে বলতে রিকশা নিয়ে চলে গেলেন চোখের আড়ালে।
লেখক: হারুন-অর-রশীদ, সংবাদকর্মী, ফরিদপুর।
ফরিদপুরে তেলের লড়ির চাপায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
সোমবার (২৩ জুন) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে জেলা সদরের মুন্সী বাজার বাইপাস সড়কের বরকতের মার্কেটের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- ফরিদপুর সদরের কৈজুরী ইউনিয়নের সাচিয়া গ্রামের ক্ষিতীশ মজুমদারের ছেলে শ্রীবাস মজুমদার (৩০) ও একই এলাকার জালাল মোল্লার ছেলে রাশেদ মোল্লা (২৫)।
জানা গেছে, সোমবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ফরিদপুর সদরের মুন্সী বাজার বাইপাস সড়কে বরকতের মার্কেটের সামনে একটি মোটর সাইকেলকে একটি তেলের লড়ি (ট্রাকের) চাপা দেয়। এসময় মোটর সাইকেল আরোহী শ্রীবাস মজুমদার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। মারাত্মক আহত হয় রাসেদ মোল্লা নামের অপর যুবক। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি ওয়ার্ড ভর্তি করলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক রাশেদকে মৃত্যু ঘোষণা করেন।
ফরিদপুরের করিমপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সালাউদ্দিন চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তেলের লড়ি মোটরসাইকেলকে চাপা দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। তাই তেলের লড়িটি আটক করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন
Array