খুঁজুন
শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৪:০২ পিএম
ফরিদপুরে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে সদস্যদের ভয় দেখিয়ে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ
ফরিদপুর সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদ দখল চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে চাঁদা দাবি ও পরিষদের কয়েকজন সদস্যকে ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক (ডিসি) বরাবর অভিযোগ দেয়া হয়েছে বলে পাল্টা জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করেছেন বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম (মজনু)। এতে চেয়ারম্যানসহ ১০ জন সদস্যের স্বাক্ষর রয়েছে।
জানা যায়, চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ওই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে রয়েছেন। গত নির্বাচনে তার কাছে পরাজিত হোন সাবেক চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ। তিনি জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদে রয়েছেন এবং তার ভাই নাজমুল হাসান চৌধুরী রঞ্জন কোতয়ালী থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক পদে রয়েছেন।
শহিদুল ইসলাম মজনুর অভিযোগ- নির্বাচনে পরাজয়ের পর থেকেই এই দুই ভাই নানাভাবে হয়রানি করে আসছে। ৫ ই আগস্টের পর থেকে তারা ইউনিয়ন পরিষদ দখলে নিতে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, গত ১লা ফেব্রুয়ারি ইউনিয়নের কয়েকজন মেম্বারকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে একটি কাগজে স্বাক্ষর নেন। পরে তাদের নিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করেন। সেখান থেকে ফিরেই মেম্বাররা বিষয়টি আমাকে জানান। পরে আমি জেলা প্রশাসককে জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতার পালাবদলের পর থেকে পংকজ ও রঞ্জন আমার কাছে ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করছে। টাকা না দিলে আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে বসতে দেবে না। সবশেষ ৩ লাখ টাকার কথা বলছে এই টাকা দিলে আমাকে ইউনিয়ন পরিষদে বসতে দিবেন। এছাড়া পরিষদের বিভিন্ন ফান্ডের ও কাজের টাকা আসলে সেই টাকার ভাগ চেয়েছেন।
দশজন সদস্য স্বাক্ষরিত অভিযোগে দেখা যায়, তারা নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ এর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান মজনুর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগের বিষয়টি উল্লেখ করেন।  এ বিষয়ের প্রতিকার চেয়ে জেলা প্রশাসককে পঙ্কজ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন।
এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি ওই মেম্বারদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেন নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ। পরে তার নেতৃত্বে ৩ ফেব্রুয়ারি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের বরাবর চেয়ারম্যানের অনুপস্থিত থাকা ও নানাবিধ অনিয়ম নিয়ে লিখিত অভিযোগ করেন তারা। পরের দিন ৪ ফেব্রুয়ারি ওই মেম্বাররা ফের পঙ্কজ এর বিরুদ্ধে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ তুলেছেন।
এমন অভিযোগ করে ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার মোসলেম উদ্দিন বলেন, পঙ্কজ বিএনপি নেতা। বর্তমান পরিস্থিতি ভালো না তাই তার ভয়ভীতিতে আমি স্বাক্ষর করেছি। আমার এলাকায় চলাচল করতে হয় তারা বলছে তাদের সাথে না গেলে আমি এলাকায় চলাচল করতে পারবো না। তাই স্বাক্ষর করা ছাড়া আমার কোন উপায় ছিল না।
এছাড়া ১,২ ও ৩ নং ওয়ার্ডের নারী সদস্য হাছিনা বেগমও একই অভিযোগ করে বলেন, সাবেক চেয়ারম্যান আমাদের ডাকলে আমরা সেখানে যাই। পরে একটি ঘরের ভেতর আটকিয়ে আমাদের ওই কাগজে আমাদের স্বাক্ষর করতে বলেন। সেখানে কি লেখা ছিল, তা পড়তেও দেয়া হয়নি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান চৌধুরী পঙ্কজ দাবি করেন আমার ভাই এবং আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তার সম্পূর্ণ রাজনৈতিক, ইউনিয়নের কোন বিষয় তার জানা নেই।
তিনি বলেন, ৩০ বছর এই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলাম কোন দিন ভয়-ভীতির রাজনীতি করিনি। সব সময় জনগণের স্বার্থ দেখেছি। বর্তমান চেয়ারম্যান পলাতক থাকায় এলাকার জনগণ নানাভাবে সমস্যার মধ্যে পড়তে হচ্ছে। তাই বর্তমান মেম্বারদের অনুরোধে আমি তাদের সাহায্য করেছি। তারা চেয়ারম্যানের অবর্তমানে প্যানেল চেয়ারম্যান করে ইউনিয়ন পরিষদের কাজ কর্ম চালু রাখতে চান।

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর শহরের এডুকেশন জোন খ্যাত বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন ফরিদপুর রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসলে তার কাছে বাইতুল আমান এলাকাবাসী ও আশেপাশে কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাদের এই দীর্ঘদিনের দাবি তুলে ধরেন এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় ফরিদপুর কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানো দাবি কমিটির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ আলাওল হোসেন তনু, ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাহিম, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সভাপতি মো. পার্থ আহমেদ, মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান,মোহাম্মদ রোমন চৌধুরী, মো. আব্দুস সালাম সহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বাইতুল আমান কলেজগেটে বহু আগে থেকেই রেলের একটি স্টেশন রয়েছে, সেখানে আগে ট্রেন এসে থামতো, অজ্ঞাত কারণে এখন আর এখানে ট্রেন থামে না । এলাকাটি ফরিদপুরের মধ্যে এডুকেশন জোন নামে খ্যাত। যেখানে রয়েছে‌ ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।

সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলে ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের একেক জেলার একেক প্রান্ত থেকে তারা শিক্ষা লাভের জন্য কেউ বাসে, কেউ লঞ্চে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং অধিক ভাড়া দিয়ে তারা ফরিদপুর থেকে যাতায়াত করেন। অথচ বায়তুল আমান কলেজগেট স্টেশন থেকে কলেজের কোনোটির দূরত্ব ৪০০ মিটার, ৫০০ মিটার, ৬০০ মিটার। বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে যদি ট্রেন থামানো হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর হবে তাদের সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় তারা বাড়িতে যাতায়াত করতে পারবে।

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে বাইতুল আমান রেলগেট স্টেশনে পুর্বের মতো ট্রেন থামানো নির্দেশনার মতো একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত নিতে রেলের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন এলাকাবাসী ও প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর।

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

সোহাগ মাতুব্বর, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না। সরাসরি আমার সাথে দেখা করতে পারবেন। কথা বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. মুজাহিদ বেগ।’

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের উচাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক উঠান বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুজাহিদ বেগ বলেন, ‘আমি যদি ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমি আপনাদেরকে নিয়ে এই আসনটি এমনভাবে সাজাবো যাতে বাংলাদেশের মধ্যে রোল মডেল হিসেবে তৈরি হয়।’

এসময় তিনি আরো বলেন, ফরিদপুর-৪ আসনের একটা যুবক ভাই বেকার থাকবে না। যুবক ভাইয়েরা আমার হৃদয়ে আছে। তাদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, খেলাধুলা করার সুযোগ তৈরি করার জন্য সব করব।

হাফেজ কুব্বাত মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাগর বেগের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন- হায়দার হোসেন, সোবাহান হোসেন, বাকী মাতুব্বর, সেলিম মাহমুদ, সহিদুল ইসলাম, আল-আমিন, মো. রাসেল মোল্লা ও সৌরভ বিশ্বাস প্রমূখ।