খুঁজুন
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫ কার্তিক, ১৪৩২

ইরানে হামলায় কেন প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাম্পের নীতি?

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫, ১১:৩৬ এএম
ইরানে হামলায় কেন প্রশ্নবিদ্ধ ট্রাম্পের নীতি?

গত শুক্রবার সকালবেলা ইরানের ওপর ইসরায়েল যেই আক্রমণ চালিয়েছে, সেই আক্রমণে ইরানের শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীদের পাশাপাশি প্রাণ হারিয়েছেন দেশটির অনেক বেসামরিক ব্যক্তি ও সাধারণ জনগণ। এ কারণে ইসরায়েলের ওপর পাল্টা আক্রমণ চালাতে বাধ্য হয়েছে ইরান সরকার। মধ্যপ্রাচ্যের অবস্থা এরই মধ্যে যথেষ্ট অস্থিতিশীল ছিল, বিশেষ করে গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েল পরিচালিত নিরবচ্ছিন্ন গণহত্যার কারণে। এখন ইরানের সঙ্গে ইসরায়েলের এ সংঘর্ষ নতুন করে মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক অস্থিরতাকে বহুগুণ বৃদ্ধি করল।

অশান্তিকর পরিস্থিতি বজায় রাখা এবং গণহত্যা চলমান রাখার মাধ্যমে ইসরায়েল তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু হাস্যকর ব্যাপার হলো, যাদের সঙ্গে এ রাষ্ট্রটি আক্রমণাত্মক আচরণ করে, তাদের আগে গোটা বিশ্বের কাছে আক্রমণকারী হিসেবে চিহ্নিত করে এবং নিজেদের অসহায় পক্ষ হিসেবে উপস্থাপনের কৌশল অবলম্বন করে। এই একই কৌশল তারা প্রয়োগ করেছে ইরানের ক্ষেত্রেও। ইরানের ওপর আক্রমণ চালানোর আগে বহুকাল ধরেই তারা ইরানকে আগ্রাসী শক্তি হিসেবে উপস্থাপন করে আসছে। ইরানের কাছে আদতে পারমাণবিক অস্ত্র আছে কি না, তা প্রমাণ না করেই তারা দাবি করেছে যে ইরানের এই পারমাণবিক অস্ত্র সরাসরি ইসরায়েল রাষ্ট্রের অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এবং ইসরায়েলের ওপর পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহারের কোনো ধরনের হুমকি ইরান দেয়নি। তার পরও নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ইরানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ ঘোষণা করেছেন।

দুশ্চিন্তার একটা কারণ হলো এই যে, ইরানের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র না থাকলেও ইসরায়েলের কাছে পারমাণবিক অস্ত্র আছে। আর ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে পশ্চিমা বিশ্ব যেভাবে সমর্থন দেয়, তাতে এটা মনে করা দোষের কিছু নয় যে, মধ্যপ্রাচ্যের অন্য কোনো দেশের চরম আগ্রাসী হওয়ার সুযোগ না থাকলেও ইসরায়েলের সেই সুযোগ আছে। দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং নানাবিধ দুর্নীতির অভিযোগের ঘূর্ণিপাকে কোণঠাসা নেতানিয়াহু পরিত্রাণের হাতিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক দ্বন্দ্বকে। প্রতিরক্ষার নামে ইসরায়েলকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংঘর্ষে জড়িয়ে রাখলে দেশের ভেতরে জনগণ তার ওপর গদি ছাড়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করবে না বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

ইসরায়েলের সাম্প্রতিক এ হামলায় কোনো সক্রিয় ভূমিকা পালন করার কথা অস্বীকার করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। অথচ আক্রমণের ঠিক এক দিন আগেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছিলেন, ইরানের ওপর যে কোনো সময় ইসরায়েলের হামলা চালানোটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। চলতি বছরের মার্চ মাসে ‘গাজায় ইসরায়েলের কাজ সমাপ্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু সরবরাহ করছেন’ বলে বড়াই করে বক্তৃতা দিয়েছিলেন ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি নেতানিয়াহুর অসন্তোষের কারণ হয়ে ওঠেন যখন ট্রাম্প ইসরায়েলকে যুদ্ধের বদলে কূটনৈতিক পথ অবলম্বন করে ইরানের সঙ্গে সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান।

ইরানের ওপর তথাকথিত ‘প্রতিরোধমূলক হামলা’ চালিয়ে ইসরায়েল কার্যত যে কোনো ধরনের শান্তিপূর্ণ সমাধানের সম্ভাবনাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছে। ইরানকে বেসামরিক পারমাণবিক সমৃদ্ধিকরণ কর্মসূচি চালানোর অনুমতি দেওয়ার ব্যাপারে যে বহুপক্ষীয় আলোচনার সুযোগ তৈরি হয়েছিল, সেই সুযোগও নষ্ট করে দিয়েছে তারা। এরই মধ্যে বুধবার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিশ্চিত করেন যে, মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি অঞ্চলে অবস্থানরত মার্কিন কূটনৈতিক ও সামরিক কর্মীদের সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তার ভাষায়, ‘এটি বিপজ্জনক এলাকা হয়ে উঠতে পারে। পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয় তার ওপর ভিত্তি করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।’ এর থেকে বোঝা যায় যে, নিকট ভবিষ্যতে এই অঞ্চলে কঠিন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ইরানের ওপর চালানো এ হামলার ঘটনায় হোয়াইট হাউস খুব বেশি বিচলিত হয়েছে বলে মনে হচ্ছে না। আক্রমণের এক দিন পর রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে, যেখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নিজেও উপস্থিত ছিলেন। তাও সেই জরুরি বৈঠকের সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল সকাল ১১টায়, যেন যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা স্বস্তিতে সকালের নাশতা সেরে আলোচনায় অংশ নিতে পারেন। এসব কর্মকাণ্ড দেখে বোঝা যায় যে, ইরানের দুর্দশা নিয়ে মোটেই তাড়াহুড়ো করছে না মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। বরং আমেরিকার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, ‘ইরানের ওপর চালানো হামলায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। মধ্যপ্রাচ্যে মোতায়েনকৃত মার্কিন বাহিনীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় আমাদের অগ্রাধিকার থাকবে। আমি স্পষ্ট করে সাবধান করে দিতে চাই, ইরান যেন যুক্তরাষ্ট্রের কোনো স্বার্থকে লক্ষ্য করে আক্রমণ না চালায় এবং আমেরিকান কর্মীদের যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না করে।’

অথচ ইরানের স্বার্থ ও কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে আক্রমণ চালানোর সময় যুক্তরাষ্ট্র কোনো সংকোচ বোধ করেনি। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে মার্কিন ড্রোন হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোর-এর কুদস্ ফোর্সের প্রধান কাসেম সুলায়মানির প্রাণ যায়। যুক্তরাষ্ট্রের এমন দ্বিমুখী নীতি তাদের সাম্রাজ্যবাদী আকাঙ্ক্ষার দৃষ্টান্ত হিসেবে রয়ে গেছে। ট্রাম্পের প্রথম দফার শাসনামলে সুলায়মানির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সরকারকে সেজন্য কোনো খেসারত দিতে হয়নি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে বৈদেশিক নীতির ব্যত্যয় ঘটানো এবং নিজস্ব স্বার্থ উদ্ধারে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা কোনো বিরল ঘটনা নয়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের উদারপন্থি গণমাধ্যম, যারা আন্তর্জাতিক আইন মান্য করার ব্যাপারে সবাইকে উৎসাহিত করে থাকে, তাদের একাংশ কাসেম সুলায়মানির হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় যথেষ্ট উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছিল। যেমন—‘নিউইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকার বৈদেশিক নীতি বিষয়ক কলামিস্ট এ ঘটনার পর ইতিবাচক সাড়া দিয়ে লিখেছিলেন যে, ‘যা হয়েছে ভালো হয়েছে। এই কাজের জন্য একদিন তেহরানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নামে হয়তো কোনো সড়কের নামকরণ করা হবে।’

এমনটা অবশ্য ঘটেনি। ট্রাম্পের প্রতি তেহরানবাসীর মনোভাব এখনো বৈরীই রয়ে গেছে। তবে ট্রাম্প যদি তার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনী প্রচারণার মূলনীতি ‘আমেরিকা ফার্স্ট’-এ অটল থাকতেন, তাহলে হয়তো তার প্রতি তেহরানের বিদ্বেষের মাত্রা কিছুটা লোপ পেত। আমেরিকা ফার্স্ট নীতির নাম থেকেই স্পষ্ট বোঝা যায় যে, যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ নাগরিকদের স্বার্থ ও প্রয়োজনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়াই এই নীতির মূল উদ্দেশ্য; অন্য দেশের সাধারণ জনগণের ওপর বোমাবর্ষণ করা নয়। কিন্তু ইরানের ওপর হামলার ঘটনায় ট্রাম্পের নীরব সমর্থন এই নীতিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। মনে হয়েছে, যেন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নয়; বরং ‘ইসরায়েল ফার্স্ট’ নীতি বাস্তবায়ন করতে উদ্যত হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বিরুদ্ধে নিজস্ব স্বার্থের ঊর্ধ্বে ইসরায়েলের নীতিগত উদ্দেশ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগ নতুন নয়। যুগে যুগে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় রাজনৈতিক দলের প্রশাসন ইসরায়েলের পেছনে কোটি কোটি ডলার অর্থ খরচ করে আসছে, যার প্রায় পুরোটাই গেছে ইসরায়েলের নিরাপত্তা অবকাঠামো তৈরিতে এবং ইসরায়েলকে প্রাণঘাতী অস্ত্র সরবরাহ করতে। অথচ এই বিপুল পরিমাণ অর্থ যদি স্বল্পমূল্যের আবাসন প্রকল্প নির্মাণ এবং সুলভ স্বাস্থ্যসেবার মতো জরুরি খাতে যুক্তরাষ্ট্রের ভেতরে বিনিয়োগ করা হতো, তবে সাধারণ মার্কিন নাগরিক আরও সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত জীবনযাপন করতে সক্ষম হতো।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে এমন অভিযোগ উঠছে যে, ওয়াশিংটন ডিসিতে আমেরিকান নীতি নির্ধারণের ওপর ইসরায়েলের অনেক বড় প্রভাব এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণও রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ড দেখে এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ গুজব বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। কিন্তু দিনশেষে সত্যিটা হলো, যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাদী প্রধান প্রধান খাত ইসরায়েলের আঞ্চলিক নৃশংসতার সুবাদে বিপুল পরিমাণ মুনাফা লুটে নিচ্ছে। যেমন—যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্রশিল্প পৃথিবীর মধ্যে বৃহত্তম। এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কোনো ব্যক্তি ইরানের ওপর ইসরায়েলের আক্রমণের প্রতি অসমর্থন জানাবে না। কারণ এই আক্রমণ তাদের জন্য উন্মোচন করে দিচ্ছে ব্যবসার নতুন দ্বার।

হামলার ঘটনার পর যুক্তরাজ্যের সংবাদসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে যে, ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, ‘ইসরায়েল ও তার মিত্র শক্তি যুক্তরাষ্ট্রকে এই হামলার জন্য চরম মূল্য দিতে হবে।’ তিনি আরও বলেছেন, নিশ্চয়ই এ অভিযান চালানোর ক্ষেত্রে তেল আবিবকে সম্পূর্ণ সহায়তা দিয়েছে ওয়াশিংটন ডিসি। তবে যে মূল্যই তাদের দিতে হোক না কেন, এর ভেতর থেকে যুক্তরাষ্ট্র শেষ পর্যন্ত ঠিকই ফায়দা আদায় করে নেবে বলে ধরে নেওয়া যায়। কারণ মধ্যপ্রাচ্যের এই সংঘর্ষগুলোতে দিনশেষে আঞ্চলিক জনগোষ্ঠীই ক্ষতিগ্রস্ত হয়, আর পরাশক্তিগুলো নিজেদের লভ্যাংশটা যথাযথই বুঝে নেয়।

লেখক: আমেরিকান সাংবাদিক, কলামিস্ট ও লেখক। নিবন্ধটি আলজাজিরার মতামত বিভাগ থেকে অনুবাদ করেছেন অ্যালেক্স শেখ

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।

ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৩৬ পিএম
ফরিদপুরে কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ফরিদপুর শহরের এডুকেশন জোন খ্যাত বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানোর দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) রাতে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক মো. আফজাল হোসেন ফরিদপুর রেল স্টেশন পরিদর্শনে আসলে তার কাছে বাইতুল আমান এলাকাবাসী ও আশেপাশে কলেজগুলোতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা তাদের এই দীর্ঘদিনের দাবি তুলে ধরেন এবং স্মারকলিপি প্রদান করেন।

স্মারকলিপি প্রদানের সময় ফরিদপুর কলেজ গেট স্টেশনে ট্রেন থামানো দাবি কমিটির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর সৈয়দ আলাওল হোসেন তনু, ফরিদপুর জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসেন অনু, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. পারভেজ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাহিম, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটের সভাপতি মো. পার্থ আহমেদ, মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান,মোহাম্মদ রোমন চৌধুরী, মো. আব্দুস সালাম সহ স্থানীয় এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, বাইতুল আমান কলেজগেটে বহু আগে থেকেই রেলের একটি স্টেশন রয়েছে, সেখানে আগে ট্রেন এসে থামতো, অজ্ঞাত কারণে এখন আর এখানে ট্রেন থামে না । এলাকাটি ফরিদপুরের মধ্যে এডুকেশন জোন নামে খ্যাত। যেখানে রয়েছে‌ ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী সরকারী রাজেন্দ্র কলেজ, ফরিদপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, ফরিদপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, সরকারি টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, ফরিদপুর সরকারি কলেজ, ফরিদপুর সিটি কলেজ সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ।

সবগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মিলে ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে। এই শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের একেক জেলার একেক প্রান্ত থেকে তারা শিক্ষা লাভের জন্য কেউ বাসে, কেউ লঞ্চে করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এবং অধিক ভাড়া দিয়ে তারা ফরিদপুর থেকে যাতায়াত করেন। অথচ বায়তুল আমান কলেজগেট স্টেশন থেকে কলেজের কোনোটির দূরত্ব ৪০০ মিটার, ৫০০ মিটার, ৬০০ মিটার। বাইতুল আমান কলেজ গেট স্টেশনে যদি ট্রেন থামানো হয় তাহলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর হবে তাদের সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি কমবে, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের জন্য স্বল্প ভাড়ায় তারা বাড়িতে যাতায়াত করতে পারবে।

এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি দূর করতে বাইতুল আমান রেলগেট স্টেশনে পুর্বের মতো ট্রেন থামানো নির্দেশনার মতো একটি সুন্দর সিদ্ধান্ত নিতে রেলের মহাপরিচালকের কাছে আবেদন এলাকাবাসী ও প্রায় ৫০ হাজার শিক্ষার্থীর।

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

সোহাগ মাতুব্বর, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:১৩ পিএম
‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না’ — স্থপতি মুজাহিদ বেগ

‘আমি এমপি হলে আমার কাছে আসতে কোন নেতা ধরতে হবে না। সরাসরি আমার সাথে দেখা করতে পারবেন। কথা বলতে পারবেন বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মো. মুজাহিদ বেগ।’

শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তুজারপুর ইউনিয়নের উচাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এক উঠান বৈঠকে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মুজাহিদ বেগ বলেন, ‘আমি যদি ফরিদপুর-৪ আসনের এমপি নির্বাচিত হতে পারি তাহলে আমি আপনাদেরকে নিয়ে এই আসনটি এমনভাবে সাজাবো যাতে বাংলাদেশের মধ্যে রোল মডেল হিসেবে তৈরি হয়।’

এসময় তিনি আরো বলেন, ফরিদপুর-৪ আসনের একটা যুবক ভাই বেকার থাকবে না। যুবক ভাইয়েরা আমার হৃদয়ে আছে। তাদের শিক্ষা নিশ্চিত করা, খেলাধুলা করার সুযোগ তৈরি করার জন্য সব করব।

হাফেজ কুব্বাত মাতুব্বরের সভাপতিত্বে ও সাগর বেগের সঞ্চালনায় এসময় উপস্থিত ছিলেন- হায়দার হোসেন, সোবাহান হোসেন, বাকী মাতুব্বর, সেলিম মাহমুদ, সহিদুল ইসলাম, আল-আমিন, মো. রাসেল মোল্লা ও সৌরভ বিশ্বাস প্রমূখ।