খুঁজুন
শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে এনসিপিতে ফ্যাসিবাদের দোসরেরা, বৈষম্যবিরোধী নেতার পোস্ট

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ জুন, ২০২৫, ১১:০২ এএম
ফরিদপুরে এনসিপিতে ফ্যাসিবাদের দোসরেরা, বৈষম্যবিরোধী নেতার পোস্ট

ফরিদপুরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমন্বয় কমিটি নিয়ে বিতর্কের দানা বেঁধেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও সমালোচনায় সরব জেলা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সংগঠকেরা। তাঁদের অভিযোগ, জেলার দুটি কমিটিতে আওয়ামী লীগের লোকদের স্থান দেওয়া হয়েছে। জুলাই আন্দোলনবিরোধী তাঁদেরও কমিটিতে রাখা হয়েছে।

এর আগে ৫ জুন এনসিপি ফরিদপুরে ২৩ সদস্যের সমন্বয় কমিটি ঘোষণা করে। এতে স্বাক্ষর করেন দলের সদস্যসচিব আখতার হোসেন ও মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ। কমিটির মেয়াদ আগামী তিন মাস অথবা আহ্বায়ক কমিটি গঠনের আগ পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে।

কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হলেন সৈয়দা নীলিমা দোলা, যুগ্ম সমন্বয়কারী এস এম জাহিদ, সাইফ হাসান খান সাকিব, জিল্লুর রহমান, মো. বায়েজিদ হোসেন শাহেদ ও মো. কামাল হোসাইন।

সদস্যরা হলেন ফিরোজ হোসেন মোল্যা, মো. মিরাজ উদ্দীন শরীফ, শেখ বাচ্চু, রফিকুল ইসলাম বর্ণ, হাবিবুর রহমান আল-মুনীর, ছায়েমা আক্তার, আরমানুল ইসলাম, মেহেদী হাসান, সোহান ইসলাম সুজাত, রনি মোল্যা, হায়দার মোল্যা, শেখ জাহিদ, জুবায়ের রহমান, এস এম আকাশ, নবীন শেখ, সাইফুল ইসলাম ও মো. রুবেল মিয়া হৃদয়।

এ ছাড়া ৩ জুন সংগঠনের শ্রমিক উইংসের জেলা কো-অর্ডিনেশনের ৩৬ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। প্রধান সমন্বয়কারী এস এম জুনায়েদ জিতু। এসব কমিটি প্রকাশ্যে এলে ক্ষোভ জানান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।

গতকাল শনিবার সংগঠনের জেলা সদস্যসচিব সোহেল রানা ফেসবুক পোস্টে এনসিপিকে উদ্দেশ্য করে লিখেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা দল এনসিপি। শহীদদের রক্ত, হায়েনার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া বীরদের ত্যাগের ওপরে দাঁড়িয়ে থাকা একটি রাজনৈতিক দল। দেখতে পাচ্ছি আমরা, তৎকালীন সময়ের আওয়ামী লীগের সম্মানীত দালালরা, ফ্যাসিবাদের কোলে বসে থাকা দোসররা মুখ লুকিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা নিচ্ছেন এই দলে। বাদ যাচ্ছে না সহযোগী সংগঠনগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদ।’

তিনি উল্লেখ করেন, ‘এমন গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়ার আগে কখনো খতিয়ে দেখার চেষ্টাও করেন নাই, জুলাইয়ে তাদের ভূমিকা ছিল। কার অবস্থান কী ছিল! জুলাইয়ের, পক্ষে নাকি বিপক্ষে? যাদের পদ/পদবি দিবেন, তারা কী চায়! মানুষের জন্য রাজনীতি নাকি, টেন্ডারবাজি, দখলদারি, করে নিজের পকেট ভারী।’

সোহেল আরও বলেন, ‘সময় ভালো চলছে…বসন্তের কোকিল আসবে ঝাঁকে ঝাঁকে সময় খারাপ হলে, এদের কি আদৌ খুঁজে পাওয়া যাবে? রীতিমতো অবাক করে দিচ্ছেন আমাদের! যেটার ফলাফল হবে—সাপের ডিম সাপেই খাবে!’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সোহেল রানা বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকার বিদায়ের পর নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের স্বপ্ন দেখছিল তরুণ সমাজ। তরুণদের ভরসারস্থল জুলাইয়ে গড়ে উঠা এনসিপি, তারা এনসিপিকে ভোট দেওয়ার স্বপ্ন দেখছিল।

‘কিন্তু আমরা হতাশাগ্রস্ত! ফরিদপুরের দুটি কমিটিতেই আওয়ামী লীগের দোসরদের স্থান দেওয়া হয়েছে। জুলাই আন্দোলনবিরোধী ছিল কয়েকজন, তারাও কমিটিতে। এ ছাড়া ফরিদপুরের কিছু বিতর্কিত ব্যক্তিদের স্থান দেওয়া হয়েছে। এগুলো দেখে আমাদের অনেকে ক্ষোভ জানাচ্ছেন ও প্রতিবাদ জানাচ্ছেন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘এসব কমিটি নিয়ে যারা প্রতিবাদ করছে, তাদের মানহানি মামলারও হুমকি দেওয়া হচ্ছে। অথচ হুমকিদাতার স্পষ্ট অবস্থান আওয়ামী লীগের সাথে। যার প্রমাণও রয়েছে।’

তবে ভিন্ন কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য ও জেলার প্রধান সমন্বয়কারী সৈয়দা নীলিমা দোলা। তিনি বলেন, ‘রাজনীতি করতে আসলে কিছু বিতর্ক হয়ে থাকে। আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে অনেকের ছবি থাকতে পারে, কিন্তু আমরা ছবির রাজনীতি দেখছি না। কারণ, সেই লোক তো আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে নেই। কেউ যদি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকে—এমন অভিযোগ পেলে সেটা দেখা হবে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ছাড়া জেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটিতে ছাত্রদলের লোকজনও রয়েছে বলে জানান।

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৫১ পিএম
সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফরিদপুরের সালথায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট ) বিকেলে সালথা প্রেসক্লাবের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সেলিম মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সালথা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির মোল্লা, সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, সাইফুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক লাভলু মিয়া, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক পারভেজ মিয়া, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক আকাশ সাহা, কার্যনির্বাহী সদস্য এম কিউ হুসাইন বুলবুল, বিডি২৪লাইভ-এর ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক মিয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা তুহিন হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। এসময় বক্তারা বলেন, তুহিন হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় কুপিয়ে ও জবাই করে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার মালিগ্রাম এলাকায় থেকে ভাঙ্গা থানার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একইদিন দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তাছাড়া ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে সে কিছুটা গা ডাকা দিয়েছিল। তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর আস্তাভাজন ছিলেন।

এবিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ভাঙ্গা থানাযর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

ফরিদপুরে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪২ পিএম
ফরিদপুরে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চলাচলের সড়কে পাট শুকানোর বাঁশপুতাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৭ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তম সরকার (৩০) নামে একজনকে আশঙ্কজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গুরুতর আহতরা হলেন, বাজিদাদপুর গ্রামের বিশ্বাস গ্রুপের জগদীশ বিশ্বাস (৬০), জয়ন্ত বিশ্বাস (২৬) ও অপূর্ব বিশ্বাস (৩৫) এবং বালা গ্রুপের শিবু বালা (৬০), রতন বালা (৪০) ও সুজন সরকার (২৫)। তারা সকলেই ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়া জগদীশের স্ত্রী ইতি বিশ্বাস (৫২), সুশান্ত বিশ্বাস (৩০), রবিন বিশ্বাস (৫০), সমীর বিশ্বাস (৪০), সুজন সরকার (৩০), শুক্লা বিশ্বাস (৩৩)সহ বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামের নীতিশ কুমার বালা (৫৫) ও জগদ্বীশ কুমার বিশ্বাসের (৬০) মধ্যে বাড়ির সামনে রাস্তা সংলগ্ন জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসে। সম্প্রতি শালিশ মিমাংসা করে সীমানা নির্ধারণ পিলার বসিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালের দিকে জগদিশ বিশ্বাসরা সড়কের ওপর পাট শুকানো বাঁশ পুঁততে গেলে প্রতিপক্ষ নীতিশ কুমার বালার লোকজন বাঁধা দেয়। এ সময় বাঁশ সরানো নিয়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উভয়পক্ষের ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

সংঘর্ষের ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী শেখর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাইদ (পান্নু) জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইপক্ষকে নিবৃত করার চেষ্টা করি। সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার খবর পেয়ে টহল পুলিশ অর্ধেক পথ থেকে ফিরে গেছেন।

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা হক রুম্পা জানান, একটি মারামারির ঘটনায় ১৭ জন হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে ৭জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।