খুঁজুন
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৩৮ এএম
ফরিদপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা আহ্বায়ক কমিটি গঠন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফরিদপুর জেলা শাখার নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ছয় মাসের জন্য কার্যকর এই কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে জেলার সদ্য নতুন কমিটির আহ্বায়ক কাজী রিয়াজুল ইসলাম (রিয়াজ) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রবিবার (২১ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রিফাত রশিদ, মুখ্য সমন্বয়ক হাসিব আল ইসলাম ও সাংগঠনিক সম্পাদক মঈনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জেলা কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়।

নবগঠিত কমিটিতে ফরিদপুর জেলা আহ্বায়ক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন কাজী রিয়াজুল ইসলাম (রিয়াজ), সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন এনামুল চৌধুরী, সদস্য সচিব আনিসুর রহমান সজল এবং সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব হিসেবে মনোনীত হয়েছেন সাজ্জাদ হোসেন। জেলা কমিটির অন্যান্য পদে দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিয়ে মোট ২১৮ সদস্যের সমন্বয়ে এই আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।

কমিটির সদস্যরা জানিয়েছেন, আগামী ছয় মাসের মধ্যে তারা জেলা পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও সুসংহত করবেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষা ও বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার জন্য কাজ করবেন।

এতে ফরিদপুরে শিক্ষার্থী আন্দোলনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা এবং স্থানীয় পর্যায়ে কার্যক্রম সম্প্রসারণে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

ফরিদপুর জেলার সদ্য নতুন কমিটির আহ্বায়ক কাজী রিয়াজুল ইসলাম (রিয়াজ) এক প্রতিক্রিয়ায় ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে জানান, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্লাটফর্ম অনেক শহীদের রক্তের উপরে দাঁড়িয়ে সৃষ্টি। এই প্লাটফর্মের দ্বায়বদ্ধতা অনেক। কমিটিতে যারা আসছে তারা ইনশাআল্লাহ সুন্দর এবং জবাবদিহিমূলক এক বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাবে। এই প্লাটফর্ম অরাজনৈতিক, কিন্ত বৈপ্লবিক ঘরোনার কাজে নিজেদের সম্পৃক্ত রাখবে। কমিটিতে যাদের নাম আসছে বা আসে নাই তাদের সকলের সহযোগিতা চাই।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিগত সময়ে দেখা গেছে অনেকে কমিটিতে না থেকেও এই প্লাটফর্মের গঠনমূলক কাজে অনেক আন্দোলনকারী সহযোগিতা করেছে। এবারও বিশ্বাস রাখি যারা কমিটিতে নিজ আগ্রহে আসেন নাই, তারাও সকল প্রাসঙ্গিক কাজে সহযোগিতা করবেন। বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক।’

ফরিদপুরে বিএনপির ভেতরে পরিবর্তন, বহিষ্কৃত ৭ নেতা ফিরলেন দলে

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:৪৮ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির ভেতরে পরিবর্তন, বহিষ্কৃত ৭ নেতা ফিরলেন দলে

ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের ৭জন নেতার বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। এর আগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত অমান্য করার অভিযোগে তাদের বহিষ্কার করা হয়েছিল।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুর ১ টার দিকে ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপন ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রবিবার (২১ ডিসেম্বর) রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল–বিএনপির ফরিদপুর জেলা শাখার পক্ষ থেকে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা এবং সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপনের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আপনার আবেদনের প্রেক্ষিতে এবং উপজেলা বিএনপি ও আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থীর সুপারিশক্রমে নিম্নবর্ণিত নেতৃবৃন্দের বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার করা হলো। এ আদেশ আজ থেকে কার্যকর হবে।

বহিষ্কৃত আদেশ প্রত্যাহার হওয়া নেতারা হলেন- মো. রাফিউল আলম মিন্টু (সাবেক সাধারণ সম্পাদক, সাতৈর ইউনিয়ন বিএনপি, বোয়ালমারী উপজেলা), আব্দুল মালেক মুন্নু (সাবেক সভাপতি, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), আবু বক্কর ছিদ্দিক (সাবেক সহ-সভাপতি, নওপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), আজাদ খান (সাবেক সহ-সভাপতি, জাহাপুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), মো. কাজী সিরাজুল ইসলাম (সাবেক সভাপতি, ৭নং ওয়ার্ড, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা), মো. আরিফুল ইসলাম (সাবেক সদস্য, মধুখালী উপজেলা বিএনপি) এবং আবু জাফর সরদার (সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, রায়পুর ইউনিয়ন বিএনপি, মধুখালী উপজেলা)।

প্রেসবিজ্ঞপ্তির অনুলিপি কেন্দ্রীয় বিএনপি এবং বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দের কাছে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ.কে.এম কিবরিয়া স্বপন ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘তারা আমাদের কাছে তাদের পূর্বের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়েছে এবং আদেশ প্রত্যাহার চেয়ে আবেদন করেছে। এছাড়া তারা দলের বিপক্ষে আর কখনো কাজ করবে না বলেও জানিয়েছে আবেদনে। আর এই আবেদনের উপর উপজেলা ও ইউনিয়ন বিএনপি সুপারিশ করেছে। এছাড়া স্থানীয় বিএনপি ও ধানের শীষের যে প্রার্থী সেও সুপারিশ করেছে। আর তাদের সুপারিশের ভিত্তিতে ফরিদপুর জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে দলের জন্য কাজ করতে বলা হয়েছে।’

 

পৃথিবীতে এত ছল, তবুও ফিরে এলে না

প্রবুদ্ধসুন্দর কর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:২৮ এএম
পৃথিবীতে এত ছল, তবুও ফিরে এলে না

আপনার সাথে পরিচয় হওয়াটা অনেক ভালো ছিল। তারপর আপনার সাথে কথা বলতে বলতে খুব ভালো একটা বন্ধন তৈরি হল, আমাদের মধ্যে খুব ভালো একটা বন্ধুত্ব গড়ে উঠল, দিনগুলো ভালোই যাচ্ছিল। কিন্তু সমস্যা তখনই শুরু হল যখন আপনার জন্য আমার অনুভূতি তৈরি হতে শুরু করল এবং আমি তা প্রকাশ করতে শুরু করলাম, ভালবাসা কোথাও সুন্দর, কিন্তু অন্যদিকে ঠিক তেমনি ভয়ঙ্কর; আর অন্যদিকে, ভালবাসা তখনই সুন্দর যখন তা প্রকাশ করা হয় না।

কিন্তু আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ, আমি আপনার সাথে দেখা করার জন্য মরিয়া ছিলাম, আপনি আমাকে দেখা করার সুযোগ দিলেন। তারপর হঠাৎ করে এসে আমাকে সারপ্রাইজ দিলেন, তারপর আপনার সাথে যতবারই দেখা হয়েছে, সেগুলো ছিল জীবনের সেরা দিনগুলো, ধন্যবাদ আমি নামক বেহায়ার সাথে দেখা করার জন্য। আপনি আমার সাথে যা করেছেন, আপনি কি জানেন? জানেন না।

আমি বলেছি,

আমি নিজেই সুন্দর নই, লম্বা নই, আমার নিখুঁত ফিগার নেই, আমি রূপবতী, গুণবতী, ভাগ্যবতী কিছুই নই, আপনার মতো আমি কোনো ধনী ছেলেমেয়েও নই। তবুও আপনার মতো একজন নিখুঁত মানুষকে ভালোবাসার দুঃসাহস আমি করেছি।

আমি যখন আপনাকে ভালোবাসি বলে প্রকাশ করতে শুরু করলাম, ঠিক তখনই আপনি আমাকে ধাপে ধাপে বুঝিয়ে দিলেন যে ভালোবাসা জিনিসটা আমার জন্য নয়। কিন্তু আমি কী করব, আপনি বললেন, আপনাকে ভালোবেসে আমি পাগলের মতো, পথভ্রষ্ট কুকুরের মতো আপনার পেছনে ছুটে বেড়াতাম। আপনাকে নিজের করে পাওয়ার জন্য অনবরত আকুল হতাম, ভালোবাসার প্রতি আমার কোনো আগ্রহ ছিল না, আর ভালোবাসার ওপর কোনো বিশ্বাসও ছিল না। কিন্তু আপনাকে পাওয়ার ভালোবাসা আমি সামলাতে পারিনি, আপনাকে!

ফরিদপুরের গ্রামের শীতের সকালে আগুন পোহানো মানুষের গল্প

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৪০ এএম
ফরিদপুরের গ্রামের শীতের সকালে আগুন পোহানো মানুষের গল্প

ভোরের ফরিদপুর। চারদিকে কুয়াশার ঘন পর্দা, সূর্যের আলো তখনো মাঠ ছুঁয়ে দেখেনি। গ্রামের কাঁচা রাস্তায় হাঁটলে মনে হয়—সবকিছু থমকে আছে। অথচ সেই নীরবতার মাঝেই জীবনের এক অন্য দৃশ্য দেখা যায়। বাঁশঝাড়ের পাশে, খালের ধারে কিংবা বাড়ির উঠোনে জ্বলে উঠেছে ছোট ছোট আগুন। আগুন ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে মানুষ—শীতের সকালে একটু উষ্ণতার আশায়।

চরভদ্রাসন উপজেলার এক গ্রামে দেখা গেল কয়েকজন দিনমজুর ভোরের কুয়াশার মধ্যে আগুন পোহাচ্ছেন। খড়, শুকনো পাতা আর ভাঙা বাঁশ জ্বালিয়ে তারা হাত ছেঁকে নিচ্ছেন। এসময় সেলিম শেখ নামে একজন বললেন, “ভোরে কাজের জন্য বের হই। কিন্তু শীত না কাটলে শরীর চলে না।” আগুনের তাপে হাত গরম হলেও চোখেমুখে লুকানো ক্লান্তি স্পষ্ট।

গ্রামের প্রবীণদের জন্য শীত আরও কঠিন। লাঠি হাতে বসে থাকা করিম মাতুব্বর নামে এক বৃদ্ধ আগুনের পাশে চুপচাপ বসে আছেন। তিনি বলেন, “আগে শরীর ভালো ছিল। এখন শীতে হাঁটতেই কষ্ট হয়।” পুরোনো শাল আর মলিন লুঙ্গি তার শীত ঠেকানোর শেষ ভরসা। আগুন নিভে গেলে আবার কাঁপুনি শুরু হবে—এটা তিনি জানেন।

একপাশে শিশুদের দৃশ্য আলাদা। স্কুলে যাওয়ার আগে তারা মায়ের পাশে আগুনের কাছে দাঁড়িয়ে আছে। ছোট হাতগুলো আগুনের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে তারা হাসছে, যেন আগুনটাই তাদের সকালের খেলার সঙ্গী। এক মা বললেন, “শীতের সকালে বাচ্চাদের ঘুম থেকে তুলতেই কষ্ট হয়। ঠান্ডায় অসুখের ভয় থাকে।” তবুও আগুনের পাশে দাঁড়ানো এই মুহূর্তগুলোতেই পরিবারগুলো একটু স্বস্তি খোঁজে।

কৃষকের উঠোনেও আগুন জ্বলে। মাঠে যাওয়ার আগে তারা শরীর গরম করেন। কুয়াশার কারণে অনেক সময় কাজ দেরিতে শুরু হয়। ফলে দৈনিক আয়েও প্রভাব পড়ে। তবুও জীবনের তাগিদে মাঠে নামতেই হয়। শীত এখানে শুধু আবহাওয়া নয়, এটি জীবিকার সঙ্গেও লড়াই।

ফরিদপুরের গ্রামে এই আগুন পোহানো দৃশ্য নতুন নয়। বছরের পর বছর ধরে শীত এলেই এমন ছবি দেখা যায়। আগুন নিভে যায়, মানুষ কাজে চলে যায়, কুয়াশা ধীরে ধীরে সরে। কিন্তু থেকে যায় সেই লড়াইয়ের গল্প—যেখানে সামান্য আগুনই হয়ে ওঠে পুরো সকালের সাহস।

এই আগুন কোনো বিলাসিতা নয়, কোনো উৎসবও নয়। এটি ফরিদপুরের গ্রামের মানুষের টিকে থাকার প্রতীক। শীতের সকালে আগুন পোহানো মানুষগুলো আমাদের মনে করিয়ে দেয়—কঠিন সময়েও মানুষ উষ্ণতা খোঁজে, আশায় বাঁচে, আর প্রতিদিন নতুন করে জীবন শুরু করে।