খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

উপকূলে স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাসে উদ্যোগী হন

সম্পাদকীয়
প্রকাশিত: সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৪:০৬ পিএম
উপকূলে স্বাস্থ্যঝুঁকি হ্রাসে উদ্যোগী হন

আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর,বি)-এর সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে, দেশের সমতল অঞ্চলে গর্ভপাতের হারের তুলনায় উপকূলীয় এলাকায় এটি তিন গুণেরও বেশি। এটি নিঃসন্দেহে উদ্বেগের বিষয়।

গবেষণাটি বলছে, সমতলের ৯ শতাংশের জায়গায় উপকূলীয় অঞ্চলে এ হার ৩৩ দশমিক ১ শতাংশ। গবেষকরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে উপকূলে লবণাক্ততা এবং তাপমাত্রা বেড়েছে আশঙ্কাজনকভাবে। ফল হচ্ছে অস্বাভাবিক গর্ভপাত। দেখা যাচ্ছে, সবকিছু স্বাভাবিক থাকলেও গর্ভধারণের কোনো একসময় গর্ভপাতের মতো দুর্ভাগ্যকে মেনে নিতে হচ্ছে অনেক নারীকে। অথচ গর্ভধারণের সময়ে পরীক্ষায় মেলেনি বিশেষ কোনো সমস্যা বা জটিলতা। এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ত পানি আর তীব্র গরমই দায়ী বলছেন গবেষকরা। এভাবে তাপমাত্রা ও লবণাক্ততার প্রভাবে উপকূলের মানুষ পড়ছে নানা স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে, নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্য। শুধু গর্ভপাত নয়, বাড়ছে কিডনি অকার্যকর হয়ে পড়ার হার। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, হিট স্ট্রোক, হিট ওয়েভ, কলেরা, উচ্চ রক্তচাপ ও শিশুমৃত্যুর মতো সমস্যা। জানা যাচ্ছে, অঞ্চলটিতে ঘরবাড়ির চার-দেয়াল টিনের হওয়ায় বাড়ির ভেতরে তাপমাত্রা থাকে অনেক বেশি। আবার সামাজিক রীতিনীতির কারণেও নারীরা প্রায় সারা দিন থাকেন ঘরের ভেতরেই। এ অতিরিক্ত গরম শরীরের স্বাভাবিক কার্যপ্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে, বিশেষ করে অন্তঃসত্ত্বাদের ক্ষেত্রে তা আরও বেশি। গবেষকরা বলছেন, পানিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়ায় সুপেয় পানির সংকট ভয়াবহ হয়ে উঠছে। মানুষ বাধ্য হয়ে সেই পানি পান করছে, যা কিডনির কার্যক্ষমতা কমিয়ে দিচ্ছে; বাড়াচ্ছে উচ্চ রক্তচাপ। জলবায়ু পরিবর্তনে জীবনযাত্রা ও খাদ্য নিরাপত্তা পড়ছে হুমকির মুখে। এদিকে জার্মানওয়াচ গ্লোবালের জলবায়ু ঝুঁকি সূচক (সিআরআই-২০২০) অনুযায়ী, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ বিশ্বে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শীর্ষ ১০ দেশের একটি। বিশেষ করে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় উপকূলীয় এলাকার নারী ও শিশুরা পড়ছে সংকটে। জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্তঃসত্ত্বা নারী ও কিশোরীদের স্বাস্থ্যে ভয়াবহ প্রভাব পড়ছে। অতিরিক্ত লবণাক্ত পানি গ্রহণের কারণে জরায়ুর জটিলতা, উচ্চ রক্তচাপ, খিঁচুনি, গর্ভপাত, এমনকি অপরিণত শিশুর জন্মও বাড়ছে।

আমরা জানি, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকায় আমাদের দেশের নাম ওপরের দিকে। অবশ্য আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশের ভূমিকা কম। পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনে শিল্পনির্ভর দেশগুলোর অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণই এ কুপ্রভাবের জন্য প্রধানত দায়ী। এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক ভূমিকা রাখা দরকার ওইসব দেশের। তবে যেহেতু আমরা এর সরাসরি শিকার, তাই এটা আগে আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এর কুপ্রভাব থেকে নিজের রক্ষার উপায় বের করতে হবে। প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, যা এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে নিরাপদ বাসস্থান, খাদ্যাভ্যাস-সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে। একই সঙ্গে অঞ্চলটিতে নিরাপদ পানি সরবরাহ ও সহনশীল আবাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। স্মরণে রাখতে হবে যে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় চারভাগের একভাগ মানুষ উপকূলীয় অঞ্চলের বাসিন্দা। দেশের বিরাটসংখ্যক জনগোষ্ঠীকে ভয়াবহ এক স্বাস্থ্যসংকটের ঝুঁকির মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। রাষ্ট্রের নাগরিক হিসেবে তারা অবশ্যই রাষ্ট্রের তরফ থেকে যথাযথ পদক্ষেপের অধিকার রাখে। আমাদের প্রত্যাশা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্যরক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৩৪ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যাত্রা শুরু হলো একটি নিজস্ব ও সুপরিসর খেলার মাঠের।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা প্রদর্শনের মাধ্যমে নবনির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন মাঠটির আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছে।

এতদিন উপজেলা প্রশাসনের জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানগুলো পরিষদের বাইরে স্থানীয় আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নিজস্ব মাঠে বিজয় দিবস উদযাপিত হলো।

​উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের পুরাতন ভবনের পেছনে বিশাল একখণ্ড নিচু জমি দীর্ঘকাল ধরে পরিত্যক্ত ও অকেঁজো অবস্থায় পড়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক এই স্থানটিকে ভরাট করে একটি আধুনিক মাঠে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় সমাজ সেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। ​ইউএনও’র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন মাঠটি তৈরির দায়িত্ব নেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরহুম আলহাজ্ব আলী আহমেদ মৃধার ছেলে। তুহিন হযরত শাহ্ জালাল মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

​ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস সময় ধরে বিপুল পরিমাণ মাটি ভরাট করে জায়গাটিকে একটি আধুনিক ও সমতল খেলার মাঠে রূপান্তর করেন তুহিন। তার এই নিঃস্বার্থ অবদানের ফলে বর্তমানে মাঠটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক মনোরম স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর এই মাঠেই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

​নতুন মাঠে প্রথম অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাজমিনউর রহমান তুহিন বলেন, ‘তৎকালীন ইউএনও রফিকুল হকের অনুপ্রেরণায় আমরা কাজটি শুরু করি। আজ যখন দেখলাম এই সুন্দর মাঠে জাতি শ্রদ্ধাভরে বিজয় দিবস উদযাপন করছে, তখন মনটা ভরে গেল। এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি স্থায়ী মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।’

​এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বলেন, ‘এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি মাঠের অভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা দূর হলো। সমাজসেবক তুহিনের মতো তরুণরা এগিয়ে এলে সমাজের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।’

​উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সুধীজন মনে করছেন, এই মাঠটি শুধু খেলাধুলা নয়, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশনা দেন। গত শনিবার রাত নয় টায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার অপসারণ করেননি তারা। সেই নির্দেশনা না শুনায় ফেস্টুন অপসারণ করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ অভিযান শুরু করেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সদরপুর বাজার, কৃষ্ণপুর মোড় ও থানার মোড় এলাকায় অপসারণ করেন। এ সময় ভূমি অফিসের কর্মচারী সহ গ্রাম পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ করেন নাই বিধায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপসারণ অভিযান শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড , গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন সদরপুর উপজেলা থেকে ২৪ জন অসহায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোগীকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

এর আগে দুই ধাপে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে সদরপুর উপজেলায় ৩৫ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে চরভদ্রাসন উপজেলায় ২৮ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন (লেন্সসহ) সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

এই পুরো কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও দেখভাল করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল।

জানা গেছে, চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এর আগেও একাধিকবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (ওষুধসহ) এবং ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম খান বাবুল জানান, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।