খুঁজুন
শুক্রবার, ৬ জুন, ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে ফরিদপুরের কুমার নদ

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫০ পিএম
দখল-দূষণে অস্তিত্ব সংকটে ফরিদপুরের কুমার নদ
দখল-দূষণে ফরিদপুর কুমার নদ। এ যেন দেখার কেউ নেই। মাঝে  মাঝে জেলা প্রশাসন এবং শরীতুল্লাহ বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি কুমার নদটি বাঁচানোর চেষ্টা করলেও কেউ শুনেন না কারোর কথা।
কুমার নদের  তীর ঘেঁষে গড়ে উঠেছিল ফরিদপুর শহর। সময়ের বিবর্তনে সেই শহরই এখন নদটিকে প্রতিনিয়ত দূষিত করে চলেছে।
দূষণ আর অবৈধ দখলের কারণে নদটি আগের রূপ হারিয়েছে। নদের বেশকিছু অংশ এতটায় দূষিত হয়েছে যে, দুর্গন্ধে পশু-পাখিরাও পানি পান করতে পারে না।
এদিকে, ফরিদপুর পরিবেশ রক্ষায় কুমার নদের দূষণরোধে এখনই পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে স্থানীয় সচেতন মহল। তা না হলে আর কয়েক বছর পর চেষ্টা করেও কুমার নদকে বাঁচানো সম্ভব হবে না বলেই অভিমত তাদের।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ফরিদপুরের হাজী শরীয়তুল্লা বাজারের সিংহভাগ , বড় বাজারের সব আবর্জনা ফেলা হয় নদের ধারে। পূর্ব পাশে নিউমার্কেট এলাকার মিষ্টি কারখানা ও খাবার হোটেলের সমস্ত বর্জ্য পঁচাবাসি থালা-বাটি ধোয়ার সমস্ত আবর্জনা ফেলা হয় নদের পানিতে। এছাড়া পৌরসভার পানি নিষ্কাশনের ড্রেন নদীতে এসে শেষ হয়েছে। সেই সঙ্গে শহরের বিভিন্ন স্থানের আবর্জনাও নদীর পাশে স্তূপ করে ফেলা হয়েছে। ফলে আবর্জনাগুলো নদীর পানিতে মিশে দুর্গন্ধ সৃষ্টি করছে।
এদিকে, শুধু দূষণই নয়, ফরিদপুর কুমার  নদের দুই তীরবর্তী স্থান দখল হয়ে গড়ে উঠছে বড় বড় দালানকোঠা। তবে প্রশাসন নদটির বিষয়ে যেন একেবারেই উদাসীন।
ফরিদপুর কুমার নদ বাঁচাও আন্দোলন কমিটির নেতা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, নদটির পানি দূষণমুক্ত রাখতে আমরা অনেকবার চেষ্টা করেছি এবং এখনো অব্যাহত আছে। আমরা একাধিকবার বিভিন্ন কর্মসূচি দিয়েছি কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি। শুধু প্রশাসন আশ্বাসের সুর দিয়ে চলেছে দূষণ-দখল মুক্ত হবে কিন্তু বাস্তবে তা পূরণ হয়নি। দিনদিন দূষণ বাড়ছে, একইসঙ্গে বাড়ছে দখল।
তিনি আরও বলেন, পরিবেশ রক্ষা করতে হলে নদী/ নদ বাঁচাতে হবে। তাই প্রশাসন যদি এগিয়ে আসে মাথাভাঙ্গা নদীও বাঁচানো সম্ভব।
নদের তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দা আ. রহিম ইসলাম বলেন, এই নদের পানি আগে সব কাজে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন ময়লা-আবর্জনায় দূষিত হওয়ায় পানি ব্যবহার করা যায় না। নদীতে এখন গোসল করা তো দূরের কথা, পানির দুর্গন্ধের কারণে কাছেই যাওয়া যায় না।
নদের পাড়ের আরেক বাসিন্দা তানিয়া বেগম বলেন, আগে আমরা এই নদের পানি দিয়ে রান্নার কাজ সারতাম। আর এখন তো গোসল করাই যায় না।
আর্বজনা কুমার  নদে ফেলার বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর  পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসক  (ডিডিএলজি) চৌধুরী রওশন ইসলাম বলেন, আমাদের পৌর শহরের যত ময়লা-আর্বজনা ড্রেনের মাধ্যমে কুৃমার  নদে যায়। আসলে আমাদের এ আবর্জনার জন্য নির্দিষ্ট স্থান না থাকায় এগুলো হয়ে থাকে। তবে এ বিষয়ে আলোচনা চলছে। আমরা পৌর শহরের আর্বজনা ও ড্রেনের ময়লা পানি যেন কুমার নদে না যায় সেজন্য ড্রেনের মুখে নেট দেবো। এতে কিছুটা হলেও পানি দূষণ থেকে বাচাঁতে পারবো।
নদী সংরক্ষণের বিষয়ে জানতে চাইলে ফরিদপুর  পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, নানাভাবে এখন কুমার নদের পানি দূষণ হচ্ছে। একইসঙ্গে দখলও হচ্ছে। এ নদ আর আগের মতো নেই। এজন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। যতটুকু সম্ভব আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। তারপরও সবাইকে সচেতন হতে হবে। তাহলেই কেবল নদটি আগের রূপে ফিরে আসা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, ফরিদপুর কুমার নদটি প্রমত্তা পদ্মার ফরিদপুর জেলার প্রধান শাখা নদ। এই নদটি বৃহত্তর ফরিদপুরের ৫ জেলাকেই  ঘিরে আছে।
২০ বছর আগেও ফরিদপুর জেলা থেকে বহত্তর জেলা নৌকায় করে ব্যবসা বাণিজ্য চলতো হরদম। ৪০ বছর আগে এই নদ দিয়ে রীতিমত লঞ্চ চলাচল করতো। ফরিদপুর-গোপালগঞ্জ, টেকেরহাট, মুকসুদপুর, কাশিয়ানি, মাদারীপুর, ডাসা, ডাম্যুইডা,নশরীয়তপুরের সাথেও ছিল নৌকা, ছোট ছোট লঞ্চ চলাচলের জনাকীর্ণ অবস্থা। আজ সেই যৌবন ভরা ও ব্যবসাবান্ধব নদটির দীর্ঘ ২ শত কিলোমিটার নদ আজ দখলও ভরাট হয়ে কালের স্বাক্ষী হতে চলছে। জরুরি ভিত্তিতে সরকারি  হস্তক্ষেপ চান বৃহত্তর ফরিদপুরের মানুষ।

ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:২৪ পিএম
ফরিদপুরে বেহাল মহাসড়কে ঈদ যাত্রায় ভোগান্তি, ডাকাতির শঙ্কা

 

 

ভাঙ্গা উপজেলা থেকে ফরিদপুর জেলা সদর পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য খানাখন্দের সৃষ্টি হওয়ায় এবারের ঈদ যাত্রায় ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঘর মুখো মানুষকে।

একদিকে খানাখন্দে ভরপুর সড়ক দিয়ে চলাচলে প্রায়শ ভেঙ্গে যাচ্ছে যানবাহনের যন্ত্রপাতি, অন্যদিকে ওই সড়ক অতিক্রমে ভোগান্তির পাশাপাশি ধীর গতির কারণে যথাসময়ে গন্তব্যে পৌছাতে না পারাসহ রাতে ছিনতাই ও ডাকাতির শংকা রয়েছে ঘরমুখো যাত্রীদের মাঝে। যদিও ফরিদপুরের পুলিশ সুপার বলছেন, ঘরমুখো যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই অংশে রাতের বেলায় পুলিশ টহল বাড়ানো হয়েছে। তাই শংকিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।

বরিশাল-ফরিদপুর মহাসড়কের ভাঙ্গা উপজেলা এক্সপ্রেসওয়ের শেষ প্রান্ত থেকে ফরিদপুরের দুরত্ব ৩০ কিলোমিটার, যা দীর্ঘদিন প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাবে খানাখন্দে ভরে গেছে। গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে বেড়েছে খানা-খন্দের পরিমান।

এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে ওই সড়ক ব্যবহার করে যাতায়াত করা ফরিদপুরসহ অন্তত ১০ জেলার মানুষ। ফরিদপুরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের কর্মকর্তাদের এই সড়কটির ব্যাপারে উদাসীনতাকে দায়ি করছে এই সড়কে যাতায়াতকারীরা।

ওই সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহন চালক ও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খানাখন্দের কারণে প্রায়শ গাড়ীর যন্তপাতি ভেঙ্গে যাচ্ছে। এছাড়া ধীর গতিতে যানবাহন চালাতে হচ্ছে, ফলে নির্ধারিত সময়ে গন্তব্যে পেছানো যাচ্ছেনা। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তারা।

এই সড়ক দিয়ে ঢাকাগামী মাইক্রোচালক আবুল হোসেন বলেন, এয়ারপোর্টে যাচ্ছি যাচ্ছি আনতে ভাঙ্গা থেকে ফরিদপুর পর্যন্ত সড়কের যে অবস্থা তাতে গাড়ির গতিসিমা সর্বোচ্চ ১৫ বেশি চালানো যায় না। মহাসড়কের গতি যদি এরকম হয় সে ক্ষেত্রে ডাকাতি সহ নানা পদের ঝামেলার আশঙ্কা থাকে।

এদিকে গাড়ী নষ্ট হওয়া ও ধীর গতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘরমুখো মানুষেরাও। এছাড়া রাতে ধীর গতির কারণে ছিনতাই বা ডাকাতির মতো ঘটনার শংকাও রয়েছে তাদের মধ্যে। সড়কটি দ্রুত সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবী তাদের।

যদিও ছিনতাই ও ডাকাতির বিষয়টি মাথায় রেখে ওই অংশে পুলিশ টহল বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আব্দুল জলিল।

তিনি জানান, ৩০ কিলোমিটার মহাসড়ককে চারটি ভাগে ভাগ করে পুলিশ টহলের ব্যবস্থা করা হযেছে। কোনো ধরনের সমস্যা বা সন্দেহ হলে দ্রুত পুলিশকে জানানোর আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি। এদিকে জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুর রহমান জানিয়েছে, আপাতত চলাচল কিছুটা স্বাভাবিক করতে সড়কটির সংস্কার কাজ চলমান রয়েছে।

‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’– এ্যাড. বুলু

এহসানুল হক, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ৬:১৪ পিএম
‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’– এ্যাড. বুলু

‘জিয়াউর রহমান ছিলেন বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা’ বলে মন্তব্য করেছেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাড. লিয়াকত আলী খান বুলু।

ফরিদপুরের নগরকান্দায় জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।  এসময় লিয়াকত আলী খান বুলু জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে বিস্তর আলোচনা করেন।

বুধবার (৪ জুন) নগরকান্দা পৌর বিএনপির সভাপতি আসাদুজ্জামান আসাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ।

 

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রফিকুজ্জামান অনু, উপজেলা ওলামা দলের সভাপতি মাওলানা দেলোয়ার হোসেন ঝিলু, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি মো. বিল্লাল হোসেন মোল্লা, পৌর ছাত্রদলের সভাপতি মহিদ বিল আল মাহিম প্রমুখ।

আলোচনাসভা শেষে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি করেন তাঁরা।

ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে লিয়াকত মোল্যা (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাদিরদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সংকোচ খালী এলাকার তিন ব্যবসায়ী কয়েকটি গরু বোঝাইকৃত ট্রাক নিয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিলেন। তারা মহম্মদপুর-বোয়ালমারী উপজেলার সীমান্ত ব্রীজ পার হয়ে ফরিদপুর জেলার কাদিরদী বাজার এলাকায় পৌঁছালে পিকআপ থেকে গরু লাফ দিলে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা লিয়াকত মোল্যাসহ দুই ব্যবসায়ী আহত হয়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অপর ব্যবসায়ী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান, মাগুরা সদর থেকে গরু বোঝাইকৃত পিকআপটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিল। গরুর গাড়িটি কাদিরদী বাজারে আসলেই একটি গরু লাফ দিলে গাড়ীটি উল্টে ব্যবসায়ীরা চাপা পড়ে। সেখান থেকে আহত দুইজনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি লিয়াকত নামে ব্যবসায়ী মারা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো অবগত নই। এমনকি ঘটনাটি আমাদের কেউ জানায়নি।