খুঁজুন
মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮ আশ্বিন, ১৪৩২

ফরিদপুরে লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষীরা, ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ

মফিজুর রহমান শিপন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৪ জুন, ২০২৫, ১:৪০ পিএম
ফরিদপুরে লোকসানের মুখে পেঁয়াজ চাষীরা, ন্যায্য মূল্য না পেয়ে হতাশ

দেশের পেঁয়াজ উৎপাদরে দ্বিতীয় বৃহত্তর জেলা ফরিদপুর। এ জেলার চাষীরা বর্তমান পেঁয়াজের দরে লোকসানের মুখে পড়েছে। ফরিদপুরের বড় বড় বাজার গুলোতে পেঁয়াজের দর ১৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। চাষীদের দাবি, ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা বিক্রি করতে পারলে তাদের লোকসানে পড়তে হতো না।

সরেজমিনে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার ঠেনঠেনিয়ার পেঁয়াজ বাজারে গিয়ে দেখা যায়- প্রকার ভেদে এই বাজারের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে পনেরশো থেকে সর্বোচ্চ ১৭০০ টাকায় মন প্রতি। বর্তমানে পেঁয়াজের দরের এমন চিত্র জেলা শহর ও আশে-পাশের বাজার গুলোতেও।

 

সালথার ঠেনঠেনিয়া পেঁয়াজের এই বাজারে সকাল ছয়টা থেকেই পেঁয়াজ চাষীরা কেউ ভ্যান যোগে, কেউ নসিমন, কেউ অটো, কেউবা বস্তা মাথায় করে, আবার কেউ ধামায় (ঝুড়ি) করে বাজারে তুলছে পেঁয়াজ। সেখানে স্থানীয় ব্যবসায়ীর পাশাপাশি দেশের দুর্দান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ীরাও বিক্রেতার কাছ থেকে দরদাম করে পেঁয়াজ সংগ্রহ করছে। ঠেনঠেনিয়া এই বাজারটি চলে দুপুর পর্যন্ত। সপ্তাহে রবি ও বুধবার বসে পেঁয়াজের হাট। প্রতি হাটে পেঁয়াজের দুই শতাধিক বড় ব্যবসায়ী আড়াইশো থেকে ৩০০ টন পেঁয়াজ ক্রয় করে দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহরে নিয়ে যায়।

সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম খান সোহাগ বলেন, ঠেনঠেনিয়া বাজারের প্রতি হাটে কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ ক্রয় বিক্রয় হয় । ঢাকা, চট্রগ্রাম, রবিশালসহ বেশ কয়েকটি বিভাগীয় শহরের পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা এখানে পেঁয়াজ কিনতে আসেন । যোগযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় সহজেই কৃষি পণ্যটি ক্রয় করে নিয়ে যেতে পারেন তারা।

এ দিকে পেঁয়াজ চাষীরা জানিয়েছেন, পেঁয়াজ উৎপাদনে তুলনামূলকভাবে ব্যয় বেড়েছে, কিন্তু সেই হারে দর বাড়েনি। এ মৌসুমে পেঁয়াজের আবাদও বেশি হয়েছে।

কথা হয় বাজারের পেঁয়াজ চাষী নিজাম উদ্দিন শেখ, আলমগির মোল্লা, ঈব্রাহিম মাতুব্বর, নিছার উদ্দিন খানের সঙ্গে । তারা সকলেই জানান, পেঁয়াজ যখন ঘরে তুলি সেই সময় দাম হাজারের কম ছিল। একটু ভাল দরের আশায় এতোদিন ঘরে সংগ্রহ করে রেখে ছিলাম । কিন্তু এখন যে দর বাজারে আছে তাতে পুঁজি টিকানো কষ্ট । তার ওপর আবার এতো দিনে পেঁয়াজের ঘাটতি হয়েছে ।

এই চাষীরা দাবি করেন, বাজারের আমরা যাদি দুই হাজার থেকে ২২শ টাকায় দর পেতাম তাহলে লোকসানে পড়তে হতো না।

এদিকে পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বললেন, ফরিদপুরের যতগুলো পেঁয়াজের বাজার রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম সালথার ঠেনঠেনিয়ার বাজারটি। ঈদের পরেই হঠাৎ করে পেঁয়াজের সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় দর কিছুটা কমেছে বলে তাদের ধারণা।

পেঁয়াজ ব্যবসায়ী খোরশেদ মোল্লা জানান, এ বাজার থেকে প্রতি হাটে ৩০ থেকে ৪০ ট্রাক পেঁয়াজ দেশের বিভিন্ন জেলায় যায়। গড়ে এক কোটি টাকার বেশি পেঁয়াজ প্রতি হাটে ক্রয় বিক্রয় হয় ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহেদুজ্জামান বলেন, জেলার তিন প্রকারের পেঁয়াজের আবাদ হয়। এর মধ্যে শীতকালীন মুড়িকাটা পেঁয়াজ, হালি পেঁয়াজ এবং দানা পেঁয়াজ । এ তিন ধরনের পেঁয়াজের মধ্যে হালি পেঁয়াজ বেশি আবাদ হয় । এই মৌসুমে ফরিদপুরে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজের আবাদ হয়। এ বারের উৎপাদনের হারও বেশ ভাল বলে জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

ফরিদপুরে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩:৩২ পিএম
ফরিদপুরে হত্যা মামলার আসামি গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে রাজবাড়ীর আলোচিত আমজাদ খান হত্যা মামলার মো. সুজন মন্ডল (২৯) নামের এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১০)।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর র‌্যাব-১০ এর দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ফরিদপুর শহরের জোবয়দা ফিলিং স্টেশন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া সুজন মন্ডল রাজবাড়ী সদরের মুকিদহ এলাকার মো. মকিম মন্ডলের ছেলে।

ফরিদপুর র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘র‌্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় একটি হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি সুজন মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

প্রসঙ্গ, গত ২৩ জুলাই সন্ধ্যায় পূর্ব বিরোধের জের ধরে রাজবাড়ী সদরের মুচিদহ এলাকায় বসতবাড়ীতে ঢুকে মো. আমজাদ খান নামে এক ব্যক্তিকে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার একদিন পর নিহতের ভাই বাদী হয়ে রাজবাড়ী সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ২:৫১ পিএম
ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সজিব খন্দকার (৩৬) নামে এক পলাতক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।

মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ফরিদপুর র‌্যাব-১০ এর দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮ টার দিকে ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা মাস্টার কলোনী এলাকা থেকে ওই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার হওয়া সজিব খন্দকার ফরিদপুরের কোতয়ালী থানাধীন বঙ্গেরস্বরদী এলাকার সালাম খন্দকারের ছেলে।

ফরিদপুর-১০, সিপিসি-৩ এর কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব-১০ ও সেনাবাহিনী এর যৌথ আভিযানে সজিব খন্দকারকে গ্রেপ্তার করা হয়। সে একটি মাদক মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামি। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় আরও ৪টি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সজীব দীর্ঘদিন যাবৎ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে ছিল। গ্রেপ্তারের পর তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

কদর বাড়ছে পাটকাঠির, ফরিদপুরে ৫০০ কোটি টাকা ব্যবসার সম্ভাবনা

হাসানউজ্জামান, ফরিদপুর
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ১:০৪ পিএম
কদর বাড়ছে পাটকাঠির, ফরিদপুরে ৫০০ কোটি টাকা ব্যবসার সম্ভাবনা

সোনালি আঁশে খ্যাতির শীর্ষে রয়েছে ফরিদপুর। এ জেলার ব্র্যান্ডিং পণ্য পাট। আর এই পাটের কোনো কিছুই এখন আর ফেলনা নয়। এক সময়ে অবহেলা-অনাদরে থাকা পাটকাঠির বেড়েছে কদর। শুধু রান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া, পানের বরজের ছাউনি তৈরিতে ব্যবহৃত হতো পাটকাঠি। বর্তমানে বিশ্ববাজারে ব্যাপক চাহিদা থাকায় এই পাটকাঠির এখন দামি পণ্য। এখন এই কাঠি দিয়ে তৈরি হচ্ছে চারকোল পাউডার, বোর্ড, কালিসহ নানা কিছু।

ফরিদপুরের জেলায় এবার পাটের ভালো ফলন হয়েছে। পাট উৎপাদনে যে হারে খরচ বেড়েছে, ঠিক সেভাবে বাড়েনি বাজার দর। তাইতো এ মৌসুমে সোনালি কাঠিতে সেই ক্ষতির কিছুটা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন কৃষকরা। জেলার সর্বত্র এখন চলছে পাটকাঠির পরিচর্যা ও ক্রয়-বিক্রয়ের কাজ। এখন পাট কাঠির বহুমুখী ব্যবহার বেড়েছে পাটের পাশাপাশি পাটকাঠির ও সমান গুরুত্ব পাচ্ছে। পাটকাঠির অর্থনৈতিক মূল্যও অনেক। গত কয়েক বছর আগেও পাট কাঠির তেমন চাহিদা ছিলো না, কিন্তু এখন এর চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে ব্যবসায়ীরা এ জেলায় এসে কাঠি কিনে নিচ্ছেন, কৃষক দামও পাচ্ছেন বেশ। ঘুরে যাচ্ছে জেলার পাট চাষিদের জীবন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাটকাঠির ছাই কার্বন পেপার, কম্পিউটার প্রিন্টার ও ফটোকপি মেশিনের কালি, আতশবাজি ও ফেসওয়াশের উপকরণ, মোবাইলের ব্যাটারি, প্রসাধনী পণ্য, এয়ারকুলার, পানির ফিল্টার, বিষ ধ্বংসকারী ওষুধ, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, দাঁত পরিষ্কারের ওষুধ ও ক্ষেতের সার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। যে কারণে প্রতিনিয়ত পাটকাঠির চাহিদা দেশের পাশাপাশি বাড়ছে বিশ্ব বাজারেও।

জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী পাট উৎপাদন উপজেলা সালথা ও নগরকান্দা। গতকাল শনিবার সরেজমিনে উপজেলার দুটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বাড়ির সামনে, পাকা সড়ক কিংবা মাঠ-ঘাট যেখানে চোখ যায় সেখানেই চোখে পড়ে পাটকাঠি শুকানো ও রক্ষণাবেক্ষণের কাজ। একশ মুঠা (এক মুঠো) বা আঁটি পাট কাঠি বিক্রয় হচ্ছে প্রকারভেদে ৮০০ থেকে ১২০০ টাকায়। ফরিদপুরে এক হেক্টর জমিতে উৎপাদিত পাট থেকে গড়ে ১৫ হাজার টাকার কাঠি বের হচ্ছে।

পাট চাষিরা জানালেন, পাটের যে বর্তমান বাজারমূল্য তাতে খুব একটা লাভের মুখ দেখতে পাচ্ছেন না তারা, তবে তুলনামূলকভাবে পাটকাঠির মূল্য আগের চেয়ে অনেক বেশি। পাট বিক্রয় করে খুব বেশি লাভবান না হলেও পাটের কাঠিতে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন চাষিরা।

স্থানীয়রা জানায়, আগে পাটকাঠির ব্যবহার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ছিল শুধু জ্বালানি হিসেবে। আর কিছু ভালো মানের পাটকাঠি পানের বরজের আর ঘরের বেড়া তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। কিন্তু এখন আর মূল্যহীনভাবে পড়ে থাকে না পাটকাঠি। বিশ্ববাজারে পাটকাঠির চাহিদা বাড়ায় আঁশের পাশাপাশি কাঠির দামও ভালো পাওয়া যায়।

নগরকান্দা উপজেলার সাকপালদিয়া গ্রামের কৃষক জীবন কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘আমার ক্ষেতের পাট খড়ি (পাট কাঠি) তিন রকম বিক্রি হইছে, যেটা লম্বা ও শক্ত-সেটা পেয়েছি ২০০০ টাকা ১০০ মুঠা, মাঝারিটা পেয়েছি ১০০ মুঠায় ১২০০ টাকা, আর যেইগুলো নরম ও খাটো সেগুলো পেয়েছি ৮০০ টাকা।’

একই গ্রামের পাট চাষি কলিম শেখ বলেন, পাটখড়ি শুকিয়ে এখন আমরা স্তুপ করে রেখেছি, প্রতিদিনই কিনতে মহাজনরা লোক পাঠাচ্ছে, দামে পোষালেই ছেড়ে দিব।

সালথা উপজেলার রসুলপুর গ্রামের কৃষাণী জোবেদা খাতুন নিজের হাতেই পাট ছাড়িয়ে পাটকাঠি রোদে দিয়ে শুকিয়েছেন। ১০০ মুঠা ১৬০০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন বলে জানান তিনি।

একই গ্রামের আরেক কৃষাণী মজিরন নেসা জানালেন, ওই গ্রামের বেশিরভাগ নারী পাটের আঁশ ছাড়ানো থেকে শুরু করে পাটখড়ি শুকানোর কাজ করেন, যারা পাট আবাদ করেন সেই পরিবারের নারীরাও এই কাজ করেন। আর যাদের জমি নেই- সেই পরিবারের নারীরা শ্রমিক হিসেবে পাটখড়ি শুকানো ও পালা দেওয়ার কাজ করে থাকেন। পাট বাজারে চলে যাবার পর পাটকাঠি শুকানো ও স্তুপ করার কাজ কাজ করে ওই গ্রামের অনেক নারী বাড়তি আয় করছেন।

রসুলপুর গ্রামের পাট কাঠি ব্যবসায়ী সামাদ মাতুব্বর বলেন, ‘বিগত দিনে আমরা রান্নার জ্বালানি হিসেবে, বাড়িঘর ও সবজি ক্ষেতের বেড়া, মাচা, পান বরজ তৈরিতে ব্যবহার হওয়া পাটকাঠি এখন আমাদের আশার আলো দেখাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে এই পাট কাঠি থেকে আয় ভালো হচ্ছে। বড় বড় কোম্পানির এজেন্ট, ব্যবসায়ীরা এসে গ্রাম থেকে এটি কিনে নিয়ে যাচ্ছে। এতে আমাদের এলাকায় পাটকাঠির চাহিদা বেড়েছে।’

সাতক্ষীরা এলাকা থেকে আসা পাটকাঠি ব্যবসায়ী মোস্তফা শেখ জানান, তিনি ৭ বছর ধরে পাটকাঠির ব্যবসা করছেন। আগে ফরিদপুরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাটকাঠি কম দামে কিনে বেশি দামে বিক্রি করতেন । কিন্তু বর্তমানে জেলায় অর্ধশতাধিক কার্বন ফ্যাক্টরি গড়ে উঠেছে। এজন্য ফরিদপুর অঞ্চলের পাটকাঠি দিয়ে এসব ফ্যাক্টরির চাহিদা মেটানোই কষ্টসাধ্য। তাই তারা আর আগের মতো পাটকাঠি কিনতে পারেন না। কারণ, বর্তমানে পাটকাঠির দাম ও চাহিদা দুটোই বেশি। অনেকেই এখন পাটকাঠির ব্যবসা করে জীবকা নির্বাহ করছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ফরিদপুর জেলায় চলতি মৌসুমে ৮৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। এর থেকে ৪ লাখ মেট্রিক টন পাটের রুপালি কাঠি উৎপাদন হবে, যার বাজার মূল্য ৫০০ কোটি টাকার বেশি হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শাহাদউজ্জামান বলেন, ‘ফরিদপুর দেশের সর্ববৃহৎ পাট উৎপন্নকারী জেলা। এ জেলায় ৫৩১ হেক্টর জমিতে পাট চাষ হয়েছে এবার। পাট কাটার মৌসুম শেষ, এখন পাটকাঠি নিয়ে ব্যস্ত কৃষক। ফরিদপুর জেলা থেকে ৪ লাখ মেট্রিক টন পাটকাঠি এবার উৎপন্ন হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। বিভিন্ন পারটেক্স কোম্পানি এবং বেশ কিছু কারখানার রয়েছে- যারা পাটকাঠি পুড়িয়ে কার্বন উৎপন্ন করে চীনে রপ্তানি করে, তারাই কৃষকের কাছ থেকে পাটকাঠি কিনে নেয়। প্রিন্টের কালি এবং কসমেটিকস তৈরির কাজেও কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত হয় পাঠকাঠি। পাটকাঠি রপ্তানি বাজার আরও সম্প্রসারিত করার উদ্যোগ নিয়েছি; যাতে করে কৃষক আরও বেশি পাট চাষে উদ্বুদ্ধ হয়।