খুঁজুন
রবিবার, ২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৭ কার্তিক, ১৪৩২

সালথায় অভিযানের পর নদ-নদী ছেড়ে তিন ফসলি জমিতে মাটিখেকোদের হানা 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫, ৭:৩৫ পিএম
সালথায় অভিযানের পর নদ-নদী ছেড়ে তিন ফসলি জমিতে মাটিখেকোদের হানা 

ফরিদপুরের সালথায় প্রশাসনিক অভিযানের পর নদ-নদীতে বালু উত্তোলন বন্ধ হলেও এখন তিন ফসলি জমিকে টার্গেট করেছে মাটিখেকোরা। বর্ষা মৌসুমকে টার্গেট করে উপজেলার সর্বত্রই তিন ফসলি নিচু জমির জলাশয়ে অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলনের ভয়াবহ তৎপরতা বেড়েছে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও ফসলি জমিতে সমৃদ্ধ এই উপজেলায় প্রভাবশালী বালু ব্যবসায়ীরা দিনের পর দিন ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার ফলে ভেঙে পড়ছে আশপাশের কৃষিজমি।

অন্যদিকে ড্রেজারের বিকট শব্দে শিশু ও বৃদ্ধদের স্বাভাবিক জীবনযাপনও ব্যাহত হচ্ছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চলা এই অবৈধ ড্রেজিং কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের কুষ্টিয়ার চকে ফসলি জমির জলাশয়ে স্থানীয় দেলোয়ার হোসেন নামে এক মাটি ব্যবসায়ী বড় একটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে বালু উত্তোলন করছে। পাশেই রিয়াজ হোসেন নামে আরেক বালু ব্যবসায়ী একটি ড্রেজার স্থাপন করতে দেখা গেছে।

এ ছাড়া উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের ভাবুকদিয়া বিলের ফসলি জমিতে মিজান নামে এক মাটি ব্যবাসায়ী ও আগুলদিয়া দীঘের বিলে ফসলি জমিতে মাহমুদ নামে আরেক মাটি ব্যবসায়ী ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। তাছাড়াও উপজেলার বিভিন্নস্থানে তিন ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের খবর পাওয়া গেছে।

জানা যায়, উপজেলার মধ্যে দেলোয়ার, মিজান ও মাহমুদসহ একাধিক চিহ্নিত মাটি ও বালু ব্যবসায়ী রয়েছে। এটাই তাদের পেশা। তারা নদ-নদী, খাল-বিল ও তিন ফসলি জমি থেকে মাটি ও বালু উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকে। তাদের ভয়াল থাবার শিকার হয় নিরিহ সাধারণ কৃষক। স্থানীয় কৃষকরা জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকায় জমির অংশ ভেঙে যাচ্ছে। ফলে তাদের ফসল চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

আটঘর ইউনিয়নের কৃষক জব্বার মোল্যা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার দাদা-পরদাদার আমলের কৃষিজমি এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে। কিছু বললে হুমকি দেওয়া হয়। আমরা অসহায়। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে দ্রুত এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ ও দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

বালু ও মাটি ব্যবসায়ী মাহমুদ, মিজান ও দেলোয়ার বলেন, আমরা সকলকে ম্যানেজ করেই মাটি ব্যবসা করি। এতে কৃষিজমির ক্ষতি হলেও আমাদের কিছু করার নেই। কারণ জমির মালিকরা যদি না বুঝে, তাহলে আমাদের কি করার আছে। জমির মালিকরা তো আমাদের কাছে মাটি বিক্রি করে। আমরা এই মাটি ইট ভাটাসহ বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করি।

সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান বালী বলেন, তিন ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। যেহুত অভিযোগ আসছে, তাই দ্রুতই অভিযান পরিচালনা করা হবে।

উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন উপজেলার মধ্যেদিয়ে বয়ে যাওয়া বিভিন্ন নদ-নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করে আসছিল। পরে নদ-নদী থেকে বালু উত্তোলনের সংবাদ গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরপর থেকে মাটিখেকোরা তিন ফসলি জমি ধ্বংসে মেতে উঠেছে।

‘নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে’ — খেলাফত আন্দোলন মহাসচিব

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ৩:১৫ পিএম
‘নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে’   — খেলাফত আন্দোলন মহাসচিব

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী বলেন, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে জনগণের মতামতই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাই নভেম্বরের মধ্যেই দেশে গণভোট দিতে হবে। এতে জাতীয় ঐক্য ও গণতান্ত্রিক চর্চাকে শক্তিশালী করবে।

শনিবার (০১ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুরের সালথায় দলটির ফরিদপুর-২ (নগরকান্দা-সালথা) আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বকুল মিয়ার সাথে নির্বাচনী মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী বলেন, ‘যুগোপযোগী একটি ইসলামিক আন্দোলন গড়ে তুলতে আমরা একাধিক ইসলামি দল ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। দেশের অবস্থা অনুকূল হলে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে আমরা আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এর আগে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যোগারদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্রীড়া শিক্ষক মোহাম্মদ ইব্রাহিম হোসেনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান মাওলানা ইউসুফ সাদিক হাক্কানী। পরে কবর জিয়ারত করেন। এ সময় তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।

ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাই, ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ১ নভেম্বর, ২০২৫, ২:৪৮ পিএম
ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাই, ২ ছিনতাইকারী গ্রেপ্তার

ফরিদপুরে দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে মঞ্জু রানী দাস (৩৬) নামের এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের চাঞ্চল্যকর ঘটনার মূল হোতাসহ তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব-১০।

শনিবার (০১ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে সিপিসি-৩ ফরিদপুর ক্যাম্প, র‍্যাব-১০-এ আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা কেরানীগঞ্জের র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান।

এর আগে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যার দিকে ফরিদপুরের সালথা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, প্রধান আসামি মো. শরীফুল ইসলাম ডন শরীফ (৩৮) ও তার সহযোগী মো. রায়হান মোল্লা (২৫)।

শরীফুল ইসলাম ডন শরীফ ফরিদপুরের কোতয়ালী থানার কবিরপুর এলাকার মৃত ফারুক শেখের ছেলে ও রায়হান মোল্লা একই এলাকার আলতাফ মোল্লার ছেলে।

গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে খেলনা পিস্তল, সুইচ গিয়ার, চোরাই মোটরসাইকেল ও ১.৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা কেরানীগঞ্জের র‍্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, সম্প্রতি ফরিদপুরে এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে ওই গৃহবধূর কাছ থেকে স্বর্ণের কানের দুল ছিনিয়ে নেয়। এই চাঞ্চল্যকর ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। র‍্যাব-১০ এর বিশেষ দল অভিযান চালিয়ে এই ঘটনার প্রধান আসামী এবং তার এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।

র‍্যাব জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ডন শরীফের বিরুদ্ধে ডাকাতি, খুন, চুরি ও মাদকসহ ১০টি মামলা রয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে ফরিদপুরের ঝিলটুলি এলাকায় এক স্টাফ নার্স অরুণিমা ভৌমিক হত্যা মামলারও প্রধান আসামি ছিলেন।

মোহাম্মদ কামরুজ্জামান আরও বলেন, অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে র‍্যাবের এই অভিযান চলমান থাকবে। কেউ আইন হাতে তুলে নেওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদেরও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব-১০। গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে। তাদের কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হবে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার (২১ অক্টোবর) সকালে ফরিদপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের উত্তর শোভারামপুর এলাকায় দিনদুপুরে পিস্তল ঠেকিয়ে ওই এলাকার বিষু দাসের স্ত্রী মঞ্জু রানী দাস (৩৬) নামের এক গৃহবধূর কানের দুল ছিনিয়ে নেয় দুই যুবক। ছিনতাইয়ের পুরো ঘটনাটি পাশে থাকা একটি সিসি ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পড়ে এটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

 

চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রাসন:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১০:৫২ পিএম
চরভদ্রাসনে পদ্মার ভাঙনে ৩০ মিটার জিওব্যাগের বাঁধ বিলীন

oplus_0

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের সদর ইউনিয়নের টিলারচর গ্রামে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে পদ্মা নদীর ভাঙ্গন।

গত বুধবার (২৯ অক্টোবর) সকালে এ ভাঙনে ওই এলাকার নদী পাড়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিওব্যাগের ডাম্পিং করা প্রায় ত্রিশ মিটার বাঁধ ও ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।

ভাঙন এলাকা হতে প্রায় ৯০ মিটার দূরে রয়েছে এমপি ডাঙ্গী ও জাকেরেরশুরা হয়ে জেলা শহর ফরিদপুরের যাতায়াতের পাকাসড়ক, শতশত বসত বাড়ি ও সরকারী স্কুল।

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পদ্মা নদীর পানি কমতে থাকা অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে নদী ভাঙন দেখা দেওয়ায় আতঙ্কে রয়েছে নদী পাড়ের মানুষ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে সরজমিনে ভাঙন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, এখানে নদীর তীর রক্ষা স্থায়ী বাঁধের সাথে আপদকালীন সময়ে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা বাঁধের বড় একটা অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়া কয়েকটি অংশের মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।

ভাঙনের বিষয়ে নদী পাড়ের বসতি শেক মেতালেব (৫৩) ও মো. ইমারত হোসেন (২৫) জানায়, বুধবার সকাল থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। কিছু সময় পর পর মাটির বড় বড় অংশ পানির নিচে তলিয়ে যাচ্ছে।

তারা বলেন, দ্রুত ভাঙন রোধে কাজ না করলে বিলীন হয়ে যাবে ফসলি জমি, পাকা সড়ক সহ স্থানীয় শত শত বসত বাড়ি।

ভাঙনের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরা খাতুন বলেন, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার নিকট থেকে ওই এলাকায় নদী ভাঙনের খবর পেয়েছি। জায়গাটি পরিদর্শন করে দ্রুত ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে কথা বলব।

ভাঙনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন বলেন, “ টিলারচর গ্রামের কয়েকটি পয়েন্টে আপদকালীন ভাঙন রোধে বর্ষা মৌসুমে জিওব্যাগের ডাম্পিং করা হয়েছিল। ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া ভাঙন রোধে চরভদ্রাসন উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট মিলে ৩.১৫ কি.মি. জায়গায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের একটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে রয়েছে বলেও জানান পাউবোর এই নির্বাহী প্রকৌশলী।