খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

শেষ হচ্ছে ফরিদপুরের এসডিসি উদ্যোক্তা উন্নয়ন মেলা ২০২৫

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:২৩ এএম
শেষ হচ্ছে ফরিদপুরের এসডিসি উদ্যোক্তা উন্নয়ন মেলা ২০২৫

স্থানীয় নিরাপদ পোল্ট্রি ও সবজি উদ্যোক্তাদের ব্র্যান্ডিং এবং তাদের এগিয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ফরিদপুর শহরতলীর অম্বিকা ময়দানে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত ‘এসডিসি উদ্যোক্তা উন্নয়ন মেলা-২০২৫’ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) রাতে শেষ হতে যাচ্ছে। গত ১১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে এই মেলার উদ্বোধন করা হয়। নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনকে উৎসাহিত করা এবং স্থানীয় উদ্যোক্তাদের বাজার সংযোগ জোরদার করাই ছিল এই মেলার মূল উদ্দেশ্য।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) এর সহযোগিতায় এই মেলার আয়োজক ছিল সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি)।

এসডিসি প্রতিষ্ঠাতা নির্বাহী পরিচালক কাজী আশরাফুল হাসান-এর সভাপতিত্বে মেলার উদ্বোধন করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হাসান-বিন-মুহাম্মাদ আলী।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খামারবাড়ি ফরিদপুরের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. শাহাদুজ্জামান, ফরিদপুর জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ.কে.এম আসজাদ, ফরিদপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সাঈদ আনোয়ার সহ পিকেএসএফ এর মহাব্যবস্থাপক দিলীপ কুমার চক্রবর্তী।

এছাড়াও মেলা চলাকালীন সময়ে অতিথি হিসেবে যোগ দেন পিকেএসএফ-এর উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. আকন্দ মো. রফিকুল ইসলাম, ম্যানেজার (প্রোগ্রাম), নিউট্রিশন স্পেশালিষ্ট, আরএমটিপি কপিল কুমার পাল, এবং সেক্টর ভ্যালু চেইন স্পেশালিষ্ট (হর্টিকালচার) মো. রাফিজুল ইসলাম মন্ডল।

মেলায় মোট ৩৪টি স্টল স্থান পেয়েছিল, যেখানে পোল্ট্রি, গৃহপালিত হাঁস-মুরগি, ভার্মিকম্পোস্ট ও জৈব সার, বিষমুক্ত শাকসবজি, কুটির শিল্প এবং ফাস্টফুডের স্টল সহ বিভিন্ন উদ্যোগ প্রদর্শিত হয়। মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল স্থানীয় পাইকার ও বাজার প্রতিনিধিদের সাথে উদ্যোক্তাদের সরাসরি ক্রেতা-বিক্রেতা সংযোগ তৈরি হওয়া।

মেলায় এক পোল্ট্রি উদ্যোক্তা বলেন, “আমরা যারা নিরাপদ পদ্ধতিতে উৎপাদন করি, তাদের জন্য এই মেলা একটি বড় সুযোগ এনে দিয়েছে। সরাসরি ক্রেতাদের সাথে কথা বলে তাদের আগ্রহ বুঝতে পারছি। একজন উদ্যোক্তা হিসেবে এটি আমাদের পণ্যের ব্র্যান্ডিং এবং ন্যায্য মূল্য পেতে সাহায্য করবে।”

মেলা চলাকালীন ব্যাপক সংখ্যক দর্শনার্থীর ভিড় দেখা যায়। সকাল ও দুপুরে উপস্থিতি কম থাকলেও, বিকেল পেরিয়ে সন্ধ্যা হতে হতেই হাজারো মানুষের ভিড়ে মেলা প্রাঙ্গণ মুখরিত হয়ে ওঠে।

ফরিদপুর শহর থেকে আগত আনোয়ার হোসেন নামের দর্শনার্থী বলেন, “পরিবার নিয়ে এসে দেখলাম বিষমুক্ত সবজি আর দেশি মুরগি। জিনিসগুলোর মান খুবই ভালো মনে হয়েছে। সবচেয়ে বড় কথা, সরাসরি উৎপাদনকারীর কাছ থেকে কিনতে পারলাম। এমন উদ্যোগের ফলে আমরা স্বাস্থ্যকর খাবার কিনতে পারছি। আমরা চাই প্রতি বছরই এমন উন্নয়নমূলক মেলা আয়োজন করা হোক।”

দর্শনার্থীরা আয়োজক কমিটিকে সাধুবাদ জানিয়ে এমন উন্নয়নমূলক মেলা প্রতি বছরই আয়োজনের দাবি করেছেন।

সালথায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৬ পিএম
সালথায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (২৬) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় জড়িত অভিযোগে জাফর মোল্যা (৪২) নামের আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জাফর মোল্যাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকার সাভারের পশ্চিম ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জাফর মোল্যা ফরিদপুরের কোতয়ালী থানাধীন তেঁতুলিয়া এলাকার মৃত কাদের মোল্যার ছেলে।

এদিকে, গত ১৩ ডিসেম্বর এ হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ফিরোজ মাতুব্বর নামের অপর এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব-১০।

র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জাফর মোল্যাকে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাছ ব্যবসায়ী উৎপল হত্যায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে তার নাম এসেছিল। জাফরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।’

প্রসঙ্গ, গত ৫ ডিসেম্বর ভোর রাতে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামের কালীতলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী উৎপল সরকারকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হত্যার একদিন পর উৎপলের বাবা অজয় কুমার সরকার বাদী হয়ে সালথা থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য
কচুলতায় এসেছে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের বার্তা। দেড়শ বিঘা দিগন্তজুড়ে কচুর লতার সফল চাষ মৌলভীবাজার জেলায় সৃষ্টি করেছে নতুন সম্ভাবনা। তুলনামূলক কম খরচ, কম পরিশ্রম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুর লতা চাষে এক ধরনের কৃষি বিপ্লব দেখা যাচ্ছে এ জেলায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা প্রচলিত অনেক ফসলের তুলনায় বেশি আয়ের আশায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিনই লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামে।

গিয়াসনগর এলাকায় দেখা গেছে, পুরো গ্রামজুড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবে লতি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দুই-তিন বিঘা জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে লতি চাষ হলেও বর্তমানে তা ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। শুধু গিয়াসনগর এলাকাতেই মৌসুমে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে লতির চাষ হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু–১ রোপণ করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে তিনি লতি তুলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। মৌসুম যত এগোচ্ছে, দামও বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, তিনি এক কিয়ার জমিতে লতি চাষ করেছেন এবং আরও জমিতে চারা রোপণের পরিকল্পনা করছেন। কৃষক মিলন, কাজিম ও আফাই মিয়াসহ অনেকেই বড় পরিসরে লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় কচুর লতি চাষে সফল হয়েছেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে তার উদ্যোগে লতি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা গ্রামের এংরাজ মিয়া, রোকন মিয়া, আব্দুল মজিদ ও ইউনুস মিয়া বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, গিয়াসনগর গ্রামে লতি এখন একটি সমৃদ্ধ ফসলে পরিণত হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে যেখানে দুই-তিন বিঘা জমিতে লতি চাষ হতো, এখন সেখানে মৌসুমে ১৫০ বিঘা জমিতে লতির আবাদ হচ্ছে। সারা বছর ৫০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে লতি চাষ হয়। লতি অত্যন্ত লাভজনক ফসল এবং এতে রোগবালাই তুলনামূলক কম। গ্রামটি যেন এখন ‘লতার গ্রাম’ হয়ে উঠছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কচুর লতি এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। অল্প খরচে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। লতি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।