খুঁজুন
সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৯ আষাঢ়, ১৪৩২

‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ’

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: রবিবার, ১৫ জুন, ২০২৫, ১১:৪৬ এএম
‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ’

মধ্যপ্রাচ্যের আকাশে আবারও ধ্বংসের ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হইয়া উঠিয়াছে। ইসরাইল ইরানের উপর বিমান হামলা চালাইয়াছে এবং ইরান পালটা প্রতিশোধের হুঁশিয়ারি দিয়াছে। যুদ্ধের নূতন এই পর্ব শুধু ইরান ও ইসরাইলের জন্য নহে, বরং সমগ্র বিশ্বের জন্য এক গা-ছমছমে অশনিসঙ্কেত। ২০০১ সালে টইন টাওয়ার ধ্বংসের পর হইতে বিশ্ব একটি বারের জন্যও স্থির শান্তি দেখিতে পায় নাই। আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া, গাজা, ইয়েমেন, ইউক্রেন-সকল স্থানেই যেন মৃত্যু ও দুর্দশা নিত্যদিনের বাস্তবতা হইয়া উঠিয়াছে। আজকের এই সংঘাত সেই দুঃসহ ধারাবাহিকতারই নির্মম সংযোজন।

ইসরাইলের এই আকস্মিক হামলায় ইরানের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানীসহ বহুজন প্রাণ হারাইয়াছেন। ইরান তাহার আকাশপথ বন্ধ করিয়া দিয়া বলিয়াছে, যুদ্ধ এখন শুধু আশঙ্কা নহে-বরং এক চলমান বাস্তবতা। অনেকেই মনে করিতেছেন, ইরানে এই নূতন হামলা গোটা অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে হুমকির মুখে ঠেলিয়া দিয়াছে। অনেক বিশ্লেষকই প্রশ্ন তুলিয়াছেন, এই যুদ্ধ কি আদৌ পরমাণু অস্ত্র নির্মাণ প্রতিরোধের জন্য? না কি ইহা ভূরাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের এক নির্মম খেলা? এই যুদ্ধে শুধু দুইটি দেশের বিষয় নহে, ইহাতে পরোক্ষভাবে অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হইবে তৃতীয় বিশ্বের অসংখ্য দেশ।

তৃতীয় বিশ্বের দেশসমূহের অবস্থা এমনিতেই নাজুক। ইতিমধ্যেই কোভিড-১৯-এর অভিঘাত, ইউক্রেন যুদ্ধজনিত জ্বালানি মূল্যবৃদ্ধি এবং খাদ্য সরবরাহে বিঘ্ন ইহাদের অর্থনৈতিক ভিত্তিকে নাড়াইয়া দিয়াছিল। এই নূতন সংঘাত তেলের বাজারকে পুনরায় অস্থির করিয়া তুলিবে, বিশ্ববাজারে মূল্যস্ফীতি ঘটাইবে এবং দাতা সংস্থাগুলির মনোযোগ আরো একবার পশ্চিমা কৌশলগত এলাকায় কেন্দ্রীভূত হইবে। আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দারিদ্র্যপীড়িত অঞ্চল তথা উন্নয়নশীল দেশসমূহ নূতন সংকটে পতিত হইবে।

অনেকেই মনে করেন, এই যুদ্ধ শুধু অস্ত্রের নহে, তথ্য ও মতামতেরও যুদ্ধ। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে যুদ্ধের পক্ষে যুক্তি তৈরির চেষ্টা চলিতেছে। ‘প্রতিরক্ষার স্বার্থে’ বা ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’ বলিয়া যাহা ব্যাখ্যা করা হইতেছে, তাহার পিছনে রহিয়াছে ভিন্ন সমীকরণ। সেইখানে রহিয়াছে বাণিজ্যিক স্বার্থ, সামরিক সরঞ্জামের বাজার সম্প্রসারণ এবং ভূরাজনীতিতে একচ্ছত্র আধিপত্য স্থাপনের আকাঙ্ক্ষা। আর এই সকল কিছুর বিনিময়ে জীবন দিতেছে নিরপরাধ শিশু, মা, কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষ কিংবা হাসপাতালের নিরপরাধ রোগী।
যুদ্ধ মানে কেবল মৃত্যুই নহে-জীবনের সম্ভাবনাগুলিকেও হত্যা করে। যুদ্ধ মানে শিক্ষার বন্ধন ছিন্ন হইয়া যাওয়া, শৈশবের স্বাভাবিকতা ধ্বংস হওয়া, কৃষিকাজে বিরতি, শিল্পে মন্দা, স্বাস্থ্য খাতে বিপর্যয়। যুদ্ধ মানে শিশুর চোখে ভয় আর ভবিষ্যৎহীনতা। দুঃখজনক হইলেও সত্য যে, মানবজাতি যুদ্ধ ব্যতিরেকে যেন কিছু শিখিতে চাহে না। ইতিহাস আমাদের শিক্ষা দেয় যে, প্রতিটি যুদ্ধই পরবর্তী যুদ্ধের ভিত্তি রচনা করিয়া যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর গঠিত হইয়াছিল জাতিসংঘ, মানবাধিকার ঘোষণাপত্র, বহু আন্তর্জাতিক আইন ও চুক্তি: কিন্তু সেই আইনগুলিকে থোড়াই কেয়ার করে পরাশক্তির দেশসমূহ।

প্রশ্ন হইল, ইহার শেষ কোথায়? ইরান ও ইসরাইলের সংঘাত কি এক বিশ্বযুদ্ধে রূপ লইবে? না কি সময় থাকিতেই বৃহত্তর মানবিক বিবেক জাগ্রত হইবে? বিশ্বের শান্তিপ্রিয় রাষ্ট্রসমূহ কি কেবল উদ্বেগ প্রকাশ করিয়া ক্ষান্ত থাকিবে, না কি সক্রিয় শান্তিরক্ষা উদ্যোগ গ্রহণ করিবে? জীবনানন্দ দাশ সেই কবে বলিয়া গিয়াছেন, ‘অদ্ভুত আঁধার এক এসেছে এ-পৃথিবীতে আজ।’ হায়! এই আঁধার কবে দূর হইবে?

ফরিদপুরে ‘বস্তায় আদা চাষ’ বিষয়ক মাঠ দিবস

তামিম ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৩:৫৫ পিএম
ফরিদপুরে ‘বস্তায় আদা চাষ’ বিষয়ক মাঠ দিবস

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এবং সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি)-এর আয়োজনে ফরিদপুরের ছনেরটেক গ্রামে ‘বস্তায় আদা চাষ’ বিষয়ক একটি মাঠ দিবস সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

সোমবার (২৩ জুন) ফরিদপুর সদরের এসডিসির নর্থ চ্যানেল শাখার উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ৭৫ জন স্থানীয় কৃষক ও কৃষাণী অংশগ্রহণ করেন।

মাঠ দিবসে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. ওমর আলী। তিনি বস্তায় আদা চাষের আধুনিক কৌশল, এর সুবিধা এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। তিনি বলেন, “বস্তায় আদা চাষ কৃষকদের জন্য একটি লাভজনক ও টেকসই কৃষি পদ্ধতি। এটি সীমিত জায়গায় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি মাটির উর্বরতা রক্ষায়ও সহায়ক।”

অনুষ্ঠানে এসডিসির কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া হাসান বস্তায় আদা চাষের প্রশিক্ষণ পরিচালনা করেন। তিনি কৃষকদের হাতে-কলমে বস্তা প্রস্তুত, বীজ নির্বাচন, সার প্রয়োগ ও রোগবালাই প্রতিরোধের কৌশল শিখিয়েছেন। সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাজিদ আহমেদ এবং নর্থ চ্যানেল শাখার সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক আহম্মেদ শেখও উপস্থিত থেকে কৃষকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।

অংশগ্রহণকারী কৃষকরা এই উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ তাদের জন্য নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করেছে। স্থানীয় কৃষক রহিম মিয়া বলেন, “আমরা আগে জানতাম না যে বস্তায় এভাবে আদা চাষ করা যায়। এখন আমরা এই পদ্ধতি নিজেদের জমিতে প্রয়োগ করব।”

এসডিসির প্রতিনিধিরা জানান, এই মাঠ দিবসের উদ্দেশ্য ছিল কৃষকদের মাঝে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতির প্রসার ঘটানো। ভবিষ্যতেও এ ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে বলে তারা আশ্বাস দেন।

মাঠ দিবসটি স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও আগ্রহ সৃষ্টি করেছে।

ইসরায়েলে টানা বেজে চলছে সাইরেন, একের পর এক শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ৩:৪২ পিএম
ইসরায়েলে টানা বেজে চলছে সাইরেন, একের পর এক শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ

ইসরায়েলে টানা বেজে চলছে সাইরেন। আর একের পর এক শোনা যাচ্ছে বিস্ফোরণের শব্দ। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ইরান থেকে একের পর এক ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।

এর জেরে সেন্ট্রাল ও দক্ষিণ ইসরায়েলের অনেক এলাকায় বিমান হামলার সতর্কতা হিসেবে সাইরেন বেজে উঠেছে। বিশেষ করে আসদোদ ও লাচিস শহরে এবং পশ্চিম জেরুজালেমের কাছাকাছি কয়েকটি জায়গায় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে।

টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, জেরুজালেমে সাইরেন বাজা মাত্রই ইসরায়েলি সংসদ (নেসেট)-এর সদস্যরা দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে চলে যান।

ইসরায়েল ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে সোমবার (২৩ জুন) সাংবাদিকদের রিপোর্ট করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই অনেকে পাশের দেশ জর্ডান থেকে খবর সংগ্রহ করছেন। এসব তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ইসরায়েলে পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে তারা। এর মধ্যে অন্তত ৪টি ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত হেনেছে।

সেখানকার মানুষজন জানিয়েছেন, টানা ৩৫ মিনিট ধরে সাইরেনের আওয়াজ শোনা যায় এবং সেই সঙ্গে প্রবল বিস্ফোরণের শব্দ।

তবে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। কারণ, ইসরায়েলের সেনাবাহিনী কোনো ভিডিও বা তথ্য প্রকাশে কড়া নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। তাই বাইরের দুনিয়া সঠিকভাবে জানতে পারছে না আসলে কী ঘটছে।

গত ১০ দিনে ইরানের হামলায় ইসরায়েল বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে সেন্ট্রাল ইসরায়েলে। তবে হাইফার মতো গুরুত্বপূর্ণ শহরেও বারবার হামলা হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গতকাল ইরান আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ফাঁকি দিয়ে এক হামলা চালায়। সেই সময় কোনো সাইরেন বাজেনি। পরে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী নিশ্চিত করে যে এটি একটি ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র ছিল—এটি ভুল করে ছোড়া নিজের প্রতিরক্ষা ক্ষেপণাস্ত্র ছিল না।

১৩ জুন ইসরায়েল ইরানে একটি বড় ধরনের হামলা চালায়। এতে দেশটির পরমাণু স্থাপনা, সামরিক ঘাঁটি ও আবাসিক এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। মারা যান ৪০০-র বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী এবং সাধারণ নাগরিকও রয়েছেন।

এই হামলার পর ইরান দ্রুত প্রতিক্রিয়ায় নামে। ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস থ্রি’ নামে এক অভিযানের অধীনে ২৩ জুন পর্যন্ত তারা ইসরায়েলের ওপর ২১ দফা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। পরিস্থিতি এখনো উত্তপ্ত।

ফরিদপুরে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে নারিকেল চারা বিতরণ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ২৩ জুন, ২০২৫, ২:৪২ পিএম
ফরিদপুরে বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে নারিকেল চারা বিতরণ

কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় নারিকেলের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ফরিদপুরে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খরিপ-২ মৌসুমে কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে নারিকেল চারা বিতরণ করা হয়েছে।

ফরিদপুর সদর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে সোমবার (২৩ জুন) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে ৩০০ জন কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে উন্নত জাতের ১৫০০টি নারিকেলের চারা বিতরণ করা হয়।

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উদ্বোধন করেন ফরিদপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইসরাত জাহান।

বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. মাসুদ রানা, সদর উপজেলা সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ আমিনুল ইসলাম, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. আব্দুর রব, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলামসহ উপকারভোগীরা।

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আনোয়ার হোসেন তিনি তার স্বাগত বক্তব্যে বলেন, কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরে খরিপ-২ মৌসুমে নারিকেলের আবাদ ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সদর উপজেলার ৩০০ জন কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে ৫ টি করে উন্নত জাতের নারিকেলের চারা বিতরণ করা হয়েছে। এই উদ্যোগের ফলে কৃষকরা যেমন লাভবান হবেন, তেমনি নারিকেল উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।