খুঁজুন
শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ১৫ কার্তিক, ১৪৩২

দেশে হত্যাযজ্ঞ, বিদেশে মব: কোন পথে নিষিদ্ধ আ.লীগ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৩:১৭ পিএম
দেশে হত্যাযজ্ঞ, বিদেশে মব: কোন পথে নিষিদ্ধ আ.লীগ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানকালে প্রায় দেড় হাজার মানুষ হত্যার অভিযোগ কাঁধে নিয়ে গত বছরের ৫ আগস্ট দেশছাড়া হয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব। প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন দলটির প্রধান শেখ হাসিনা।

বিদেশে পালানোর পর কিছুদিন ঘাপটি মেরে থাকলেও আস্তে আস্তে প্রকাশ্যে আসতে থাকেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। শুধু প্রকাশ্যেই আসতে থাকেননি, তারা বিদেশেও আচরণ করতে থাকেন ‘আওয়ামী মহিমায়’। জুলাই অভ্যুত্থানের সংগঠক থেকে শুরু করে সরকারের উপদেষ্টাদের টার্গেট করতে থাকেন অনলাইনে-অফলাইনে।

 

কিছুদিন আগে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও সুইজারল্যান্ডে পৃথকভাবে দুই উপদেষ্টা আসিফ নজরুল ও মাহফুজ আলমকে টার্গেট করে হেনস্তা করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। সবশেষ সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিমানবন্দর থেকে বেরোনোর সময় তাদের হাতে আক্রান্ত হলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপির) সদস্য সচিব ও জুলাই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক আখতার হোসেন। ‘মব’ তৈরি করে ডিম নিক্ষেপ করা হয়েছে আখতারকে। এসময় অশ্লীল ভাষায় আক্রমণ করা হয় এনসিপির আরেক নেত্রী ডা. তাসনিম জারাকেও। রেহাই পাননি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও।

এই প্রেক্ষাপটে দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে প্রশ্ন উঠেছে, আওয়ামী লীগ আসলে কোন পথে হাঁটছে! একদিকে দেশের মাটিতে জুলাই গণহত্যার জন্য তাদের নেত্রী শেখ হাসিনাসহ মন্ত্রী-এমপিদের বিচার চলছে। হত্যাযজ্ঞ, সহিংসতা, উসকানিসহ নানা কারণে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে চলছে দলটির বিচারেরও আলাপ। অন্যদিকে বিদেশের মাটিতে দেশের উপদেষ্টা থেকে শুরু করে রাজনীতিকদের তারা আক্রমণ করছে সংঘবদ্ধভাবে। জুলাই গণহত্যার জন্য কোনো ধরনের অপরাধবোধ বা অনুশোচনার বদলে এই সহিংস ‍রূপে আবির্ভূত হয়ে আওয়ামী লীগ দেশের জনগণের কাছে নিজেদের আরও নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি করছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছে নানা মহলে। বিদেশে নিরাপদে থাকা আওয়ামী লীগের লোকদের আচরণে দেশে থাকা দলটির লোকজন নিরাপত্তা শঙ্কায় ভোগেন কি না, তা নিয়েও দেখা দিয়েছে উদ্বেগ।

রাজনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, শত শত আন্দোলনকারীকে হত্যার পরও এ নিয়ে অনুশোচনা বা অপরাধবোধ না থাকা বিস্ময়কর। যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রিত হয়ে আবার যুক্তরাষ্ট্রেরই বিরুদ্ধে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার ষড়যন্ত্রে অভিযুক্ত করা হাস্যকর। তবে বিদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের এ আগ্রাসী আচরণ সরকারের উপদেষ্টা ও রাজনীতিকদের নাজেহাল করলেও এতে দলটিরই ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। হচ্ছে বাংলাদেশেরও বদনাম।

আর আক্রান্ত নেতাদের সহকর্মী ও রাজনীতিকরা বলছেন, এ ধরনের আচরণকে প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই। সরকারকে সংশ্লিষ্ট দেশের প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে হাঙ্গামায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একইসঙ্গে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৫ বছরের শাসনকালে সংঘটিত যাবতীয় অপরাধের বিচারের মাধ্যমে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

আসিফ নজরুল, মাহফুজ আলমের পর আখতার-জারা
পতিত আওয়ামী লীগের বিদেশে পলাতক নেতা-কর্মীরা, বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকায় ভোগবিলাসী জীবন যাপন করা দলটির অ্যাক্টিভিস্টরা শুরু থেকেই জুলাই অভ্যুত্থানকে চক্রান্ত বলে আসছেন। এমনকি পুলিশের গুলিতে শত শত আন্দোলনকারীর প্রাণহানির ভিডিও অনলাইনে থাকলেও তারা তা নিয়ে কথা বলতে চান না। জুলাইয়ে প্রায় ১৪শ মানুষ হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন, যার সমন্বয়ে শেখ হাসিনা নিজে ছিলেন বলে জাতিসংঘ তদন্ত প্রতিবেদন দিলেও সেটিকে পাতানো বলে আসছেন তাদের নেতা-কর্মীরা। উপরন্তু ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আক্রোশ থেকে তারা অনলাইনে-অফলাইনে গণঅভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তিকে নানাভাবে টার্গেট করছেন। দিচ্ছেন জানমালের ক্ষয়ক্ষতির হুমকিও।

এর মধ্যে গত নভেম্বরে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আওয়ামী লীগের একদল লোকের হাতে হেনস্তার শিকার হন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গভর্নিং বডি এবং সংস্থাটির গুরত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে দেশে ফিরছিলেন। দূতাবাসের প্রটোকলে তিনি গাড়ি করে জেনেভা বিমানবন্দরে পৌঁছান। গাড়ি বিমানবন্দরে নামার পর হাঙ্গামাকারীরা এসে আইন উপদেষ্টাকে ঘিরে ধরে। উপদেষ্টা বিমানবন্দরে প্রবেশের আগ পর্যন্ত হেনস্তাকারী তাকে বিরক্ত করে। সেখানে সুইজারল্যান্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম জমাদার ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল খান উপস্থিত ছিলেন।

এরপর ২৪ আগস্ট যুক্তরাষ্ট্রে আশ্রিত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা টার্গেট করে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা এবং জুলাই অভ্যুত্থানের অন্যতম সংগঠক মাহফুজ আলমকে। সেদিন নিউইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট অফিসে ঢোকার সময় তাকে হেনস্তার চেষ্টা করে তারা। তারা মাহফুজ আলমকে উদ্দেশ করে ডিম ছোড়ে, দেয় বিভিন্ন আগ্রাসী স্লোগান। হাঙ্গামাকারীরা কনস্যুলেট ভবনের কাচের দরজাও ভেঙে ফেলে। এরপর ১৩ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যেও আওয়ামী লীগের টার্গেটে পড়েন মাহফুজ আলম। সেদিন বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে ইউনিভার্সিটি অব লন্ডনের স্কুল অব আফ্রিকান অ‍্যান্ড ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ (সোয়াস) ক্যাম্পাসে জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে এক সেমিনারে অংশগ্রহণ শেষে বের হয়ে যাওয়ার সময় তার ওপর হামলার চেষ্টা করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।

আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকরা সবশেষ ‘মববাজি’ দেখাল নিউইয়র্কে গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় সময় বিকেলে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৮০তম অধিবেশনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী হওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন আক্রান্ত হয়েছেন আওয়ামী লীগের মারমুখী কর্মীদের হাতে। তার পিঠে ডিম নিক্ষেপ করেছে পতিত দলটির লোকজন। এছাড়া সেখানে থাকা বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং এনসিপির নেত্রী ডা. তাসনিম জারাকেও অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে তারা। এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের একজন কর্মীকে আটকও করে নিউইয়র্ক পুলিশ।

দূতাবাসগুলোর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন
বিদেশের মাটিতে এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অভ্যুত্থানের পর আইন অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ও তার নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় তারা এ ধরনের সুযোগ পাচ্ছে। ‘অনভিপ্রেত’ এসব ঘটনা বাংলাদেশের সম্মান ও মর্যাদাকে ভূলণ্ঠিত করবে। ন্যক্কারজনক ঘটনাগুলো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়,

এসব ঘটনায় সংশ্লিষ্ট দেশে দায়িত্বে থাকা দূতাবাসসহ কূটনীতিকদের ভূমিকাও প্রশ্নের মুখে পড়েছে। তবে ভবিষ্যতে এমন পরিস্থিতি এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলছেন সচেতন মহল।

যদিও প্রধান উপদেষ্টার জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদান উপলক্ষে ঢাকায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা এম তৌহিদ হোসেন বলেছিলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার নিউইয়র্ক সফরকে কেন্দ্র করে যে কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকাতে সেখানে পুলিশ প্রস্তুত থাকবে। পশ্চিমের দেশগুলোতে বাধা দেওয়া, স্লোগান দেওয়া, রাস্তায় মিছিল করা, প্রতিবাদ করার রাস্তা আটকানোর কোনো উপায় আমাদের কেন, কারও নেই। সেসব দেশের সরকার এটা করতে দিতে বাধ্য। ’

জাতিসংঘ অধিবেশনে যোগদানকালে আওয়ামী লীগের হামলার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) মেক্সিকোতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের রাজনৈতিক সফরসঙ্গীদের উপর পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের ন্যক্কারজনক হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। নিউইয়র্কের জেএফকে বিমানবন্দরে একজন বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ, জুলাই আন্দোলনের এক বীরসেনানী এবং একজন নারী নেত্রীর ওপর জঙ্গি কায়দায় হামলে পড়া, নিশ্চয়ই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন আমলে নেবে। ’

তিনি বলেন, ‘আমরা জাতি হিসেবে লড়াই করেছি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জন্য, আর আজ এমন সময়ে এসে যদি আমাদের নেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না যায়—তাহলে সেটি কেবল অবহেলা নয়, ইতিহাসের কাছে এক অমার্জনীয় ব্যর্থতা। এই হামলা শুধু ব্যক্তির ওপর নয়, এটি বাংলাদেশের মর্যাদা, আমাদের গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার এবং একটি নতুন পথচলার ওপরও হামলা। ’

রাজনৈতিক নেতারা যা বলছেন
নিউইয়র্কের ঘটনায় দেশজুড়ে আলোচনার ঝড় বইছে। বিশেষ করে বিভিন্ন দলের নেতারা আওয়ামী লীগের উগ্রবাদী আচরণের নিন্দার পাশাপাশি প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারায় দূতাবাসের ভূমিকার সমালোচনা করেন।

এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, ‘জাতিসংঘের অধিবেশনে বাংলাদেশ সরকার আমন্ত্রিত এবং সরকার রাজনীতিকদের প্রতিনিধি দলে অন্তর্ভুক্ত করেছে, তারা সেখানে গিয়েছেন। তাদের প্রতি যে আচরণ করা হয়েছে তা অসৌজন্যমূলক। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের সম্মান এবং মর্যাদাকে ভূলণ্ঠিত করবে এই আচরণ। এটা কোনো অবস্থাতেই ভালো কাজ হতে পারে না, এটা নিন্দনীয়। ’

তিনি বলেন, ‘তারা কারও ব্যাপারে প্রতিবাদ করতে পারে, প্রতিবাদের বিভিন্ন ভাষা আছে। ডিম নিক্ষেপ করতে হবে কেন? অতীতে তো অনেক প্রতিবাদ হয়েছে। ডিম নিক্ষেপ এক ধরনের আক্রমণাত্মক ভূমিকা। আক্রমণাত্মক ভূমিকা রাখা তো ঠিক নয়। আমরা এটাকে নিন্দনীয় কাজ মনে করি। ’

এ ঘটনায় মঙ্গলবার (২৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বাংলামোটরে রূপায়ন টাওয়ারে এনসিপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যে ক্রমাগত হামলা, ষড়যন্ত্র এবং অপতৎপরতা চলমান রয়েছে, তার বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষ থেকে উপর্যুক্ত কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। যখন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর আক্রমণ হয়েছিল, তখনো আমরা বলেছিলাম, গণঅভ্যুত্থানের নেতাদের টার্গেট করা হচ্ছে এবং এই ঘটনাগুলোর সঙ্গে প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা জড়িত। ভেতর থেকে এই তথ্যগুলো লিক (ফাঁস) করা হয়। সরকার ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নিরাপত্তা প্রদানের যে ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল, সেই ব্যবস্থাগুলো যথাযথ ছিল না বলে গতকালের ঘটনাটি ঘটছে। ’

সরকার ও পররাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে জবাবদিহি চেয়ে তিনি বলেন, ‘এটি কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ যে নানা তৎপরতা দেশে-বিদেশে করছে, তারই ধারাবাহিকতা হিসেবে গতকালের ঘটনাটি দেখতে হবে। ফলে সরকারের পক্ষ থেকেও বিচার নিশ্চিত করার যে কথা আমরা বারবার বলে আসছি, সেই জায়গায় দুর্বলতা আছে বলেই আওয়ামী লীগ এত তৎপরতা করার সুযোগ পাচ্ছে। ’

নিউইয়র্কের ঘটনাটি নিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘নিউইয়র্ক বিমানবন্দরে যা ঘটেছে তা আবারও প্রমাণ করল– আওয়ামী লীগ তাদের অন্যায়ের জন্য বিন্দুমাত্র অনুশোচনা করে না। আওয়ামী লীগ আজ পর্যন্ত যা অন্যায় করেছে সবকিছুর বিচার আইনের মাধ্যমে হবে। দল ও দেশের স্বার্থে ধৈর্য ধরুন। ’

নগরকান্দায় জাকের পার্টির জনসভা ও র‍্যালী

নগরকান্দা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:৪০ পিএম
নগরকান্দায় জাকের পার্টির জনসভা ও র‍্যালী

দেশব্যাপী শান্তি ও স্থিতিশীলতার আহ্বানে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাকের পার্টি দলকে সু-সংগঠিত করার লক্ষ্যে এক জনসভা ও র‍্যালীর আয়োজন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুর ১ টার দিকে ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার তালমার মোড়ের আমিন উদ্দিন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে জাকের পার্টির এ জনসভা ও র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

ডা. মো. ফজলুল হকের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে জনসভায় উপস্থিত ছিলেন- জাকের পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা আমীর ফয়সল, বিশেষ অতিথি হিসেবে ভার্চুয়াল মাধ্যমে উপস্থিত ছিলেন জাকের পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ড. সায়েম আমীর ফয়সল, জাকের পার্টির জাতীয় স্থায়ী কমেটির সদস্য ফারাহ্ আমীর ফয়সল, ফরিদপুর সাংগঠনিক বিভাগ ২ এর সভাপতি ডা. মো. ফজলুল হক, সালথা উপজেলার জাকের পার্টির সভাপতি সরোয়ার হোসেন (বাচ্চু) সহ জাকের পার্টি সকল সহযোগী সংগঠনের
নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভাকাঙ্ক্ষী ও দাওয়াতি মেহমানসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান এ সময় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভার্চুয়ালে বক্তব্য রাখেন।

জাকের পার্টির চেয়ারম্যান দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, ‘দেশকে ঢেলে সাজাতে হবে। আর বাংলাদেশকে যদি সোনার বাংলায় রূপান্তর করতে হয় তাহলে প্রতিটি মানুষকে আগে সোনার মানুষে রূপান্তর করতে হবে। কেননা সৎ, জ্ঞানীগুনী মানুষ ছাড়া এদেশের মঙ্গল কামনা সম্ভব না কখনো।জাকের পার্টি বিগত ৩৬ বছর ধরে বিশ্বওলি আদর্শে আদর্শিত হয়ে, সেই পথের পথিক হয়ে জাকের পার্টির প্রতিটি সদস্য আজ সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠেছে। জাকের পার্টির নেতাকর্মীগণ ক্ষমতার লোভ নেই , চাঁদাবাজি করে না, টেন্ডারবাজি করে না, লুট হত্যার সাথে জড়িত নেই।

তিনি বলেন, ক্ষমতা আমাদের কাছে বড় না,দেশ আমাদের কাছে বড়। এজন্য আমাদের ষড়যন্ত্রের পথে যেতে হয় না। জাকের পার্টি একটি আদর্শের নাম, জাকের পার্টি ঐক্যর নাম, জাকের পার্টি জেহাদের নাম, জাকের পার্টি সংগ্রামের নাম।

জাকের পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান এ সময় জাতির উদ্দেশ্য বলেন, জাকের পার্টি প্রতিটি নেতা কর্মী মজলুম,অসহায়, খেটে খাওয়া, গরীব-দুঃখী মানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে, কাজ করে যাবে। এদেশের তরুণ প্রজন্মের মেরুদণ্ড কে খুব সু-পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হচ্ছে,এই ধ্বংসের হাত থেকে জাকের পার্টি মাধ্যমে রক্ষা করতে হবে। কোটি-কোটি মানুষ আজ বুঝতে পেরেছে জাকের পার্টি উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্যের সম্পর্কে। বাংলাদেশে গত ৫৪ বছরে নির্বাচন নামে যে ছলনা, প্রহসন, কেন্দ্র দখল, ক্ষমতা ও পেশিশক্তি প্রয়োগ করা, কালো টাকার ছড়াছড়ি যে রাজনৈতিক ধারা চালু রয়েছে তা যদি সংস্কার করা না হয় তাহলে ২৫ শে আগস্ট এর আগে এবং পরে একই চিত্র অর্থাৎ একই মুদ্রার এপিঠ ওপিঠ। নির্বাচন হবে উৎসবমুখর। জনগণ তার পছন্দের প্রার্থীকে কোনো প্রকার ভয়ভীতি ছাড়া ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিবে।

তিনি বলেন, যদি নির্বাচনে কালো টাকার ছড়াছড়ি, কেন্দ্র দখল, ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে নির্বাচনী প্রবেশ নষ্ট করা হয় তাহলে জাকের পার্টি ৩০০ আসন থেকে এককভাবে নির্বাচন প্রত্যাহার করবে।

জনসভা শেষে তালমার মোড়ে জাকের পার্টি মূল দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীগণ শান্তিপূর্ণ র‍্যালীতে অংশগ্রহণ করেন।

র‍্যালি শেষ করে উপস্থিত সকলের মাঝে তবারক বিতরণ করা হয়।

ফরিদপুরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও টায়ারে আগুন

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:১৯ পিএম
ফরিদপুরে বিএনপির কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ ও টায়ারে আগুন

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে বিএনপির নবগঠিত কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ, গাছের গুঁড়ি ফেলে সড়ক অবরোধ করেছে পদবঞ্চিত একাংশের নেতাকর্মীরা। এ সময় টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করা হয়।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) ফরিদপুরের মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের বোয়ালমারী ওয়াবদা মোড়ে দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ করার কারণে সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

অবরোধকারীদের অভিযোগ, ত্যাগী নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন ও আওয়ামী লীগের পদ-পদবিতে থাকা নেতাকর্মীদের নবগঠিত কমিটিতে স্থান দেওয়া হয়েছে। আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সকল ধরনের সড়ক অবরোধ করা হবে।

এ সময় পৌর সদরের ব্যস্ততম এলাকা ওয়াবদা মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে দুইঘন্টা সড়ক অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। এতে দুই কিলোমিটার এলাকা সড়কগুলোতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

জানা যায়, গত ২৩ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির বোয়ালমারী উপজেলা ও পৌরসভা, আলফাডাঙ্গা উপজেলা ও পৌরসভা এবং মধুখালী উপজেলা ও পৌরসভার ১০১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা ও সদস্য সচিব একেএম কিবরিয়া স্বপন। তবে বুধবার মধুখালী উপজেলা কমিটিতে থাকা দুইজন পদত্যাগ করেছেন।

কমিটিতে বিগত ১৭ বছর হামলা মামলা, জেল-জুলুম সহ্য করা ত্যাগী ও ছাত্রদল, যুবদল থেকে উঠে আসা নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রকারান্তরে কমিটিতে স্থান পেয়েছে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পদ পদবিতে থাকা একাধিক ব্যাক্তি, এমনটাই দাবী করেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।

বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী নেতাকর্মীরা খন্দকার নাসিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত উপজেলা ও পৌর বিএনপির কমিটির তীব্র সমালোচনা করেন। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে যারা বিএনপির দুর্দিনে পাশে থেকে দলকে ধরে রেখেছেন, সেই ত্যাগী নেতাদের উপেক্ষা করে নতুন কমিটিতে চিহ্নিত আওয়ামী লীগ সমর্থকদের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়েছে। এতে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা সৃষ্টি হয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, টাকার বিনিময়ে ত্যাগী নেতাদের বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের চিহ্নিত ব্যক্তিদের পদ দিয়েছেন। অর্থের বিনিময়ে বিএনপিকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। বক্তারা এ সময় পদবঞ্চিত নেতাকর্মীরা নাসিরুল ইসলামের নেতৃত্বে গঠিত কমিটি বাতিল এবং নতুন করে ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের দাবি জানান।

এ সময় বক্তব্য দেন, উপজেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির সদস্য সচিব নাজিম উদ্দিন মিলু মিয়া, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মজিবুর রহমান বাবু, বোয়ালমারী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মুকুল, উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর কাউন্সিলর মিনহাজুর রহমান লিপন, সাবেক ছাত্রদলের সভাপতি ও সাবেক শেখর ইউপি চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ, উপজেলা বিএনপির বর্তমান সহসভাপতি ডা. আব্দুস সবুর, পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি জাহাঙ্গীর আলম কালা মিয়া, বোয়ালমারী সরকারি কলেজের সাবেক জিএস এনায়েত হোসেন মেম্বার, সাবেক পৌর কাউন্সিলর শেখ আজিজুল হক, সাবেক কাউন্সিলর শেখ আতিকুল আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব জাকির হোসেন চৌধুরী, গত সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে ঢাকায় গুলিবিদ্ধ উপজেলা জাসাসের সাবেক আহ্বায়ক মো. শাহিন আনোয়ার, রুপাপাত ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. আবুল কালাম, চতুল ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি একলিম শরীফ, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হোসেন সালেহ্ রুবেল, ছাত্রদল নেতা জাকারিয়া মোল্যা সুমন ও সাদমান পাপ্পু প্রমুখ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অবরোধকারীদের আন্দোলনে যখন সকল ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দুই কিলোমিটার যানজট হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হাসান চৌধুরী ও থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আল আমিন দুপুর দেড়টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। সেখানে ইউএনওর অনুরোধে অবরোধকারীরা দুইটার দিকে অবরোধ তুলে নিলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

সর্বশেষে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও শেখর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান রইসুল ইসলাম পলাশ বলেন, আগামী ১০ নভেম্বরের মধ্যে কমিটি বাতিল না করলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজনে সকল ধরনের রাস্তা-ঘাট বন্ধ করে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, ফরিদপুর -১ আসনে (বোয়ালমারী, মধুখালী, আলফাডাঙ্গা) এ দলটির অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেরে দুইটি গ্রুপ পৃথকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। এর একটি গ্রুপের নেতৃত্বে দেন কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সহ-সভাপতি ও সাবেক এমপি খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।

অপর গ্রুপের নেতৃত্ব রয়েছেন বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ভিপি শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু। দু’জনই আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী। সম্প্রতি নবগঠিত কমিটিতে শামসুদ্দিন মিয়া ঝুনু গ্রুপের ত্যাগী নেতাদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির একাংশের নেতাকর্মীরা।

‎ফরিদপুরে নারীকে ধর্ষণ‌ ও হত্যার দায়ে ৪ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

সুমন ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর, ২০২৫, ৮:১২ পিএম
‎ফরিদপুরে নারীকে ধর্ষণ‌ ও হত্যার দায়ে ৪ জনের আমৃত্যু কারাদণ্ড

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চর দড়িকৃষ্ণপুর এলাকার এক নারীকে (২৫) ধর্ষণের পর হত্যার দায়ে ৪ আসামিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সাথে তাদের প্রত্যেককে দেড় লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক(জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এই রায় প্রদান করেন।


এ সময় আসামীদের মধ্যে একজন বাদে সকল আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদেরকে পুলিশ পাহারায় জেল হাজতে নিয়ে যাওয়া হয়।

‎আসামিরা হলেন, ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর গ্রামের জাহাঙ্গীর বেপারী (৩৭), কামরুল মৃধা (৩৭), আলী বেপারী (৪২), ও বক্কার ব্যাপারী (৬৭)। এর মধ্যে জাহাঙ্গীর বেপারী পলাতক রয়েছেন।

‎এছাড়া এই মামলার আলামত নষ্ট করার দায়ে মমতাজ বেগম এবং আবুল কালাম বেপারী নামে দুই জনের পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দেন আদালত। অনাদায়ে ছয় মাসের কারাদন্ডের আদেশ প্রদান করেন।

‎মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ২০১২ সালের ১ অক্টোবর ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার হাট কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের চর দড়িকৃষ্ণপুরে মেয়েটির বড় বোনের স্বামী জাহাঙ্গীর বেপারী রাত ১ টার দিকে কয়েকজনকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে যান। এরপর বোনের অসুস্থতার কথা বলে তাকে দরজা খুলতে বলে। ‌‌ মেয়েটি সহজ সরল মনে দরজা খুললে আসামি মেয়েটিকে তার সঙ্গে থাকা কয়েকজন মিলে ধর্ষণ শেষে হত্যা করে।

‎এরপর আসামী প্রকৃত ঘটনা আড়াল করে মেয়েটিকে কবর দিয়ে দেয়। মেয়েটির মায়ের এ বিষয়ে সন্দেহ তৈরি হলে তিনি ফরিদপুরের বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২ নং আমলী আদালতে ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে মামলা দায়ের করে।

‎রায়ের বিষয়ে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট গোলাম রব্বানী ভুঁইয়া রতন জানান, সদরপুরে এক নারীকে ধর্ষণ শেষে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করে ফরিদপুর জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক ৪ আসামির আমৃত্যু কারাদণ্ডে দণ্ডিত করার আদেশ দেন এবং একই সাথে দেড় লক্ষ টাকা অর্থদন্ডে দণ্ডিত করা হয়। যা জেলা কালেক্টর আসামির কাছ থেকে সংগ্রহ করে ভিকটিমকে প্রদান করবেন।

তিনি বলেন, আদালতে আমরা সর্বোচ্চ বিচার পেয়েছি, এই রায়ে আমরা রাষ্ট্রপক্ষ খুশি হয়েছি বলে তিনি জানান।