খুঁজুন
বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২ পৌষ, ১৪৩২

ফরিদপুরে নায়াব ইউসুফের পরিবর্তে মনোনয়ন চান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: সোমবার, ১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:১০ এএম
ফরিদপুরে নায়াব ইউসুফের পরিবর্তে মনোনয়ন চান জেলা বিএনপির আহ্বায়ক

ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিচনার দাবি জানিয়েছে ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছার কর্মীরা।

রবিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে ফরিদপুর শহরের অম্বিকা ময়দানে এক জনসভার আয়োজন করে ইছার সমর্থকরা। এই সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা।

সমাবেশের ব্যানারে লেখা ছিল, “৩১ দফা বাস্তবায়নে ধানের শীষের পক্ষে কর্মী সমাবেশ।” সভাটি আয়োজন করা হয় ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনের ধানের শীষের কর্মীবৃন্দের ব্যানারে।

সমাবেশের শুরু থেকেই শ্লোগান দেওয়া হয় এবং যেসব ফেস্টুন প্রদর্শন করা হয় তাতে লেখা ছিল, “যোগ্য নেতা ইছা ভাই এমপি হিসেবে তাকে চাই”, “ রাজপথের ইছা ভাই আমরা তোমাকে ভুলিনাই”, “দুর্দিনে পাশে ছিলেন ভাই এমপি হোক ইছা ভাই।”

সভায় সভাপতিত্ব করেন ফরিদপুর মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা ওবায়দুল কাদের। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- জেলা মুক্তিযোদ্ধা দলের আহ্বায়ক শহীদ পারভেজ, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক খায়রুল আনাম, জেলা যুবদলের সভাপতি রাজীব হোসেন, আলীয়াবাদ ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মো. জাবেদ খান,কানাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ সরকার,কৃষ্ণনগর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর মোল্লা, কৈজুরী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হাওলাদার প্রমুখ। সমাবেশে ফরিদপুর সদরের ১২টি ইউপি ও ২৭টি পৌরসভার বিভিন্ন পর‌্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

বক্তারা বলেন, ইছা ভাই গত ৪৭ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। আমাদের বিপদে আপদে সব সময় তাকে কাছে পেয়েছি। আমরা ইছা ভাইকে ফরিদপুর-৩ আসনের এমপি হিসেবে দেখতে চাই। এরজন্য দলীয় মনোনয়ন পুনঃ বিবেচনা করতে হবে। ইছা ভাইকে মনোনয়ন দিয়ে ধানের শীষ বাঁচান। ইছাকে দলীয় মনোনয়ন না দিলে ফরিদপুর-৩ আসনের জনগণ এই নির্বাচন মেনে নেবে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে সৈয়দ মোদাররেছ আলী ইছা বলেন, “যে দাবি এখানে তোলা হয়েছে, আমাকে ফরিদপুর-৩ আসনের প্রার্থী হিসেবে আপনারা দেখতে চান এবং যে দাবির জন্য প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন এর জন্য আপনাদের অভিনন্দন। যে উদ্যম আপনারা প্রকাশ করেছেন, আমি যে আপনাদের মনোনীত ও আকাংখিত প্রার্থী এরজন্য আপনাদের কাছে কৃতজ্ঞ।

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আরো বলেন, আমি খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে আপনাদের পাশে নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করেছি। আপনাদের এ প্রত্যাশার দাবি সাংবাদিকদের মাধ্যমে অবশ্যই বিএনপির হাইকমান্ডের কাছে পৌঁছেবে। হাইকমান্ড দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে চূড়ান্ত যে সিদ্ধান্ত নেবে তা আমি মাথা পেতে নেব।

প্রসঙ্গত, ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হযেছে এ আসনের বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য প্রয়াত চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের মেয়ে মহিলা দলের কেন্দ্রিয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নায়াব ইউসুফকে। গত ৩ নভেম্বর দলীয় এ মনোনয়ন ঘোষণা দেওয়া হয়। ওই মনোনয়ন ঘোষণার ১৩দিন পর দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে ইছাকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিতে সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সমাবেশ শেষে সেখান থেকে নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে শহরের মুজিব সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে জনতা ব্যাংকের মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

সালথায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৪৬ পিএম
সালথায় মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের সালথায় উৎপল সরকার (২৬) নামে এক মাছ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় জড়িত অভিযোগে জাফর মোল্যা (৪২) নামের আরেক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের সদস্যরা।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের দেওয়া এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জাফর মোল্যাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯ টার দিকে ঢাকার সাভারের পশ্চিম ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে জাফরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

জাফর মোল্যা ফরিদপুরের কোতয়ালী থানাধীন তেঁতুলিয়া এলাকার মৃত কাদের মোল্যার ছেলে।

এদিকে, গত ১৩ ডিসেম্বর এ হত্যার ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ফিরোজ মাতুব্বর নামের অপর এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব-১০।

র‌্যাব-১০, সিপিসি-৩, ফরিদপুর ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়াড্রন লীডার তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় জাফর মোল্যাকে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাছ ব্যবসায়ী উৎপল হত্যায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিতে তার নাম এসেছিল। জাফরকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র‌্যাবের এ কর্মকর্তা।’

প্রসঙ্গ, গত ৫ ডিসেম্বর ভোর রাতে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গৌড়দিয়া গ্রামের কালীতলা ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় মাছ ব্যবসায়ী উৎপল সরকারকে কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এসময় তার কাছে থাকা টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হত্যার একদিন পর উৎপলের বাবা অজয় কুমার সরকার বাদী হয়ে সালথা থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:৫৭ এএম
কচুলতায় জেগে উঠছে সম্ভাবনা, বদলাচ্ছে কৃষকের ভাগ্য
কচুলতায় এসেছে কৃষকের ভাগ্য পরিবর্তনের বার্তা। দেড়শ বিঘা দিগন্তজুড়ে কচুর লতার সফল চাষ মৌলভীবাজার জেলায় সৃষ্টি করেছে নতুন সম্ভাবনা। তুলনামূলক কম খরচ, কম পরিশ্রম এবং বেশি লাভজনক হওয়ায় কচুর লতা চাষে এক ধরনের কৃষি বিপ্লব দেখা যাচ্ছে এ জেলায়।

জেলার বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা প্রচলিত অনেক ফসলের তুলনায় বেশি আয়ের আশায় কচুর লতি চাষে ঝুঁকছেন। স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি মৌলভীবাজার থেকে প্রতিদিনই লতি পাঠানো হচ্ছে ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় তিনশ হেক্টর জমিতে কচুর লতি চাষ হয়েছে, যা আগের বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার গিয়াসনগর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা এবং কমলগঞ্জ উপজেলার আদমপুর গ্রামে।

গিয়াসনগর এলাকায় দেখা গেছে, পুরো গ্রামজুড়ে এখন বাণিজ্যিকভাবে লতি চাষ হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা জানান, কয়েক বছর আগেও দুই-তিন বিঘা জমিতে বিচ্ছিন্নভাবে লতি চাষ হলেও বর্তমানে তা ব্যাপক বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে। শুধু গিয়াসনগর এলাকাতেই মৌসুমে প্রায় ১৫০ বিঘা জমিতে লতির চাষ হচ্ছে।

গিয়াসনগর গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান জানান, তিনি ২১ শতাংশ জমিতে লতিরাজ বারি কচু–১ রোপণ করেছেন। প্রায় এক মাস ধরে তিনি লতি তুলছেন। প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি লতি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছেন। মৌসুম যত এগোচ্ছে, দামও বাড়ছে। প্রায় ৩০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে তিনি দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভের আশা করছেন।

একই গ্রামের কৃষক আবদুল আজিজ জানান, তিনি এক কিয়ার জমিতে লতি চাষ করেছেন এবং আরও জমিতে চারা রোপণের পরিকল্পনা করছেন। কৃষক মিলন, কাজিম ও আফাই মিয়াসহ অনেকেই বড় পরিসরে লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।

কমলগঞ্জ উপজেলায় কচুর লতি চাষে সফল হয়েছেন বিমান বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার। উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামে তার উদ্যোগে লতি চাষ ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার দেখাদেখি স্থানীয় অন্যান্য কৃষকরাও লতি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।

এ ছাড়া শ্রীমঙ্গল উপজেলার মির্জাপুর ইউনিয়নের যাত্রাপাশা গ্রামের এংরাজ মিয়া, রোকন মিয়া, আব্দুল মজিদ ও ইউনুস মিয়া বাণিজ্যিকভাবে কচুর লতি চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার পথ খুঁজে পেয়েছেন।

স্থানীয় উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিরোজ কান্তি রায় বলেন, গিয়াসনগর গ্রামে লতি এখন একটি সমৃদ্ধ ফসলে পরিণত হয়েছে। চার-পাঁচ বছর আগে যেখানে দুই-তিন বিঘা জমিতে লতি চাষ হতো, এখন সেখানে মৌসুমে ১৫০ বিঘা জমিতে লতির আবাদ হচ্ছে। সারা বছর ৫০ থেকে ৭০ বিঘা জমিতে লতি চাষ হয়। লতি অত্যন্ত লাভজনক ফসল এবং এতে রোগবালাই তুলনামূলক কম। গ্রামটি যেন এখন ‘লতার গ্রাম’ হয়ে উঠছে।

মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. জালাল উদ্দিন বলেন, কচুর লতি এ অঞ্চলে একটি দীর্ঘমেয়াদি ও লাভজনক ফসল। অল্প খরচে কৃষকরা বেশি লাভবান হচ্ছেন। লতি চাষ সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগ সব ধরনের সহযোগিতা দিচ্ছে।

সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:০৯ পিএম
সালথায় পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে কৃষকলীগ নেতা আটক

ফরিদপুরের সালথায় ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গিয়ে খোরশেদ খান (৪৫) নামে এক কৃষক লীগ নেতার হামলার শিকার হয়েছেন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল। এ ঘটনায় ওই হামলাকারী কৃষকলীগ নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৭ টার দিকে উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

খোরশেদ খান গট্টি ইউনিয়নের কৃষকলীগের সহ-সভাপতি ও ওই গ্রামের উচমান খানের ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের আগুলদিয়া মোড় এলাকায় এক ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীকে ধরতে যায় একদল পুলিশ। এ সময় ওই আসামীকে ধরতে বাধা দেন কৃষক লীগ নেতা খোরশেদ খান। এক পর্যায়ে পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলু রহমান খান বলেন, ওয়ারেন্টভুক্ত এক আসামীকে ধরতে গেলে খোরশেদ খান বাধা প্রদান করেন এবং পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মুকুল আহত হন। তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।