খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

ফরিদপুরে হিমাগারে আলু রাখতে এসে বিড়ম্বনার শিকার ব্যবসায়ী-কৃষকরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫, ১০:২০ এএম
ফরিদপুরে হিমাগারে আলু রাখতে এসে বিড়ম্বনার শিকার ব্যবসায়ী-কৃষকরা
ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখতে এসে বিপাকে পড়েছে দূরদুরান্ত থেকে আসা ব্যবসায়ী-কৃষকরা। ট্রাকে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করেও আলু রাখতে না পারায় আলু নষ্ট হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন হিমাগারের সামনে থাকা অপেক্ষাকৃতরা।
হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে, অধিক ফলন ও একইসঙ্গে সবাই আলু নিয়ে আসার কারণে এ বিড়ম্বনার সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা ৬০ হাজারের বেশি বস্তা আলু হিমাগারে প্রবেশ করেছে। এখন অপেক্ষমান যারা রয়েছে তাদের টুকু নিতে পারলেই হয়।
জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী হিমাগারে আলু রাখার জন্য প্রতিবছর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বুকিং দিতে হয়। আলু রাখার মৌসুম শুরু হয়ে মার্চ মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত। এখানে আলু সংরক্ষণ করেন ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, ঝিনাইদাহ, মাগুরা, নীলফামারী, লালমনিরহাট, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, দিনাজপুর, ও রাজশাহী অঞ্চলের আলু ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই কিছুদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করেন এখানে। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
হিমাগারটির কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে গোয়ালচামট এলাকায় ব্যক্তি মালিকানাধীন ১৯৯৫ সালে ‘ফরিদপুর হিমাগার লিমিটেড’ নামে হিমাগারটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই হিমাগাটির ধারণক্ষমতা রয়েছে ১ লক্ষ ৫০ হাজার বস্তা। প্রতি বস্তায় ৬০ কেজি করে আলু রাখতে হয়। নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ব্যবসায়ীরা বস্তা প্রতি ৪০৫ টাকা হারে ভাড়া প্রদান করেন।
সম্প্রতি হিমাগারটি ঘুরে দেখা যায়, ফরিদপুর শহরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ে হিমাগার ফটকের সামনে ট্রাক্টর, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে আলু নিয়ে এসেছেন হিমাগারে রাখার জন্য দীর্ঘ লাইন ধরে অপেক্ষা করছেন ব্যবসায়ী ও কৃষকরা। এখানে কেউ কেউ তিন দিন আবার কেউ পাঁচ দিন ধরে হিমাগারের ফটক থেকে বাইরের রাস্তায় অপেক্ষা করছেন। আগতদের অধিকাংশ উত্তরবঙ্গ জেলাগুলে থেকে এসেছেন। পাঁচ-ছয়দিন ধরে অপেক্ষা করেও আলু সংরক্ষণ করতে না পেরে হতাশায় পড়ছে দূরদূরান্ত থেকে আসা কৃষকরা। এ বছর বুকিং দিয়েও আলু রাখতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী। প্রচন্ড গরমে  ট্রাকে বোঝাইকৃত আলু নিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকায় নষ্ট হতে পারে ট্রাকে রাখা আলু।
হিমাগারে আলু সংরক্ষণ করতে আসা ব্যক্তিরা জানান, কেউ তিনদিন, কেউ বা পাঁচদিন ধরে ট্রাক, ভটভটি, ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে করে আলু নিয়ে এসেছেন হিমাগারে রাখার জন্য। তারা রাস্তার বাইরে আলু নিয়ে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছেন।
ফরিদপুর হিমাগারে আলু রাখার জন্য ঠাকুরগাঁও জেলা থেকে আসা সেলিম মোল্লা নামে এক ব্যক্তি জানান, গত পাঁচদিন আগে ১৩ টন আলু নিয়ে ফরিদপুর এসেছি। অপেক্ষা করতে করতে এখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। এখন ভয় পাচ্ছি ট্রাকে রাখা আলু প্রচন্ড গরমে পঁচন না ধরে যায়!
ফরিদপুর হিমাগারে ম্যানেজার রুস্তুম মোল্লা জানান, ব্যবসায়ী ও কৃষকেরা বছরে মার্চ থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে আলু সংরক্ষণ করেন। আলু ছাড়াও ফল ব্যবসায়ীরা সারা বছরই অল্পদিনের জন্য বিভিন্ন ফল সংরক্ষণ করে রাখেন। সুবিধামতো সময়ে আবার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার থেকে আলু ও ফল বিক্রির জন্য নিয়ে যান।
তিনি জানান, আমাদের আনলোডের শ্রমিক সংখ্যা কম। যে কারণে দূর থেকে আসা ট্রাকগুলো থেকে আমরা পর্যাপ্ত আলু আনলোড করতে পারছি না। তবে আশা করছি আগামী ৪-৫ দিনের মধ্যে যে গাড়ীগুলো অপেক্ষায় রয়েছে সেগুলো আমরা সংরক্ষণ করতে পারব।

ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে এক ব্যবসায়ী নিহত
ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে লিয়াকত মোল্যা (৪০) নামে এক ব্যবসায়ী নিহতের ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (৩ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাঝকান্দি-বোয়ালমারী-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কের কাদিরদী বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মাগুরা জেলার গোপালনগর ইউনিয়নের সংকোচ খালী এলাকার তিন ব্যবসায়ী কয়েকটি গরু বোঝাইকৃত ট্রাক নিয়ে ফরিদপুর টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিলেন। তারা মহম্মদপুর-বোয়ালমারী উপজেলার সীমান্ত ব্রীজ পার হয়ে ফরিদপুর জেলার কাদিরদী বাজার এলাকায় পৌঁছালে পিকআপ থেকে গরু লাফ দিলে গরু বোঝাইকৃত পিকআপ উল্টে যায়। এ সময় পিকআপে থাকা লিয়াকত মোল্যাসহ দুই ব্যবসায়ী আহত হয়। স্থানীয়রা মারাত্মক আহত অবস্থায় দুই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক লিয়াকত মোল্যাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় অপর ব্যবসায়ী ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বোয়ালমারী উপজেলার কাদিরদী এলাকার ইউপি সদস্য বুলবুল আহমেদ জানান, মাগুরা সদর থেকে গরু বোঝাইকৃত পিকআপটি ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা গরুর হাটে যাচ্ছিল। গরুর গাড়িটি কাদিরদী বাজারে আসলেই একটি গরু লাফ দিলে গাড়ীটি উল্টে ব্যবসায়ীরা চাপা পড়ে। সেখান থেকে আহত দুইজনকে ফরিদপুর মেডিক্যালে পাঠানো হয়। পরে জানতে পেরেছি লিয়াকত নামে ব্যবসায়ী মারা গেছে।
এ ব্যাপারে বোয়ালমারী থানার ওসি মাহমুদুল হাসান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা এখনো অবগত নই। এমনকি ঘটনাটি আমাদের কেউ জানায়নি।

ফরিদপুরে তাল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু 

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৮ পিএম
ফরিদপুরে তাল পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে কিশোরের মৃত্যু 
ফরিদপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইমন শেখ (১৪) নামে  এক কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার (০৩ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুর সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
মৃত ইমন শেখ কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ফারুক শেখের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, জেলা সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের মহারাজপুর গ্রামের মো. ফারুক শেখের ছেলে ইমন শেখ তাল পাড়ার উদ্দ্যেশ্য বাঁশ নিয়ে বাড়ির পাশে তাল গাছে উঠে। গাছে ওঠার পর বাঁশ দিয়ে খুচিয়ে তাল পাড়ছিল। এ সময় ওই গাছের পাশ দিয়ে যাওয়া উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুতের লাইনে তারে ইমনের হাতে থাকা বাঁশ স্পর্শ করলে  বিদ্যুতায়িত হয়ে পড়ে গিয়ে সে মারাত্মক ভাবে আহত হয়।
পরে স্থানীয়রা ইমনকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুর কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামান বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৩ জুন, ২০২৫, ৯:২৩ পিএম
ফরিদপুরে চাঁদাবাজির মামলায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরসহ চার সহযোগী গ্রেপ্তার
ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া গ্রামে চাঁদাবাজি ও হত্যার হুমকির অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর গোলাম হায়দারকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।
মঙ্গলবার (৩ জুন) গভীর রাতে তার নিজ বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
বুধবার (০৪ জুন) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, মেজর হায়দারের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফরহাদ হোসেনসহ আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি প্রদর্শন ও সাধারণ মানুষকে হয়রানির একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রাজু মোল্ল্যা অভিযোগ করে বলেন, অভিযানের সময় মসজিদের মাইক ব্যবহার করে ফরহাদ হোসেন ‘মেজরের বাড়িতে ডাকাত পড়েছে’ বলে গুজব ছড়ান। এতে আশপাশের এলাকা থেকে মানুষজন ঘটনাস্থলে জড়ো হন। পরে পুলিশ সাইরেন ও মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানায়—এটি একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত গুজব, ডাকাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে এলাকাবাসীর সহায়তায় ফরহাদসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে মেজর হায়দারকেও নিজ বাড়ি থেকে আটক করা হয়।
এর আগে উপজেলার ডাংগি ইউনিয়নে বৈষম্য বিরোধী এক নারী নেত্রীকে ঘিরে উত্তেজনার সময় স্থানীয় শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ চলাকালে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে উগ্র আচরণ ও অশোভন মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন মেজর হায়দার। সেই ঘটনার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয় এবং ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করে।
নগরকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম জানান, “রাজু মোল্লা নামের এক ব্যক্তি চাঁদাবাজির অভিযোগ দিলে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চালানো হয়। গ্রেপ্তারের পর মঙ্গলবার (০৩ মে) সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে তাদের।”