খুঁজুন
সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭ পৌষ, ১৪৩২

সদরপুরে মাদক কারবারে জড়িত চাকরিচ্যুত পুলিশসহ গ্রেপ্তার দুই

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১২ পিএম
সদরপুরে মাদক কারবারে জড়িত চাকরিচ্যুত পুলিশসহ গ্রেপ্তার দুই

ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় মাদকসহ রফিকুল ইসলাম (৪৭) নামের এক চাকরিচ্যুত পুলিশ সদস্য ও আজিজুল আকন (২৩) নামে দুই মাদক কারবারিরে গ্রেপ্তার করেছে জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কলেজ মোড় ও পশ্চিম শ্যামপুর এলাকার একটি বসতঘরে অভিযান চালিয়ে রকিকুল ও আজিজুলকে আটক করা হয়। এ সময় রফিকুলের কাছে থাকা ৪০ পিস ইয়াবা ও আজিজুলের কাছে থাকা ৪০০ গ্রাম গাজা জব্দ করা হয়।

ফরিদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শিরীন আক্তার এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, অভিযানের আওতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার দুপুরে সদরপুর উপজেলার সদর ইউনিয়নে কলেজ মোড় এলাকায় ও পশ্চিম শ্যামপুর গ্রামে অভিযান চালানো হয়। পরে কলেজ মোড় এলাকায় সাবেক পুলিশ সদস্য রফিকুলকে তল্লাশি করে তার প্যান্টের পকেটে একটি নীল জিপারের ভেতর থেকে ৪০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয় ও পশ্চিম শ্যামপুর এলাকায় উজ্জল আকনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আজিজুল আকন নামে একজনকে ৪০০ গ্রাম গাজাসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি আরো জানান, এই দুই ঘটনায় ফরিদপুর মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ তাজ উদ্দিন ও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বাদী হয়ে সদরপুর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দুইটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় গ্রেপ্তার আসামি রফিকুল ইসলাম ও আজিজুল আকনকে সোমবার সন্ধায় আদালতে সোপর্দ করা হয়। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। মাদকের বিরুদ্ধে তাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানান মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের এ উপ-পরিচালক।

ফরিদপুরে রতন শেখ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি লালবাগ থেকে গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৫৪ পিএম
ফরিদপুরে রতন শেখ হত্যা মামলার অন্যতম আসামি লালবাগ থেকে গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় দায়ের করা রতন শেখ (৪৫) হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শ্রাবণ (২৮)–কে রাজধানীর লালবাগ এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-১০।

র‌্যাব-১০ সূত্র জানায়, সন্ত্রাস ও সংঘবদ্ধ অপরাধ দমনে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে র‌্যাব-১০ এর সিপিসি-২ শ্রীনগর এবং সিপিএসসি লালবাগ ক্যাম্পের যৌথ অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাবের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৫ জুলাই ২০২৫ রাত আনুমানিক ১২টা ৩০ মিনিটে রতন শেখের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একটি কল আসে। এরপর তিনি বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। দীর্ঘ সময় খোঁজাখুঁজি করেও কোনো সন্ধান না পেয়ে তার স্ত্রী ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

পরবর্তীতে লোকমুখে খবর পেয়ে ভিকটিমের স্ত্রী জানতে পারেন যে, ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিগ্রীরচর নমডাঙ্গীর ডকইয়ার্ড এলাকায় পদ্মা নদীতে একটি অজ্ঞাতনামা লাশ ভাসছে। ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি তার স্বামী রতন শেখের লাশ শনাক্ত করেন।

তদন্তে উঠে আসে, একই দিন রাত আনুমানিক ৪টার দিকে পূর্বশত্রুতার জেরে কয়েকজন ব্যক্তি পরস্পর যোগসাজশে রতন শেখকে হত্যা করে এবং লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে পদ্মা নদীতে ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতয়ালী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর ৫৮, তারিখ ২৮ জুলাই ২০২৫, দণ্ডবিধির ৩০২/২০১/৩৪ ধারায় মামলা রুজু হয়।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে র‌্যাব-১০ গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করে এবং অভিযানে নামে।

এরই ধারাবাহিকতায় রবিবার (২১ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ঢাকা মহানগর পুলিশের লালবাগ থানাধীন বেরীবাঁধ এলাকা থেকে হত্যা মামলার অন্যতম আসামি শ্রাবণ (২৮)–কে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত শ্রাবণের পিতার নাম ফরহাদ শেখ। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার কোতয়ালী থানাধীন ফরিদাবাদ এলাকায়।

এ বিষয়ে র‌্যাব-১০ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার তাপস কর্মকার বলেন,
“রতন শেখ হত্যা মামলাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে র‌্যাব-১০ গোয়েন্দা নজরদারি ও তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার করছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।”

র‌্যাব আরও জানায়, দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হত্যা ও সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে তাদের এই ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও চলমান থাকবে।

অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন স্কুল শিক্ষার্থী ফারজানা

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:৫৫ পিএম
অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলেন স্কুল শিক্ষার্থী ফারজানা

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় বাস-ইজিবাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত স্কুল শিক্ষার্থী ফারজানা (১১) চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৭ দিন পর ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা গেছে।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় ফারজানা।

নিহত স্কুলছাত্রী ফারজানা ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের ডাঙ্গার পাড় গ্রামের ফিরোজ শেখের মেয়ে ও ভাঙ্গা সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ে এ বছর লটারিতে বিজয়ী হয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তির সুযোগ পায়।

স্থানীয় ও থানা সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কের ভাঙ্গা পৌর এলাকার কৈডুবী রেলক্রসিংয়ে একটি বাস ও ইজিবাইক মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই একই পরিবারের ৩ জনসহ ৪ জন নিহত হয়। ওই দুর্ঘটনায় ইজিবাইকে থাকা স্কুলছাত্রী ফারজানা ও তার মা শান্তা খন্দকার গুরুতর আহত হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। দীর্ঘ ১৭ দিন চিকিৎসা ও চিকিৎসকদের প্রাণপণ চেষ্টার পরেও ফারজানাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। তার মৃত্যুতে পরিবার ও এলাকাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ঘারুয়া ইউনিয়নের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হায়দার হোসেন জানান, ওইদিনের দুর্ঘটনায় ইজিবাইকে থাকা স্কুলছাত্রী ফারজানা ও তার মা শান্তা খন্দকার গুরুতর আহত হন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দীর্ঘ ১৭ দিন চিকিৎসার পর ফারজানা মারা গেছে। সোমবার বাদ জোহর গ্রামের বাড়িতে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হেলাল উদ্দিন জানান, ওইদিনের বাস ও ইজিবাইকের দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত মোট ৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ কাজ করছে।

অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২: ফরিদপুরে পুলিশের অভিযানে ৫৮ জন গ্রেপ্তার

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: সোমবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:০৩ পিএম
অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২: ফরিদপুরে পুলিশের অভিযানে ৫৮ জন গ্রেপ্তার

সরকার ঘোষিত ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’-এর আওতায় ফরিদপুরে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে গত ৪৮ ঘণ্টায় কৃষকলীগ নেতাসহ মোট ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নিয়মিত মামলা, ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি, মাদক ও চুরিসহ বিভিন্ন অভিযোগে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শামছুল আজম ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং অপরাধ দমনে পুলিশের চলমান বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে এ গ্রেপ্তার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানায়, গত ৪৮ ঘণ্টায় ফরিদপুর সদরসহ বোয়ালমারী, আলফাডাঙ্গা, মধুখালী, ভাঙ্গা, সদরপুর, চরভদ্রাসন, নগরকান্দা ও সালথা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একযোগে অভিযান চালানো হয়। অভিযানে নিয়মিত মামলার আসামি, ওয়ারেন্টভুক্ত পলাতক, মাদক কারবারি এবং চুরি ও অন্যান্য অপরাধে জড়িত সন্দেহভাজনদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারদের মধ্যে জেলার বোয়ালমারী উপজেলার কৃষকলীগ নেতা লিটন মৃধার নাম নিশ্চিত করা গেছে। তবে বাকি গ্রেপ্তারদের নাম-পরিচয় তাৎক্ষণিকভাবে জানাতে পারেননি পুলিশ কর্মকর্তা। আইনগত প্রক্রিয়া শেষে তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

এর আগে একই অভিযানের ধারাবাহিকতায় গত ৭২ ঘণ্টায় ফরিদপুর জেলায় আরও ৯৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ধারাবাহিক এ অভিযানে জেলার অপরাধপ্রবণতা কমবে এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাবোধ আরও জোরদার হবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শামছুল আজম ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, “গত ৪৮ ঘণ্টায় পুলিশের অভিযানে নিয়মিত মামলা, চুরি, ওয়ারেন্ট, মাদকসহ বিভিন্ন মামলায় ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

পুলিশ জানিয়েছে, অপরাধ দমন ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ-২’ এর আওতায় জেলার সব থানায় নিয়মিত অভিযান চলমান থাকবে।