খুঁজুন
শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ৯ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে কৃষকের ফসলের ক্ষেত বিনষ্ট করে দেয়ার অভিযোগ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৬:৫২ পিএম
ফরিদপুরে কৃষকের ফসলের ক্ষেত বিনষ্ট করে দেয়ার অভিযোগ
ফরিদপুরের মধুখালীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধে মোহন শেখ (৫০) নামে এক কৃষকের ২৮ শতাংশ জমিতে বপন করা গম ও সরিষা ফসল নষ্ট করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে। তবে প্রতিপক্ষের দাবি, নিজেদের জমি থেকে ফসল কেটে নিয়েছেন।
রোববার সকালে উপজেলার রায়পুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া বিদ্যুৎ সাব স্টেশন সংলগ্ন আমুরদী মৌজায় ৭২৬ নং দাগের ওই জমিতে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে জমিতে ছুটে গিয়ে দিশেহারা হয়ে থানা পুলিশকেও অবগত করেন। কৃষক মোহন শেখ ওই ইউনিয়নের পাইককান্দি গ্রামের বাসিন্দা। তার অভিযোগ, পাশ্ববর্তী তেলিকান্দি গ্রামের প্রভাবশালী গ্রাম্য মাতুব্বর মো. ফরিদ মোল্যার (৪০) নেতৃত্বে ফসল নষ্ট করে দেয়া হয়েছে।
দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, ওই জমিতে সরিষা ও গমের চাষ করা হয়েছে। ফলন আসলেও এখনও ঘরে তোলার উপযুক্ত হয়ে উঠেনি। বপনকৃত ফসল কাঁচা রয়েছে। এ অবস্থায় এবড়ো থেবড়ো ভাবে ফসলের মাথা কেটে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। খবর পেয়ে স্থানীয় অনেকে সেখানে ভিড় করেন। এমন ঘটনা দেখে বিস্মিত স্থানীয়রাও।
স্থানীয় আব্দুর রহমান মোল্যা বলেন, গত ৪০ থেকে ৫০ বছর যাবৎ এই জমি মোহন শেখ চাষাবাদ করছে। প্রতিবছরের মতো এবাবরও সে চাষ করছে। রোববার সকালে শুনি কাঁচা ফসল কেটে নষ্ট করে দেয়া হয়েছে। যারা কেটে নিছে তারা অনেক শক্তিশালী। ওদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বলতে চায় না। এর আগে গত বছরও কেটে নিয়েছে। এভাবে অন্যের জমি থেকে জোড়জবর করে কেটে নেয়া সমাজ ও আইনের কাছেও খারাপ কাজ। কিন্তু কোনো বিচার হয় না বা কোনো সমাধানও হয় না।
কৃষক মোহন শেখ জানান, পৈত্রিক সম্পত্তিমূলে পাশাপাশি তিনটি দাগের ১২২ শতাংশ জমির মালিক তারা তিন ভাই। এই জমি নিয়ে গত ৪০ বছরের বেশি সময় মামলা মোকাদ্দমা চলে আসতেছে। বর্তমানে তাদের নামে রেকর্ডও হয়েছে। তবে সম্প্রতিকালে বেশ কিছুদিন ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন ওই জমির জাল কাগজপত্র করে দখলে নেয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, পৈত্রিক সুত্রে পাওয়া জমি শুরু থেকেই আমরা চাষ করে আসতেছি। আজ সকালে ফরিদ মোল্যা তার লোকজন নিয়ে ওই জমির কাঁচা কম ও সরিষার গাছ ভাবে কেটে নিয়ে যায়। অন্যান্য ফসল বিনষ্ট করে রেখে যায়। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।
অপরদিকে ওই জমি নিজের দাবি করে জমি থেকে নিজেই বপন করা ফসল কেটে এনেছেন বলে জানান ফসল কর্তনকারী ফরিদ মোল্যা। তিনি দাবি করেন, এসএ রেকর্ডমূলে তার পিতা মজিদ মোল্যা স্থানীয় মোবারক মোল্যা নামে এক ব্যক্তির নিকট থেকে ওই জমি ক্রয় করেন। পিতার ক্রয় সূত্রে ওই জমির মালিক হয়েছেন।
তবে কাঁচা ফসল নষ্ট করার প্রসঙ্গে তিনি জানান, প্রতিপক্ষ লোকজন ফসল কেটে নিয়ে যেতে পারে এমন শঙ্কায় তিনি ফসল কেটে নিয়েছেন। এছাড়া একই জমির পৃথক দুটি বিএস রেকর্ড হয়েছে এবং পরবর্তীতে রেকর্ড সংশোধনী মামলায় তাঁদের পক্ষে রায় এসেছেও বলে জানান।
এ বিষয়ে সহকারী পুলিশ সুপার (মধুখালী সার্কেল) মো. ইমরুল হাসান বলেন, বিষয়টি নিয়ে কোনো অভিযোগ পাইনি। এছাড়া জমিজমা সংক্রান্ত কাজ আদালতের বিষয়, আমাদের কোনো বিষয় না। তারপরও অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।

ফরিদপুরে কীর্তনগান শুনে বাড়ি ফেরা হলো না দুই ব্যবসায়ীর

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:২২ এএম
ফরিদপুরে কীর্তনগান শুনে বাড়ি ফেরা হলো না দুই ব্যবসায়ীর

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে কীর্তন গান শুনে অটোভ্যানে যোগে বাড়ি ফেরার পথে ট্রাক চাপায় দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরো পাঁচ জন।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কানখড়দি মাদ্রাসার সামনে মাঝকান্দি-ভাটিয়াপাড়া আঞ্চলিক মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন, উপজেলার সাতৈর ও শেলাহাটি এলাকার বাসিন্দা ও সাতৈর বাজারের ব্যবসায়ী মধু সাহা (৫০) ও নারায়ণ সাহা (৫৫)।

আহতরা হলেন, সঞ্জয় বণিক, নেপাল সাহা, সুজিত সাহা, টুকটুকি ও ভ্যানচালক সুমন। আহতদের বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে কয়েকজন মিলে কাদির এলাকা থেকে নাম কীর্তন গান শুনে অটোভ্যানে করে সাত জন মিলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে উপজেলার সাতৈর ইউনিয়নের কানখড়দি মাদ্রাসার সামনে ফরিদপুরগামী একটি বেপরোয়া গতিতে চলা একটি ট্রাক বিপরীত দিক থেকে আসা একটি অটোভ্যানকে চাপা দিলে এই দূর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে দুই ব্যবসায়ী নিহত হন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সাতৈর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. রাফিউল আলম মিন্টু বলেন, কাদিরদি এলাকা থেকে কীর্তন গান শুনে বাড়ি ফেরার পথে এ ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে দুই জন নিহত হন। আহত হয়েছেন পাঁচজন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আল আমিন বলেন, পরিবারের কোন অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

ইস্কনের দ্বারা গুম-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদের

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৬:২৩ পিএম
ইস্কনের দ্বারা গুম-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির আহ্বান তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদের

বাংলাদেশে সম্প্রতি ইসকন কর্তৃক পরিচালিত খুন, গুম এবং মুসলমানদের উপর নির্যাতন ও প্ররোচণামূলক কর্মকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তাহাফফুজে দ্বীন পরিষদ বাংলাদেশ।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) দুপুরে গণমাধ্যম পাঠানো
এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মুহাম্মাদ জাকির হুসাইন ফরিদী এবং মহাসচিব মুফতী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইসকনের নামে দেশে যে ধরনের গুম, খুন এবং উসকানিমূলক ও বিদ্বেষপূর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে, তা বাংলাদেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি, শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি।’

নেতৃদ্বয় বলেন, “আমরা দেশের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও আলেম সমাজকে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। বিশেষ করে, দেশের সব মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিবদের প্রতি আমাদের অনুরোধ— ‘আজকের জুমার খুতবায় যেন মুসল্লিদের সামনে ইসকন কর্তৃক পরিচালিত এই সন্ত্রাস ও নির্যাতনের বিষয়টি তুলে ধরা হয়, যাতে মানুষ সত্যটি জানতে পারে এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে।”

সংগঠনটি সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলে—
“ধর্মীয় সম্প্রীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার্থে উগ্রবাদী সন্ত্রাসী সংগঠন ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে হবে। ইসকন একের পর এক উসকানিমূলক ও ঘৃণাবাদী জঙ্গি কার্যক্রম চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ তদন্ত ও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি।”

রাতে বাসর, সকালে সালথায় আখক্ষেতে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর, ২০২৫, ৫:৫৮ পিএম
রাতে বাসর, সকালে সালথায় আখক্ষেতে মিলল বরের ঝুলন্ত লাশ

পারিবারিকভাবে হয় বিয়ে। ধুমধামে বরযাত্রী নিয়ে কনেকে আনা হয় বরের বাড়িতে। সব আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতে নবদম্পতিকে পাঠানো হয় বাসরঘরে। তবে ভাগ্যের নির্মম পরিহাস- সকালেই আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের লাশ পাওয়া যায়।

ঘটনাটি ফরিদপুরের সালথা উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের পিসনাইল গ্রামে ঘটে।

শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় বরের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

নিহত বরের নাম মো. জামাল ফকির (২৮)। সে পিসনাইল গ্রামের মো রোজব ফকিরের ছেলে। চার ভাই ও দুই বোনের মধ্যে জামাল ছিলেন সেজো। তবে বরের এই মৃত্যু নিয়ে রহস্য সৃষ্টি হয়েছে। পরিবারের দাবি, জামাল গলায় গামছা পেঁচিয়ে আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়ার সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। আর স্থানীয়রা বলছেন, আখক্ষেতের বেড়ার ওই বাঁশের সাথে ঝুলে আত্মহত্যা করা অসম্ভব।

বরের পরিবার জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) দুপুরে পারিবারিকভাবে পাশ্ববর্তী নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নের ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. লিটন ভূঁইয়ার মেয়ে রোকেয়া আক্তারকে (২৩) বিয়ে করেন জামাল ফকির। বিকেলে কনেকে নিয়ে বাড়িতে আসেন বর। রাতে নবদম্পতি বাসরঘরে শুয়ে ছিলেন।

শুক্রবার সকালে পিসনাইল গ্রামের মাঠে নিজ বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের সাথে গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় বর জামালের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান স্থানীয় কৃষকরা। পরে পরিবারের সদস্যরা গিয়ে লাশটি নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

স্থানীয়রা জানান, গলায় গামছা পেঁচানো অবস্থায় আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের যেভাবে মরদেহ ঝুলে ছিল, তাতে মনে হয় না সে আত্মহত্যা করেছে। কারণ বাঁশের আড়ার উচ্চতা ছিল ২ থেকে আড়াই ফুট। সেখানে ঝুলে আত্মহত্যা করলে পা মাটিতে মিশে যাবে।

 

নিহত বরের স্ত্রী রোকেয়া বলেন, সকালে মানুষের চিৎকার শুনে দরজা খুলতে গেলে দেখি দরজার বাইরে শিকল লাগানো। পরে প্রতিবেশীরা দরজা খুলে দিলে দেখি আমার স্বামীর লাশ জমির মধ্যে পড়ে আছে।

নিহতের বড় ভাই জালাল ফকির বলেন, আমার ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি খুবই রহস্যজনক। সে কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা করেনি। ঠিক কী কারণে এমন ঘটনা ঘটল, বুঝে উঠতে পারছি না।

 

সালথা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আতাউর রহমান বলেন, বৃহস্পতিবার ওই ছেলেটি বিয়ে করেন। রাতে বাসর ঘরে নতুন বউকে তিনি শুয়ে ছিলেন। সকালে বাড়ির পাশে একটি আখক্ষেতের বেড়ার বাঁশের আড়া থেকে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান পরিবার। ধারণা করা হচ্ছে তিনি আত্মহত্যা করেছে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।