খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৩ পৌষ, ১৪৩২

পৃথিবীর গভীরে কী রয়েছে

জাহিদ হোসাইন খান
প্রকাশিত: শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:৩৬ পিএম
পৃথিবীর গভীরে কী রয়েছে

আপনার পায়ের নিচে কী? সহজ উত্তরে বলবেন, মাটি। তার নিচে কী? এভাবে যেতে থাকলে আমরা একসময় পৃথিবীর কেন্দ্রে চলে যাব তা–ই না? সেই কেন্দ্রের পরিবেশের কথা আমরা অনেকেই জানি। গলিত লাভা আর উত্তপ্ত এক পরিবেশ বিরাজ করছে সেখানে। সেই এলাকার অবস্থা নিয়ে নতুন এক গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।

গবেষণায় জানা যাচ্ছে, পৃথিবীর কেন্দ্রের আশপাশে সব গলিত অংশ পৃথিবীর অংশ নয়। সেখানে বহুকালে আগে অন্য মহাজাগতিক বস্তুর অংশবিশেষ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একদল বিজ্ঞানী বলছেন, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে প্রাচীন প্রোটোপ্ল্যানেট থিয়া ও প্রোটো-আর্থের মধ্যে একটি বিশাল সংঘর্ষ ঘটেছিল। সেই সংঘর্ষে চাঁদের পাশাপাশি দুটি বিশাল মহাদেশ তৈরি হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। পৃথিবীর আবরণের মধ্যে এই অঞ্চলগুলো আটকা পড়েছে।

সংঘর্ষ হয়েছিল। সেই সংঘর্ষের ধ্বংসাবশেষ থেকেই চাঁদ তৈরি হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। থিয়ার আকার মঙ্গল গ্রহের সমান ছিল বলে অনুমান করা হয়। সাধারণভাবে বলা যায়, থিয়া ঘুরতে ঘুরতে আদি পৃথিবীর সীমানায় চলে এলে পৃথিবীর ওপর আছড়ে পড়ে। আর এতে ধ্বংসাবশেষ নিয়ে চাঁদের বিকাশ ঘটে। আশির দশকে প্রথমবার বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর কেন্দ্রের গভীরে অস্বাভাবিক পদার্থের সন্ধান পান। দুটি মহাদেশ-আকারের এই ব্লককে বৈজ্ঞানিক ভাষায় ব্লব বলছেন তাঁরা। দুটি ব্লবের একটি আফ্রিকা মহাদেশের নিচে ও অন্যটি প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে রয়েছে। একেকটি ব্লব চাঁদের আকারের দ্বিগুণ। পৃথিবীর কেন্দ্র যেসব উপাদানে তৈরি, এসব ব্লব তার চেয়ে ভিন্ন উপাদানে তৈরি। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী কিয়ান ইউয়ান বলেন, চাঁদের মতো উপগ্রহ ও মঙ্গল গ্রহের মতো বড় গ্রহগুলো তৈরির কোনো না কোনো পর্যায়ে এমন সংঘর্ষের মুখে পড়েছিল। আমরা গবেষণায় দেখেছি, প্রোটোপ্ল্যানেট থিয়া ও প্রোটো-আর্থের সঙ্গেও সংঘর্ষ হয়েছিল। গবেষণার জন্য সংগৃহীত নানা তথ্য কম্পিউটার সিমুলেশন ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।’

আফ্রিকা মহাদেশের নিচে ও অন্য একটি প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে প্রাপ্ত উপাদানগুলো আশপাশের আবরণের তুলনায় ২ থেকে সাড়ে ৩ শতাংশ বেশি ঘন। আবরণের এই অংশগুলো থিয়ার উপাদানকে প্রতিনিধিত্ব করে। থিয়ার ধ্বংসাবশেষ ১০ কিলোমিটারজুড়ে বিস্তৃত ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পৃথিবীর প্রথম দিকের বিবর্তনের সময় এসব পদার্থের কী পরিণতি হয়েছিল, তা নিয়ে আরও অনুসন্ধান চলছে। সাংহাই অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অবজারভেটরির গবেষক অধ্যাপক হংপিং ডেং বলেন, নতুন অনুসন্ধান পুরোনো ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করছে। সংঘর্ষের কারণে পৃথিবী প্রথম দিকে আকৃতি পেতে শুরু করে বলে মনে করা হতো।

অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী অধ্যাপক স্টিভেন ডেশ বলেন, নতুন তথ্য বলছে, চাঁদ তৈরির আগেও পৃথিবীতে থিয়ার উপাদান থাকতে পারে। কোটি কোটি বছর ধরে থিয়ার অংশ পৃথিবীর ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় রয়েছে বলা যায়। পৃথিবীর মধ্যে থিয়ার কোনো অংশবিশেষ এখনো যদি থাকে, তা ধীরে ধীরে পৃথিবীর কেন্দ্রে মিশে যাবে বা মুছে যাচ্ছে বলা যায়। কোটি কোটি বছর ধরে পৃথিবী ঘূর্ণনের মাধ্যমে নিজের কেন্দ্রে থিয়ার অংশগুলোকে গিলে ফেলছে। এটিই প্রথম গবেষণা, যা সেই ঘটনাকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এই গবেষণা দাবি করছে, থিয়ার অংশবিশেষ এখনো পৃথিবীর মধ্যে মূল-ম্যান্টল বা কেন্দ্রের সীমানায় অবস্থান করছে।

গবেষণাটি নেচার জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞানী অধ্যাপক এড গার্নেরো বলেন, ‘নতুন গবেষণা অনুসারে বলা যায়, পৃথিবীর ব্লব অন্য গ্রহের সংঘর্ষের অবশিষ্টাংশের সঙ্গে সংঘর্ষে আমাদের চাঁদ তৈরি হয়েছে। অন্য কথায়, বর্তমানে পৃথিবীর গভীরে থাকা বিশাল ব্লব আসলে বহির্জাগতিক বস্তুবিশেষ। পৃথিবীর মধ্যে সাধারণ কোনো ব্লব নেই, সব বহির্জাগতিক ব্লব আছে পায়ের নিচে। বিস্তৃত পরিসরের শিলা নমুনার সুনির্দিষ্ট বিশ্লেষণের মাধ্যমে আরও গবেষণার সুযোগ রয়েছে। আদিম পৃথিবী, গাইয়া ও থিয়ার বস্তুগত গঠন ও কক্ষপথের গতিশীলতা অনুমান করতে পারছি আমরা। সৌরজগতের অভ্যন্তরীণ গঠনের ইতিহাসকে বোঝার চেষ্টা করছি। সৌরজগতের বাইরে এক্সোপ্ল্যানেটের গঠন ও বাসযোগ্যতা বোঝার জন্য এ গবেষণার ফল কাজে আসবে।’

সূত্র: ফিজিস ডট অর্গ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

মিয়া রাকিবুল, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৩৪ পিএম
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার পরিত্যক্ত জমি এখন দৃষ্টিনন্দন খেলার মাঠ

ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘদিনের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে যাত্রা শুরু হলো একটি নিজস্ব ও সুপরিসর খেলার মাঠের।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বর্ণিল অনুষ্ঠানমালা প্রদর্শনের মাধ্যমে নবনির্মিত এই দৃষ্টিনন্দন মাঠটির আনুষ্ঠানিক পথচলা শুরু হয়েছে।

এতদিন উপজেলা প্রশাসনের জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানগুলো পরিষদের বাইরে স্থানীয় আরিফুজ্জামান সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। এবারই প্রথম উপজেলা পরিষদ চত্ত্বরে নিজস্ব মাঠে বিজয় দিবস উদযাপিত হলো।

​উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, পরিষদের পুরাতন ভবনের পেছনে বিশাল একখণ্ড নিচু জমি দীর্ঘকাল ধরে পরিত্যক্ত ও অকেঁজো অবস্থায় পড়েছিল। ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রফিকুল হক এই স্থানটিকে ভরাট করে একটি আধুনিক মাঠে রূপান্তরের উদ্যোগ নেন এবং স্থানীয় সমাজ সেবকদের সহযোগিতার আহ্বান জানান। ​ইউএনও’র সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে তরুণ সমাজসেবক তাজমিনউর রহমান তুহিন মাঠটি তৈরির দায়িত্ব নেন। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের বিদ্যাধর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মরহুম আলহাজ্ব আলী আহমেদ মৃধার ছেলে। তুহিন হযরত শাহ্ জালাল মৎস্য এ্যান্ড ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী ও লেবাজ সোয়েটার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান।

​ব্যক্তিগত অর্থায়ন ও ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় প্রায় এক মাস সময় ধরে বিপুল পরিমাণ মাটি ভরাট করে জায়গাটিকে একটি আধুনিক ও সমতল খেলার মাঠে রূপান্তর করেন তুহিন। তার এই নিঃস্বার্থ অবদানের ফলে বর্তমানে মাঠটি সবুজ ঘাসে আচ্ছাদিত এক মনোরম স্থানে পরিণত হয়েছে। ১৬ ডিসেম্বর এই মাঠেই অত্যন্ত সুশৃঙ্খলভাবে কুচকাওয়াজ ও ক্রীড়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

​নতুন মাঠে প্রথম অনুষ্ঠান সফল হওয়ায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে তাজমিনউর রহমান তুহিন বলেন, ‘তৎকালীন ইউএনও রফিকুল হকের অনুপ্রেরণায় আমরা কাজটি শুরু করি। আজ যখন দেখলাম এই সুন্দর মাঠে জাতি শ্রদ্ধাভরে বিজয় দিবস উদযাপন করছে, তখন মনটা ভরে গেল। এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি স্থায়ী মিলনকেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে।’

​এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে আলফাডাঙ্গা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মনিরুল হক সিকদার বলেন, ‘এটি আলফাডাঙ্গাবাসীর জন্য একটি বড় প্রাপ্তি। উপজেলা পরিষদের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এমন একটি মাঠের অভাবে জাতীয় অনুষ্ঠান আয়োজনে যে সীমাবদ্ধতা ছিল, তা দূর হলো। সমাজসেবক তুহিনের মতো তরুণরা এগিয়ে এলে সমাজের আমূল পরিবর্তন সম্ভব।’

​উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সুধীজন মনে করছেন, এই মাঠটি শুধু খেলাধুলা নয়, বরং বছরজুড়ে বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি পালনের প্রাণকেন্দ্রে পরিণত হবে।

সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

শিশির খাঁন, সদরপুর:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮:৪৬ পিএম
সদরপুরে অভিযানের দ্বিতীয় দিনেও ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করল প্রশাসন

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণা করার পর নির্বাচন কমিশন সকল প্রকার রাজনৈতিক ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণের নির্দেশনা দেন। গত শনিবার রাত নয় টায় ৪৮ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও নেতাকর্মীরা ব্যানার ফেস্টুন ও পোস্টার অপসারণ করেননি তারা। সেই নির্দেশনা না শুনায় ফেস্টুন অপসারণ করেছে প্রশাসন।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত আনজুম পিয়ার নেতৃত্বে উপজেলা প্রশাসন ব্যানার ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ অভিযান শুরু করেন।

অভিযানের দ্বিতীয় দিনে সদরপুর বাজার, কৃষ্ণপুর মোড় ও থানার মোড় এলাকায় অপসারণ করেন। এ সময় ভূমি অফিসের কর্মচারী সহ গ্রাম পুলিশের সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

সদরপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা ব্যানার-ফেস্টুন এবং পোস্টার অপসারণ করেন নাই বিধায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অপসারণ অভিযান শুরু করেছি।

তিনি আরও বলেন, ফরিদপুর-৪ নির্বাচনী এলাকার সম্ভাব্য সকল প্রার্থীর সব ধরণের পোস্টার, ব্যানার, দেয়াল লিখন, বিলবোর্ড , গেইট, তোরণ বা ঘের, প্যান্ডেল ও আলোকসজ্জা ইত্যাদি প্রচার সামগ্রী নিজ খরচে/দায়িত্বে অপসারণ করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।

বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:১৮ পিএম
বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ফরিদপুর থেকে ঢাকায় পাঠানো হলো ২৪ রোগী

ফরিদপুর-৪ সংসদীয় আসনের আওতাধীন সদরপুর উপজেলা থেকে ২৪ জন অসহায় ও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী রোগীকে বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশনের জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) তাদের ঢাকায় পাঠানো হয়।

এর আগে দুই ধাপে সদরপুর ও চরভদ্রাসন উপজেলায় বিনামূল্যে চোখের ছানি অপারেশন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়। প্রথম ধাপে সদরপুর উপজেলায় ৩৫ জন এবং দ্বিতীয় ধাপে চরভদ্রাসন উপজেলায় ২৮ জন রোগীর চোখের ছানি অপারেশন (লেন্সসহ) সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছিল।

এই পুরো কার্যক্রমের সার্বিক ব্যবস্থাপনা, তদারকি ও দেখভাল করছেন ফরিদপুর-৪ আসনের ধানের শীষের মনোনীত প্রার্থী এবং বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম খান বাবুল।

জানা গেছে, চোখের চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি এর আগেও একাধিকবার ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প (ওষুধসহ) এবং ফ্রি চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করেছেন। এসব কার্যক্রমের মাধ্যমে সাধারণ ও দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা সেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে চলেছেন তিনি।

এ বিষয়ে শহিদুল ইসলাম খান বাবুল জানান, মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করার অংশ হিসেবেই এসব মানবিক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও এ ধরনের সেবামূলক কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।