বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে। যদিও ঘূর্ণিঝড় সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি)।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) বিডব্লিউওটির ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ তথ্য জানানো হয়।
পোস্টে বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় ‘মোন্থা’ এখন পর্যন্ত সরাসরি বাংলাদেশে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নেই। এটি বাংলাদেশ থেকে অনেক দূরে ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে আঘাত হানতে পারে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) রাতে। তাই এটি বাংলাদেশে আঘাত হানবে এমন কোনো গুজবে আপাতত কেউ বিভ্রান্ত হবেন না।
তবে এর প্রভাবে বাংলাদেশে বৃষ্টির সম্ভাবনা আছে। মূলত এই বৃষ্টির সম্ভাবনাকে কেন্দ্র করেই বৃষ্টিবলয় আঁখি আসতে পারে।
বিডব্লিউওটির আরও জানায়, বৃষ্টিবলয় আঁখি আসার কারণ হলো ঘূর্ণিঝড়ের দূরবর্তী প্রভাব এবং ঘূর্ণিঝড় স্থলভাগে আঘাতের পরে দিক পরিবর্তন করে দুর্বল হয়ে লঘুচাপ বা সার্কুলেশন আকারে বাংলাদেশের রংপুর রাজশাহী বিভাগের ওপরে বা কাছাকাছি আসতে পারে। তখন দেশের ভেতরে বৃষ্টির জন্য বেশ অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবে। তবে সারা দেশে একযোগে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।
কারণ এটি কোনো বর্ষাকালীন বৃষ্টিবলয় নয় যে সারা দেশে টানা ভারি বর্ষণ বা অধিকাংশ স্থানে ২০০/৩০০ মিমি বৃষ্টি হবে। এটি একটি ক্রান্তীয় বা সিস্টেম কেন্দ্রিক বৃষ্টিবলয়। এই ধরনের বৃষ্টি বলয়ে দেশের অল্প কিছু স্থানে ভারি বৃষ্টি এবং বাকি স্থানগুলোতে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি হয়ে থাকে। এমনকি সিস্টেমের গতিপথের ওপরে নির্ভর করে অনেক স্থান বৃষ্টিহীন ও থাকতে পারে।
পোস্টে আরও বলা হয়, তেমনি বৃষ্টিবলয় আঁখির তীব্রতা এবং সক্রিয়তা দুটোই নির্ভর করছে ঘূর্ণিঝড় মোন্থার গতিপথের ওপরে। তাই আমরা এখনও বৃষ্টি বলয়ের জেলাভিত্তিক আপডেট দেইনি। কারণ বর্তমানে শুষ্ক মৌসুম চলছে। যার ফলে অনেকেই কৃষিকাজসহ নানান কাজ করছেন। এ সময় সামান্য বৃষ্টি হলেও অনেকের ক্ষতি হতে পারে। আবার হালকা বৃষ্টি কৃষি কাজে উপকার ও হতে পারে। কিন্তু ভারি বৃষ্টি হলেই বিপদ।
এদিকে, ঘূর্ণিঝড়টি গতকাল রাত ৩টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩৬০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩০০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৮০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিমি দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও পশ্চিম-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হতে পারে। এটি আগামীকাল মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) সন্ধ্যা বা রাত নাগাদ ভারতের অন্ধ্র প্রদেশ উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
এতে আরও বলা হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিমির মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিমি, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ঘণ্টায় ৮৮ কিমি পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।
এ সময় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়াও উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
আপনার মতামত লিখুন
Array