খুঁজুন
মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৮ পৌষ, ১৪৩২

৪০ বছরের পর প্রত্যেক পুরুষের যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি

স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:১৪ পিএম
৪০ বছরের পর প্রত্যেক পুরুষের যেসব স্বাস্থ্য পরীক্ষা জরুরি

বয়স ৪০ পেরোলেই পুরুষদের শরীরে নীরবে নানা জটিলতা বাসা বাঁধতে শুরু করে। কর্মব্যস্ত জীবন, দীর্ঘ সময় বসে কাজ করা, মানসিক চাপ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের অভাব—সব মিলিয়ে পুরুষদের স্বাস্থ্যঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। শুধু ব্যক্তিগত নয়, এর প্রভাব পড়ছে পরিবার ও সামাজিক জীবনেও। তাই এ বয়সের পর নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সচেতনতা এখন সময়ের দাবি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অসংক্রামক রোগ (এনসিডি), হৃদ্‌রোগ, ক্যানসার ও প্রজননজনিত সমস্যার ঝুঁকি ৪০-এর পর উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়। তবে আগেভাগে সঠিক পরীক্ষা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নিলে এসব ঝুঁকি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।

অসংক্রামক রোগ

পুরুষদের মধ্যে রক্তে চর্বি (লিপিড) ও রক্তে শর্করার মাত্রা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, টাইপ-২ ডায়াবেটিসের সঙ্গে পেটের ভেতরের অতিরিক্ত চর্বি (ভিসেরাল ফ্যাট) জমার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। এর ফলে প্রতি ছয়জন পুরুষের একজনের শরীরে টেস্টোস্টেরন হরমোনের মাত্রা কমে যাচ্ছে, যা ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও বাড়াচ্ছে।

রেডক্লিফ ল্যাবসের ২ লাখের বেশি নমুনা বিশ্লেষণে দেখা যায়, যাদের লিপিড প্রোফাইল অস্বাভাবিক, তাদের মধ্যে ৬৩ শতাংশই পুরুষ। একইভাবে লিপিড ও রক্তে শর্করা—দুটোই অস্বাভাবিক এমন ব্যক্তিদের মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ পুরুষ। এ তথ্য পুরুষদের জন্য বাড়তি সতর্কতার বার্তা দিচ্ছে।

হৃদ্‌রোগ

উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, অতিরিক্ত মানসিক চাপ ও বসে বসে জীবনযাপন—এই চারটি কারণ একসঙ্গে পুরুষদের করোনারি হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। চিকিৎসকরা বলছেন, নিয়মিত হাঁটা বা ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্তচাপ ও রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখলে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমানো সম্ভব।

ক্যানসার

বিশ্বজুড়ে পুরুষদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ ক্যানসার। ভারতের প্রেক্ষাপটে ফুসফুস ও প্রোস্টেট ক্যানসার পুরুষদের মধ্যে বেশি দেখা যাচ্ছে। ধূমপান পরিহার, নিয়মিত প্রোস্টেট পরীক্ষা, প্রয়োজন অনুযায়ী ফুল বডি স্ক্রিনিং এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ক্যানসারের ঝুঁকি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।

প্রজনন ও যৌন স্বাস্থ্য

প্রজনন সমস্যায় শুধু নারীরাই নয়, পুরুষরাও সমানভাবে ভুগছেন। অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, হরমোনের পরিবর্তন, অতিরিক্ত মদ্যপান ও ধূমপান এবং টেস্টোস্টেরনের মাত্রা কমে যাওয়াই এর প্রধান কারণ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা, ধূমপান ও অ্যালকোহল বর্জন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস প্রজননস্বাস্থ্য রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ইরেকটাইল ডিসফাংশন (যৌন দুর্বলতা), যা একসময় বয়সজনিত সমস্যা হিসেবে ধরা হতো, এখন তুলনামূলক কম বয়সী পুরুষদের মধ্যেও দেখা যাচ্ছে। এটি প্রজননস্বাস্থ্য বিষয়ে বাড়তি মনোযোগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরছে।

কেন জরুরি প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষা

স্বাস্থ্যঝুঁকি মোকাবিলায় প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিকল্প নেই। ডায়াবেটিস, লিপিড প্রোফাইল, প্রোস্টেট পরীক্ষা, হৃদ্‌যন্ত্রের বিভিন্ন পরীক্ষা—এসব নিয়মিত করালে রোগ আগেভাগে শনাক্ত করা সম্ভব হয়। ফলে সময়মতো চিকিৎসা শুরু করে জটিলতা এড়ানো যায়।

বিশ্ব পুরুষ দিবস উপলক্ষে রেডক্লিফ ল্যাবসের মেডিকেল ল্যাবরেটরি ডিরেক্টর ডা. সোহিনী সেনগুপ্ত বলেন, ‘শুধু অসুস্থ হলে চিকিৎসা নয়, বরং প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার মাধ্যমে সামগ্রিক সুস্থতাকে গুরুত্ব দিতে হবে। পুরুষদের স্বাস্থ্য নিয়ে সামাজিক সংকোচ ভেঙে খোলামেলা আলোচনা প্রয়োজন। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানে এমন অনেক পরীক্ষা রয়েছে, যা ঝুঁকি আগেভাগেই শনাক্ত করতে পারে। সময়মতো পদক্ষেপই সুস্থ জীবনের মূল চাবিকাঠি।’

সুস্থ জীবনের পথে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান

ভারতসহ উপমহাদেশে অসংক্রামক রোগের প্রকোপ বয়স নির্বিশেষে বাড়ছে। সুস্থ থাকতে হলে এখনই স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনকে অভ্যাসে পরিণত করতে হবে—নিজের জন্য, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্যও।

বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাস্থ্যই আসল সম্পদ। নিজের স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিন, নিয়মিত পরীক্ষা করুন, সচেতন জীবনযাপন করুন—কারণ সুস্থ জীবনই পারে পরিবার ও সমাজকে এগিয়ে নিতে।

সূত্র দ্য হেলথ সাইট

ফরিদপুরে ক্লুলেস অটোরিকশা চালক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, গ্রেপ্তার দুই আসামি

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২:৫৫ পিএম
ফরিদপুরে ক্লুলেস অটোরিকশা চালক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচন, গ্রেপ্তার দুই আসামি

ফরিদপুরের কলাবাগানের ক্লুলেস সেই অটোরিকশা চালক হত্যাকাণ্ডের মূল রহস্য উদ্ঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানানো হয়।

পুলিশ জানায়, গত ১৮ ডিসেম্বর সকালে ফরিদপুর শহরের ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাদপুর এলাকার একটি কলাবাগান থেকে টিপু শেখ (৪০) নামে এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে তার বড় ভাই সিদ্দিক শেখ বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে।

মামলার পর পুলিশ সুপার মো. নজরুল ইসলামের নির্দেশনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আজমীর হোসেনের নেতৃত্বে একটি চৌকস তদন্ত দল মাঠে নামে। তদন্তকালে প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রথমে রজিব খান (৪১) নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক তথ্যের ভিত্তিতে অপর আসামি মান্নান হাওলাদারকে (৩২) আটক করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, আসামি রাজিব খান ও নিহত টিপু দুজনেই একটি ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। পাশাপাশি নিহত টিপু জীবিকা নির্বাহের জন্য অটোরিকশা চালাতেন। ঘটনার দিন গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা আনুমানিক ৭টার দিকে নেশা করার প্রলোভন দেখিয়ে কাজ শেষে রাজবাড়ী সড়কের মোড়ে নিহত টিপুর সঙ্গে দেখা করেন আসামি রাজিব।

সে সময় আসামি রাজিবের কাছে একটি পুরাতন চাকু ও গাড়ির লোহার একটি পাতি ছিল। পরে তারা নিহত টিপুর রিকশায় করে ফরিদপুরের চাঁদপুর গ্রামের একটি নির্জন স্থানে পুকুরপাড়ের কলাবাগানে যান। সেখানে তারা গাঁজা ও সিগারেট সেবন করেন।

একপর্যায়ে আসামি রাজিব হঠাৎ করে লোহার পাতি দিয়ে নিহত টিপুর মাথায় সজোরে আঘাত করেন। টিপু মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তার মাথা ও মুখে আরও চার থেকে পাঁচবার আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।

ঘটনার পর ব্যবহৃত চাকু ও লোহার পাতি পাশের একটি পুকুরে ফেলে দেন আসামি রাজিব। এরপর নিহত টিপুর মরদেহ কলাবাগানে ফেলে রেখে তার রিকশাটি নিয়ে ফরিদপুর শহরের র‌্যাফেলস ইন মোড়ে যান। সেখানে তিনি মান্নান হাওলাদার নামে এক ব্যক্তির কাছে লুট করা রিকশাটি বিক্রির জন্য দেন। পরদিন রিকশা বিক্রির বাবদ মান্নান হাওলাদার আসামি রাজিবকে ১৪ হাজার ৫০০ টাকা প্রদান করেন।

পুলিশ আরও জানায়, গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে ফরিদপুরের সদর উপজেলার ঈশান গোপালপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর গ্রামের একটি কলাবাগান থেকে টিপু সুলতান নামে এক অটোরিকশা চালকের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনার একদিন পর নিহতের বড় ভাই বাদী হয়ে ফরিদপুরের কোতয়ালী থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। এরপর এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তারে মাঠে নামে পুলিশ।

ফরিদপুরে গ্রাহকের পাশে বেস্ট ইসলামী লাইফ ইনসুরেন্স: মৃত্যু দাবি চেক হস্তান্তর

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১:৪৪ পিএম
ফরিদপুরে গ্রাহকের পাশে বেস্ট ইসলামী লাইফ ইনসুরেন্স: মৃত্যু দাবি চেক হস্তান্তর

বেস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি’র উদ্যোগে ফরিদপুরে মৃত্যু দাবি চেক হস্তান্তর ও দোয়া অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ১১ টার দিকে শহরের জনতা ব্যাংকের মোড়ের বেস্ট ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্সের ফরিদপুর বিভাগীয় অফিস প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বেস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স পিএলসি’র উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশাররফ হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও হেড অব ট্রেনিং মো. জামিল উদ্দিন মিন্টু এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট এজেন্সি ডিরেক্টর মিসেস কামরুন্নাহার জুথি।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এজেন্সি ডিরেক্টর সাজেদ মাতুব্বর।

অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার মাধ্যমে কর্মসূচি সূচনা করা হয়। পরে বিভিন্ন পলিসি গ্রাহকের উত্তরাধিকারীদের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে মৃত্যু দাবি চেক তুলে দেওয়া হয়।

এ সময় উপকারভোগীরা সময়মতো দাবি পরিশোধ করায় প্রতিষ্ঠানটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোশাররফ হোসেন বলেন, “বেস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স সবসময় শরিয়াহসম্মত ও গ্রাহকবান্ধব সেবা প্রদানে অঙ্গীকারবদ্ধ। গ্রাহকের দুর্দিনে পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। মৃত্যু দাবি দ্রুত ও স্বচ্ছভাবে পরিশোধ করা আমাদের প্রতিষ্ঠানের নৈতিক দায়িত্ব।” তিনি আরও বলেন, বীমা শুধু একটি আর্থিক সুরক্ষা নয়, বরং পরিবারের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তার একটি শক্ত ভিত্তি।

বিশেষ অতিথিরা তাদের বক্তব্যে বীমার গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, সচেতনভাবে বীমা গ্রহণ করলে অনিশ্চিত জীবনে আর্থিক ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসে। তারা বেস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের সেবার মান ও দাবি নিষ্পত্তির স্বচ্ছতার প্রশংসা করেন।

অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ দোয়া পরিচালনা করা হয়। এ সময় কোম্পানির কর্মকর্তা-কর্মচারী, এজেন্ট, গ্রাহক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

‘শিল্পী, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সম্মান না পেলে বাংলাদেশে ফিরব না’

বিনোদন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১২:৪০ পিএম
‘শিল্পী, সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান সম্মান না পেলে বাংলাদেশে ফিরব না’
বাংলার অন্যতম সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান ছায়ানটে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনার পর নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশে আপাতত আর না ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খ্যাতিমান সংগীতশিল্পী সিরাজ আলী খান। তিনি উপমহাদেশের প্রখ্যাত সংগীতগুরু ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর প্রপৌত্র এবং মাইহার ঘরানার প্রতিনিধিত্বশীল শিল্পী। বর্তমানে তিনি ভারতে বসবাস করেন।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকার ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা ছিল সিরাজ আলী খানের।
কিন্তু বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে ছায়ানট প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়, আগুন দেওয়া হয়। এরপর শিল্পী ও তার সহযোগীদের মধ্যে চরম নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হয়।এ বিষয়ে দেওয়া এক বিবৃতিতে সিরাজ আলী খান বলেন, আমি সবসময় বাংলাদেশে ফিরেছি আমার শেকড়ের টানে। আমার পরিবারের সংগীত, বড়ো বাবা ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ঐতিহ্য এবং মাইহার ঘরানার জীবন্ত ধারাটি ভাগ করে নেওয়ার জন্য।
আমি এসেছিলাম শুধু সংগীত, বিনয় ও শ্রদ্ধা নিয়ে। কিন্তু এই প্রথম আমাদের জীবনের নিরাপত্তা নিয়ে ভয় পেয়েছি।তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নিজেকে একজন ভারতীয় শিল্পী হিসেবে পরিচয় দেওয়া যে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে, তা আমি কখনো কল্পনাও করিনি। সৌভাগ্যক্রমে আমরা নিরাপদে ভারতে ফিরে আসতে পেরেছি।
সিরাজ আলী খান মনে করেন, ছায়ানটে হামলার ঘটনাটি কেবল একটি স্থাপনা বা বাদ্যযন্ত্রের ওপর আক্রমণ নয়। তিনি বলেন, এটি শিল্পী, সংস্কৃতি এবং আমাদের যৌথ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ওপর সরাসরি আঘাত।ভারাক্রান্ত হৃদয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, শিল্পী, সংগীত এবং সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান যতদিন না যথাযথ সম্মান ও সুরক্ষা পাবে, ততদিন আমি বাংলাদেশে আর ফিরব না।

তবে হতাশার মধ্যেও আশার কথা শোনান এই শিল্পী। তার ভাষায়, আমি এখনো বিশ্বাস করি সংগীত মানুষের মাঝে সেতু তৈরি করে।

একদিন সেই পরিবেশ ফিরে আসবে যখন শিল্প ও সংস্কৃতি আবার নিরাপদ হবে- এই আশাই রাখি।উল্লেখ্য, গত ৮ অক্টোবর ঢাকার লালবাগ কেল্লায় ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বর্ণাঢ্য আয়োজনের ধ্রুপদী সংগীতের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। সেই অনুষ্ঠানেও সংগীত পরিবেশন করে প্রশংসিত হয়েছিলেন সিরাজ আলী খান। এরপর গেল ১৬ ডিসেম্বর ঢাকায় এসেছিলেন তিনি।