খুঁজুন
বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০ পৌষ, ১৪৩২

নিউজ এইট

প্রাইম আইটি ওয়ার্ল্ড নিউজ-২৪ ডেমো নিউজ এইট

অনলাইন ডেস্ক ।।
প্রকাশিত: রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩, ৫:৩০ পিএম
প্রাইম আইটি ওয়ার্ল্ড নিউজ-২৪ ডেমো নিউজ  এইট

আমি খুব সাধারণ মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে রিয়া। আজ আমার অষ্টম মঙ্গলা। মনটা আমার বেশ খুশি খুশি এটা কখনোই বলতে পারবো না। না, আপনারা যা ভাবছেন ভুল। আপনারা বলবেন বিয়েটা তো আমি নিজেই নিজের ইচ্ছেয় করেছি তাহলে আপত্তিটা কোথায়?

যেটুক খুশি আমায় দেখছেন সেটা আমি বাপের বাড়ি যাচ্ছি বলে শুধু মনটা খুশি। কিন্তু আগামী পরশু আমি আর আমার বর বাবাজীবন যাচ্ছি প্রথমবার একসাথে ঘুরতে থুড়ি মধুচন্দ্রিমা যাপনে। তাই এতো চিন্তা। আসলে অভি আমার ফোনে কথা বলছে না ঠিক মতো সেই বিয়ে দিন থেকে। অথচ ওর কথা বিয়েটা আমি করলাম।

ও হ্যাঁ ভুলেই গেছি, আপনাদের সাথে তো আমার বরের এখনো পরিচয় করাইনি। আমার বর বুবাই দা। আমাদের পরিচয় প্রায় সাত বছর হতে চলল। সেই যখন ক্লাস নাইন আমি যাচ্ছিলাম ঝড়ের বেগে সাইকেল চালিয়ে টিউশন পড়তে। তখন আমি সাইকেল চালানোতে ছেলেদেরও হার মানাই। তো সেই ঝড়ের বেগের সাইকেল এ ধাক্কা লাগলো এক শান্ত সৌম্য নিরীহ ছেলের। সেই ছেলেটিই এই আমার পতিদেব মিস্টার মানব মন্ডল। বিদেশে চাকরি করে কিছু পয়সা-করি করে আজ আমাকে বিয়ে করে জীবনে সবচেয়ে বড় কিছু পাওয়া হয়ে গেছে বলে দাবি করছে।

আজকাল বুবাই হাসতে হাসতে বলে “ধাক্কাটা সেদিন শরীরে লেগেছিল না হৃদয়ে কে জানে”। যাক গে ওর কথা বাদ দিন। তো সেই ঘটনার পর অনেক ওঠানামা আর ভুল বোঝাবুঝি ঠিক বোঝাবুঝির পর আজ আমাদের অষ্টম মঙ্গলা। সে গল্প না হয় আর এক দিন করব। ফিরে আসি আজকের দিনে। আমার অনেক দিনের স্বপ্ন ছিল যে আমি অভি সাথে হানিমুন যাবো পাহাড়ে। আমার এই ‘আপাত শান্ত মনের দুরন্ত’ বর কে নিয়ে একটু ঘুরতে যাবো।

কিন্তু অভি ফোন ধরছে না কেন? ও বলেছিলো দার্জিলিং যে হোটেলটা ও বুকিং করেছে সেটা ওর বিশেষ জানাশোনা। বুবাই এর গল্পটি ওখানে শেষ করে আমি ওর সম্পত্তিতে রাজ করবো। আমি রাজি হয়ে গিয়েছিলাম কিন্তু এখন মনটা মানছে না। একটা মানুষের জীবন শেষ করে দেবো, লোকটা তো আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।

যাক বাঁচা গেলো আজ আমার জন্মদিন। সারপ্রাইজ হিসেবে একটা দলিল উপহার দিয়েছেন বুবাই আমাকে। লাটাগুড়িতে একটা কটেজ কিনেছেন উনি আমার জন্য হানিমুনে যাবো আমরা ওখানেই। সারাদিন বেশ ভালো কাটলো কিন্তু মন খারাপ হলো বিকাল বেলায়।

আমার আর উনার মামাতো বোন অয়ন্তিকার জন্মদিন এক দিনে বিকালে একটা সারপ্রাইজ পার্টি আয়োজন করা হয়েছিল। আর সেখানেই আমার জন্য ছিলো আরো একটা সারপ্রাইজ। অভি আর অয়ন্তিকার এঙ্গেজমেন্ট। অথচ আমাদের বিয়েতেই ওদের আলাপ। শিল্পপতির মেয়ে বলে বোধহয় অতো তাড়াতাড়ি সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে অভি।

বাড়ি ফিরে মনটা কিছুতেই ভালো করতে পারলাম না। শুয়ে পরলাম। উনি বললেন “তোমার মোবাইলটা দেবে একটু একটা গেমস খেলবো। দিয়ে দিলাম।” কি ধরণের মানুষ এই লোকটি কে জানে! কি ধাতুর তৈরি কে জানে? আজ উনি অভি আর আমার ঝগড়াটা দেখেছেন। অভি স্পষ্ট বলেছে, আমি বুবাইকে ঠকিয়েছি তাই ও আমাকে ঠকিয়ে কোনো ভুল করেনি।

সকাল বেলায় উঠে আরো একটা সারপ্রাইজ। অভি আয়ন্তিকাও আসলো আমাদের সাথে। দিনটা ভালো কাটলো। মানে আমি চেষ্টা করলাম সব কিছু ভুলে নতুন করে শুরু করতে। অভি বোধহয় আমাকে কোনদিন ভালোবাসে নি। ও বেশ নির্লিপ্ত। অয়ন্তিকাকে খুশি করতে ব্যাস্ত। আয়ন্তিকা হঠাৎ ঠিক করলো বাইক রেসিং করবে। আমি আপত্তি করলাম ঠিকই কিন্তু বুবাই এর ওপর জোর খাটানোর অধিকার বোধহয় আমার হয়নি এখনো। তাই বেশি জোর ফলাতে চাইলাম না। তবে মনে মনে চাইলাম একটা দিনের জন্যে হিরো হোক সবার চোখে।

ফরিদপুরে কনকনে শীতেও থেমে নেই জনজীবন

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১১:২৫ এএম
ফরিদপুরে কনকনে শীতেও থেমে নেই জনজীবন

ফরিদপুরে হঠাৎ করে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া আর কমে যাওয়া তাপমাত্রায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। বিশেষ করে ভোরের দিকে শীতের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। তবুও জীবিকার তাগিদে থেমে নেই মানুষের দৈনন্দিন চলাচল ও কর্মব্যস্ততা।

ভোর থেকেই শহরের প্রধান সড়কগুলোতে দেখা যায় রিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চলাচল। শীত উপেক্ষা করে অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবীরা বেরিয়ে পড়ছেন নিজ নিজ গন্তব্যে। অনেকেই গরম কাপড়, মাফলার, টুপি ও হাতমোজা পরে শীত মোকাবিলা করছেন। আবার নিম্নআয়ের মানুষের অনেককে দেখা যাচ্ছে খোলা আকাশের নিচে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করতে।

শহরের কাঁচাবাজারগুলোতেও সকাল থেকেই ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সবজি বিক্রেতা, মাছ ও মাংস ব্যবসায়ীরা শীতের মধ্যেই পসরা সাজিয়ে বসেছেন। ক্রেতারাও প্রয়োজনের তাগিদে বাজারে আসছেন, যদিও শীতের কারণে অনেকের মুখে অস্বস্তির ছাপ স্পষ্ট। এক সবজি বিক্রেতা বলেন, “শীত বেশি হলেও বেচাকেনা থেমে নেই, পেটের দায়ে বসতেই হয়।”

অন্যদিকে, শীতের প্রভাব পড়েছে খেটে খাওয়া ও ছিন্নমূল মানুষের জীবনে। ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসবাসকারীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। শীতবস্ত্রের অভাবে শিশু ও বৃদ্ধরা সবচেয়ে বেশি কষ্ট পাচ্ছেন। অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও সামাজিক উদ্যোগে শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল ও গরম কাপড় বিতরণ শুরু হলেও তা এখনও পর্যাপ্ত নয় বলে জানান ভুক্তভোগীরা।

এদিকে চিকিৎসকরা শীতজনিত রোগ থেকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরের ঝুঁকি বেশি থাকায় গরম কাপড় পরা, কুসুম গরম পানি ব্যবহার এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সব মিলিয়ে কনকনে শীত ফরিদপুরের মানুষের জীবনযাত্রায় কিছুটা কষ্ট বাড়ালেও জীবন থেমে নেই। সংগ্রাম আর জীবিকার তাগিদে শীত উপেক্ষা করেই প্রতিদিনের পথচলা অব্যাহত রেখেছে এ জেলার মানুষ।

শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরে শুরু হচ্ছে ৯ম ঘুড়ি উৎসব

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৯:৫৩ এএম
শৈশবের স্মৃতি ফিরিয়ে আনতে ফরিদপুরে শুরু হচ্ছে ৯ম ঘুড়ি উৎসব

বছর ঘুরে আবারও ফিরে এলো বহুল প্রতীক্ষিত Papertech Industries Ltd-এর ৯ম ঘুড়ি উৎসব। শৈশবের হারানো আনন্দ, আকাশভরা রঙিন ঘুড়ি আর প্রাণের উচ্ছ্বাসে মুখর হতে যাচ্ছে ফরিদপুর। পৌষের হিম শীতল সকালে ছোট-বড় সবাইকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দিতে এই ব্যতিক্রমী আয়োজন আবারও ডাকছে ঘুড়ি ও নাটাই হাতে মাঠে নামতে।

আয়োজকদের ভাষায়, এই ঘুড়ি উৎসব শুধু বিনোদনের নয়—এটি আমাদের হারিয়ে যেতে বসা ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ি সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার এক আন্তরিক প্রয়াস। প্লাস্টিক আর প্রযুক্তির যুগে শৈশবের সেই কাগজের ঘুড়ি, বাঁশের কাঠামো আর সুতোয় জড়িয়ে থাকা আবেগকে আবার জীবন্ত করতেই এই আয়োজন।

আগামী ২৭ ডিসেম্বর, শনিবার, ফরিদপুরের ধলার মোড় এলাকায় অনুষ্ঠিত হবে এই উৎসব। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত চলবে ঘুড়ি ওড়ানো, নানা রকম ঐতিহ্যবাহী ঘুড়ির প্রদর্শনী এবং আনন্দঘন মিলনমেলা। শিশুদের পাশাপাশি তরুণ-তরুণী ও বয়োজ্যেষ্ঠরাও ফিরে যেতে পারবেন তাদের শৈশবের স্মৃতিময় দিনগুলোতে।

এই উৎসবের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে রয়েছে Papertech Industries Limited—যারা ধারাবাহিকভাবে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করে আসছে। বিশেষ সহযোগী পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে Fustan Emporium Limited। এছাড়াও সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হিসেবে যুক্ত রয়েছে Eblum Cafeteria, Times University Bangladesh, EPD IT Solution, Digital Plus Faridpur—যারা এই আয়োজনকে আরও সমৃদ্ধ করতে পাশে দাঁড়িয়েছে।

পুরো আয়োজন বাস্তবায়ন করছে ফরিদপুর সিটি অর্গানাইজেশন, যারা স্থানীয় সংস্কৃতি ও জনসম্পৃক্ত কর্মসূচি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।

আয়োজকদের প্রত্যাশা, এবারের ঘুড়ি উৎসব শুধু একটি দিনের অনুষ্ঠান নয়, বরং ফরিদপুরের সাংস্কৃতিক ক্যালেন্ডারে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হয়ে থাকবে।

রঙিন ঘুড়িতে ভরে উঠবে আকাশ, হাসি-আনন্দে মুখর হবে চারপাশ—শৈশবের সেই নির্মল আনন্দ ফিরে পেতে সবাইকে আমন্ত্রণ ৯ম ঘুড়ি উৎসবে।

সরিষা ফুলের মাঝে জমে থাকা এক হারানো শৈশব

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৭:৩৩ এএম
সরিষা ফুলের মাঝে জমে থাকা এক হারানো শৈশব

সরিষার হলুদ ফুলে ভরা বিস্তীর্ণ মাঠ। রোদে ঝলমল করে ওঠা গ্রামীণ প্রান্তর। সেই মাঠের মাঝখানে চার-পাঁচটি শিশু—মুখে অদম্য হাসি, শরীরে কাদা-মাখা জামা, হাতে পুরোনো একটি চাকার রিম। কেউ সেটি ঠেলে দিচ্ছে, কেউ দৌড়ে পিছু নিচ্ছে। ছবিটি এক নজরে আনন্দের হলেও, গভীরে তাকালে ধরা পড়ে হারিয়ে যেতে বসা এক শৈশবের নীরব আর্তনাদ।

এই শিশুরা কোনো দামি খেলনার দাস নয়। তাদের খেলাধুলা জন্ম নেয় মাঠে, মাটিতে, প্রকৃতির কোলে। একসময় গ্রামবাংলার প্রায় প্রতিটি শৈশবই এমন ছিল। বিকেলের আলো ফুরোতে না ফুরোতেই মাঠে নেমে পড়ত শিশুরা—ডাংগুলি, মার্বেল, চাক্কা ঘোরানো, লুকোচুরি। এখন সেই দৃশ্য ক্রমেই বিরল। মোবাইল ফোন, ট্যাব আর শহুরে ব্যস্ততা গ্রাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়েছে।

ছবির শিশুরা হয়তো জানেই না—তাদের এই দৌড়ানো, মাটিতে গড়াগড়ি খাওয়া, ফুলের গন্ধ মাখা মুহূর্তগুলো একদিন স্মৃতি হয়ে থাকবে। বড় হয়ে তারা হয়তো কাজের খোঁজে শহরে যাবে, ঢুকে পড়বে কংক্রিটের জঙ্গলে। তখন আর এমন সরিষার মাঠ থাকবে না, থাকবে না খোলা আকাশের নিচে অবাধ খেলাধুলা।

হারানো শৈশব বলতে শুধু খেলাধুলার অভাব নয়; এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে নিরাপত্তাহীনতা, দারিদ্র্য, শিশুশ্রমের ভয়। অনেক শিশুই আজ মাঠে দৌড়ানোর বয়সে কাজে নামতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ ইটভাটায়, কেউ হোটেলে, কেউ রিকশার পেছনে ঝুলে থাকা এক ছোট সহকারী। তাদের শৈশব হারিয়ে যায় প্রয়োজনের চাপে।

এই ছবিটি তাই শুধু সুন্দর দৃশ্য নয়; এটি একটি সতর্কবার্তা। আমাদের মনে করিয়ে দেয়—শিশু মানেই দায়িত্ব। তাদের জন্য চাই নিরাপদ শৈশব, খেলাধুলার সুযোগ, শিক্ষার নিশ্চয়তা। প্রযুক্তির যুগে দাঁড়িয়ে আমরা যদি প্রকৃতির সঙ্গে বেড়ে ওঠার এই সহজ আনন্দটুকু রক্ষা করতে না পারি, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জানবেই না—সরিষার হলুদ মাঠে দৌড়ানোর সুখ কতটা গভীর হতে পারে।

ছবির শিশুরা আজ হাসছে। প্রশ্ন হলো—এই হাসি কি আগামী দিনের বাংলাদেশেও টিকে থাকবে?