খুঁজুন
শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ২৩ কার্তিক, ১৪৩২

অতিবৃষ্টিতে ফরিদপুরে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা মরিচ ও সবজির

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ৮:২৮ এএম
অতিবৃষ্টিতে ফরিদপুরে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতা, ব্যাপক ক্ষতির শঙ্কা মরিচ ও সবজির

অতিবৃষ্টির কারণে ফরিদপুরের বিভিন্ন ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতায় ক্ষতির মুখে চাষিরা। দ্রুত ফসলের মাঠ থেকে পানি অপসারণ করতে না পাড়ায় শাক-সবজিসহ আমন ধানের আবাদে মারাত্মক লোকশানের দাবি কৃষকের। সম্প্রতি ঘন বৃষ্টির কারণে সবজি চাষিদের ক্ষতির কথা স্বীকার করে কৃষকের সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস কৃষি বিভাগের।

সরেজমিনে দেখা যায়, গত কয়েক দিনে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে ফরিদপুরে ফসলের মাঠগুলোতে পানি জমে গেছে। চাষীদের আবাদ করা মরিচ, বেগুন, করলা, ঝিঙা, পুঁইশাক, মূলাসহ বিভিন্ন ফসলের জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলার সদর উপজেলার কানাইপুর, মৃগী, কৃষ্ণনগরসহ অনেক এলাকায় মাঠের ফসল ডুবে গেছে। আমন মৌসুমে জন্য প্রস্তুত করা জমিতে ধান রোপণ করতে পারছে না কৃষক।

ধান-পাটের পাশাপাশি নানা ধরনের সবজি আবাদ করেছে অনেক কৃষক। জেলার নয়টি উপজেলায় উঁচু জমির তুলনায় নীচু জমিতে বৃষ্টির পানি জমেছে বেশি। তাছাড়া অনেক মাঠ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জলাবদ্ধতায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন চাষিরা। আবার কোথাও সরকারি খাল ভরাট করায় মাঠে তৈরি হয়েছে কৃত্রিম জলাবদ্ধতা। যার প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দাবি কৃষকদের।

জেলার সদর উপজেলার পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় তেতুলতলা-সমেশপুর সংযোগ সড়কের দিকনগরে সরকারি খাল ভরাট করায় ফসলি মাঠে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এতে মৃগী, শিরপোতলী ও দিকনগর গ্রামের প্রায় ১০০ একর জমির ফসলের আবাদ নিয়ে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। খালের মুখ কেটে দিয়ে দ্রুত পানি অপসারণ করার দাবি চাষি ও স্থানীয়দের।

ওই এলাকার কৃষক সালাম শেখ এবং জিন্না মাতুব্বর আমন ধান আবাদ করার জন্য জমি প্রস্তুত করেছেন। দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও জলাবদ্ধতার কারণে রোপণ করতে পারছেন না ধান। স্থানীয় কৃষক জিন্নাত আলী জমাদ্দার এবং মো রুবেল তাদের জমিতে বিপুল পরিমাণ শাক-সবজি রোপণ করেছেন, সঙ্গে রয়েছে মরিচ। সবই বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে মরে গেছে। তারা সবাই অভিযোগ করেন, স্থানীয় প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন ধরে সরকারি খাল ভরাট করে দখল করায় প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে তাদের জলাবদ্ধতার শিকার হতে হয়।

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, গত এক সপ্তাহের অতিরিক্ত বৃষ্টিতে নীচু জমির ফসল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মরিচ ও গ্রীষ্মকালীন সবজির মাঠে পানি বেশি দিন জমে থাকলে ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এছাড়া যদি কোথাও সরকারি খাল ভরাটের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে তারা চাষিদের পাশে থাকবেন বলে জানান।

জেলায় গত এক সপ্তাহে ৫০০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।

বিএনপি কর্মীকে হাতুড়িপেটার জেরে উত্তাল নগরকান্দা, বিএনপির কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:২২ পিএম
বিএনপি কর্মীকে হাতুড়িপেটার জেরে উত্তাল নগরকান্দা, বিএনপির কর্মসূচি বর্জনের ঘোষণা

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার পুরাপাড়া ইউনিয়নে বিএনপি কর্মী রেজাউল করিম সিরাজ মোল্লাকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর ঘটনার পর এলাকায় চরম উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার (০৮ নভেম্বর) বিকেলে ইউনিয়নের পুরাপাড়া বাজারে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেন স্থানীয় বিএনপি নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ।

মানববন্ধনে বক্তারা ঘোষণা দেন, পুরাপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রবি মেম্বারের বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা বিএনপি’র কোনো আনুষ্ঠানিক কর্মসূচিতে অংশ নেবেন না।

বক্তারা অভিযোগ করেন, স্থানীয়ভাবে ‘সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত’ রবি মেম্বার আওয়ামী লীগ নেতার ছেলেকে বিএনপি’র একটি অনুষ্ঠানে নিয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপি কর্মী রেজাউল করিমকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন। এতে করে এলাকায় আতঙ্ক ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে, পাশাপাশি বিএনপি’র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে বলে দাবি করেন তারা।

মানববন্ধনে পুরাপাড়া ইউনিয়ন বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মাতুব্বর বলেন, রবি মেম্বার চরম পর্যায়ের বেয়াদব ও সন্ত্রাসী। তিনি আমাদের কর্মী রেজাউল করিমকে কুপিয়ে ও হাতুড়ি-পেটা করে গুরুতর জখম করেছেন। যতদিন তার বিচার না হবে, ততদিন আমরা কোনো রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে যোগ দেব না।

ইউনিয়ন বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান খান বলেন, গত ১৭ বছর রবি মেম্বার ও তার পিতা আওয়ামী লীগ নাম ভাঙিয়ে এলাকায় দাপট দেখিয়েছেন। এখন আবার বিএনপি’র নাম ব্যবহার করে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

ইউনিয়ন বিএনপির দপ্তর সম্পাদক আলিমুজ্জামান টুলু মুন্সি বলেন, রবি মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে মুরুব্বী ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে আসছেন। তার হাতে বিএনপি কর্মী আহত হওয়ার ঘটনায় দলীয় ঐক্যে ফাটল ধরেছে। দলীয় ভাবমূর্তি রক্ষায় তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

মানববন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপি’র প্রচার সম্পাদক কাজী শোয়েবুর রহমান, ইউনিয়ন যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মনির মাতুব্বরসহ স্থানীয় বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

তারা সবাই রবি মেম্বারের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বলেন,
বিচার না হলে আমরা কোনো দলীয় কর্মকাণ্ডে অংশ নেব না। এলাকার শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।

এদিকে, স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রবি মেম্বারের তাণ্ডবে সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ। তার বিচার হলে এলাকায় আবার শান্তি ফিরবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিস্ফোরক মামলায় নগরকান্দা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

নগরকান্দা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:১৯ পিএম
বিস্ফোরক মামলায় নগরকান্দা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক গ্রেপ্তার

বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নগরকান্দার কোদালিয়া শহিদনগর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মিজানুর রহমান (৪৫)।

শনিবার (০৮ নভেম্বর) দুপুরে তাকে ফরিদপুরের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে তাকে পুলিশ নগরকান্দার ছাগলদী গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করে।

জানা যায়, গত বছর নভেম্বরে রাতে ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপি ও তার অঙ্গ সংগঠনের মিটিং চলাকালে তাদের উপর ককটেল হামলার অভিযোগে পরদিন ১১ নভেম্বর ভাঙ্গা থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা হয়। মামলার বাদি ভাঙ্গা উপজেলা বিএনপির বর্তমান সাংগঠনিক সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বিটু মুন্সী।

ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ভাঙ্গা থানায় বিস্ফোরক আইনে দায়ের হওয়া মামলার আসামী হিসেবে নগরকান্দা উপজেলার কোদালিয়া শহিদনগর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার(৭ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১২ টার দিকে নগরকান্দা থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে ভাঙ্গা থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ওই মামলার আসামী হিসেবে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (০৮ নভেম্বর) তাকে ফরিদপুর জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

সরকার আসে-সরকার যায়, কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না: শহিদুল ইসলাম বাবুল

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শনিবার, ৮ নভেম্বর, ২০২৫, ৮:১৫ পিএম
সরকার আসে-সরকার যায়, কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না: শহিদুল ইসলাম বাবুল

কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৪ আসনের বিএনপির সংসদ সদস্য মনোনীত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, ‘সরকার আসে-সরকার যায়, কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন হয় না। একজন ছিল দরদী শহীদ জিয়াউর রহমান। দুর্ভিক্ষের দেশ ছিল ১৯৭৩, ৭৪ ও ৭৫ সালে। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসলেন, ধুমকেতুর মতো আসলেন, খাল কাটলেন। ইরি ধানের চারা আনলেন বিদেশ থেকে। সবুজ বিপ্লব করলেন এবং দুর্ভিক্ষ দূর হয়ে গেল। বাংলাদেশ ১৯৮০ সালে চাল রপ্তানি করতে পেরেছিলেন সামান্য হলেও।’

শনিবার (০৮ নভেম্বর) সকালে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নে এক কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বাবুল বলেন, ‘১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় আসলে ২৫ বিঘা জমির খাজনা মওকুফ করে দিয়েছিলেন। ৫০০০ টাকার বেশি ঋণ মওকুফ করেছিলেন। অথচ আজ ১০ হাজার টাকা ঋণের জন্য কৃষকের কোমর বেঁধে জেলখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।’

সমাবেশ শেষে লুমিনাস গ্রুপের পৃষ্ঠপোষকতায় কৃষকদের মাঝে এসময় সার ও সবজি বীজ বিতরণ করা হয়। সমাবেশে অংশ নেয় সহস্রাধিক কৃষক।