খুঁজুন
শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৪ পৌষ, ১৪৩২

রাজনীতিতে ‘পরিকল্পিত প্রতারণা’ ও আগামীর প্রত্যাশা

মাহবুব আজীজ
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর, ২০২৫, ১১:৫১ এএম
রাজনীতিতে ‘পরিকল্পিত প্রতারণা’ ও আগামীর প্রত্যাশা

চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পর ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ রাজনৈতিক বাস্তবতায় বহু সীমাবদ্ধতার পরও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ক্রমেই স্বতন্ত্র জায়গা খোঁজার চেষ্টা করছে। ‘বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত’ হিসেবে সমালোচনা থাকলেও গণঅভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের উপস্থিতির কারণে দলটির প্রতি মানুষের আগ্রহ রয়েছে। যদিও তরুণ নেতৃবৃন্দ দলের নীতি- আদর্শ এখনও সুস্পষ্টভাবে প্রকাশ করতে পারেননি। এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াতসহ ২৫টি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদে স্বাক্ষর করলেও এনসিপি এখনও করেনি। বলছে, আইনি ভিত্তি নিশ্চিত হওয়ার আগে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করবে না তারা। এ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গেও সুস্পষ্ট দূরত্বে দাঁড়িয়েছে দলটি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর সংস্কার, গণভোটসহ যাবতীয় রাজনৈতিক আলোচনায় জামায়াত ও এনসিপির ঘনিষ্ঠতা প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু জুলাই সনদে এনসিপি স্বাক্ষর না করলেও জামায়াতের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত পুরো প্রেক্ষাপট বদলে দিয়েছে। এর কঠোর সমলোচনা করে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম রোববার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অধীন সংস্কারের বিষয়ে জামায়াত আকস্মিক যে অনুমোদন দিয়েছে, সেটি সংস্কার আকাঙ্ক্ষার ফল নয়; বরং একটি কৌশলগত অনুপ্রবেশ। সংস্কারবাদের ছদ্মবেশে এটি একটি রাজনৈতিক নাশকতা’ (সমকাল, ২০ অক্টোবর ২০২৫)। 

ইংরেজিতে দীর্ঘ পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, ‘জামায়াতের কথিত সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) আন্দোলন একটি সুচিন্তিত রাজনৈতিক প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।’
নাহিদ অভিযোগ করেছেন, ‘আমরা মৌলিক সংস্কার এবং বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের ভিত্তিতে জুলাই সনদের আইনি কাঠামো তৈরি করার জন্য অন্দোলন গড়তে চেয়েছিলাম। কিন্তু জামায়াত ও তার সহযোগীরা এটি ছিনতাই করেছে। এটিকে তারা দলীয় ক্ষুদ্র স্বার্থ উদ্ধারের দর-কষাকষির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।’

নাহিদের কঠোর অবস্থানের কারণ সম্পর্কে এনসিপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের পাঁচজন নেতা জানিয়েছেন, জুলাই সনদে স্বাক্ষরসহ জামায়াতের সাম্প্রতিক কার্যক্রমে বিশ্বাসভঙ্গের বোধ তৈরি হয়েছে। সে কারণেই ‘রাজনৈতিক দ্বিচারিতার বিষয়টি জনসমক্ষে নিয়ে আসতে চাইছেন তারা’ (প্রথম আলো, ২০ অক্টোবর, ২৫)।

২.
উচ্চকক্ষে পিআর, প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতা হ্রাসসহ সংবিধানকে আরও গণতান্ত্রিক করবার সংস্কার প্রস্তাবে শুরু থেকেই নিরলস এনসিপি। বিএনপির বেশ কয়েকটি ‘নোট অব ডিসেন্ট’ সত্ত্বেও এনসিপির দাবি, সংস্কার প্রস্তাবকে গণভোটের মাধ্যমে পাস করিয়ে আইনি কাঠামো দিতে হবে। জামায়াত বরাবর এই দাবির সঙ্গে থেকে আচমকা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে বসেছে। উপরন্তু আরও সাতটি ইসলামিক দলসহ উচ্চ ও নিম্নকক্ষে পিআর, জুলাইয়ের আইনি কাঠামোর দাবিতে রাজপথে আন্দোলন অব্যাহত রাখারও ঘোষণা দিয়েছে!
জামায়াতের রাজনৈতিক দ্বিচারিতা নতুন নয়। মুক্তিযুদ্ধে দেশের মানুষের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিল দলটি; পরে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সখ্য গড়ে তৃণমূলে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। কখনও আওয়ামী লীগ, কখনও বিএনপির প্রশ্রয়ে প্রভাব বাড়িয়ে এক পর্যায়ে সরকারের অংশী হয়। ইসলামিক শাসন পদ্ধতি তাদের অন্বিষ্ট; কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় গেলে দেশে শরিয়া আইন প্রবর্তনের ব্যাপারে অবস্থান স্পষ্ট করে না। আবার গত ৫০ বছরে উচ্চারণ না করলেও এখন পিআর পদ্ধতি প্রচলনের দাবিতে তারা আন্দোলনরত। সমীকরণ মেলানো সম্ভব– আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতির সুযোগে বিএনপির সমান্তরালে জামায়াতও নিজেকে বড় দল হিসেবে প্রতিষ্ঠায় মরিয়া। জুলাই সনদের আইনি কাঠামোর সম্মিলিত দাবির মাঝপথে এনসিপিকে একলা রেখে জামায়াতের সনদে স্বাক্ষর এরই পরিষ্কার ইঙ্গিত!

৩.
এনসিপির রাজনীতিকরা তরুণ, অনভিজ্ঞ; তবে গণঅভ্যুত্থানের অমিত সাহসে প্রাণবন্ত। তাই স্পষ্টভাবে জামায়াতের দ্বিচারী আচরণকে রাজনৈতিক প্রতারণা হিসেবে চিহ্নিত করতে পেরেছেন। এখন এই তরুণ নেতৃত্বকে আরও গভীরে ভাবতে হবে। প্রতিটি বিষয় আরও সূক্ষ্মভাবে মিলিয়ে দেখতে হবে।

সংস্কার নিশ্চয়ই চলমান প্রক্রিয়া; তারপরও তরুণ নেতৃত্বকে ভাবতে হবে– যে ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জুলাই সনদ প্রস্তুত হয়েছে, এতে মুক্তিযুদ্ধের বেশ কয়েকটি আকাঙ্ক্ষা অপসৃয়মাণ হবার আশঙ্কায়। বাহাত্তরের সংবিধানের মূল চার স্তম্ভ বাদ যাচ্ছে কাদের স্বার্থে? কেন? ধর্মনিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা বাতিল করে যুক্ত হচ্ছে– সকল সম্প্রদায়ের সহাবস্থান ও মর্যাদা। এ দেশে ৯০ শতাংশ মুসলমান; অন্য ধর্মাবলম্বীরা সহাবস্থান নিশ্চয়ই করবেন। কিন্তু সুশাসন না থাকলে বৃহদাকার হস্তীর পাশে ক্ষুদ্রকায় পিপীলিকার সহাবস্থানের পরিণতি হতে পারে। কাজেই রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ হতে হবে। আর ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়; সকল ধর্মের বিষয়ে রাষ্ট্রের অবস্থান হবে নৈর্ব্যক্তিক ও গণতান্ত্রিক– নাগরিকরা যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবেন।

পাকিস্তান তৈরি হয়েছিল ধর্মের নামে; ধর্মের দোহাই দিয়ে ২৩ বছর ধরে তারা পূর্ব পাকিস্তানকে নিপীড়ন করেছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ষাট দশকের জাতীয়তাবাদী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ– সবই অসাম্প্রদায়িক ও ধর্মনিরপেক্ষ স্বাধীন বাংলাদেশ তৈরির লক্ষ্যে পরিচালিত। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। ৫ আগস্টের আগে টানা কয়েকদিন উত্তাল রাজপথে নারী-পুরুষ, নবীন-প্রবীণ নির্বিশেষে কণ্ঠে তুলে নিয়েছিলেন অবিনাশী দেশের গান– ‘ধনধান্য পুষ্পভরা’। তখন কার পোশাক কেমন, কারও ভ্রুক্ষেপ ছিল না; সকলে ছিলেন একে অপরের সহযোদ্ধা। এই অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন বাংলাদেশের ছবি চূর্ণ হতে দেখি গণঅভ্যুত্থানের পর।

দেশজুড়ে মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য ভাঙা, মাজার ভাঙা, ধানমন্ডির ৩২ নম্বরসহ অজস্র ঐতিহাসিক নিদর্শন ভাঙা চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ছিল না। বরং এগুলোকে রাজনীতিতে ক্রমাগত ডানপন্থা ও উগ্রবাদের উত্থান-চিহ্ন হিসেবেই চিহ্নিত করতে হবে। তারই সঙ্গে সম্পর্কিত জুলাই সনদে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া; ৭ মার্চের ভাষণকে বাতিল করা। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণ মুক্তিযুদ্ধের গুরুত্বপূর্ণ সোপান। এই ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধের অপরাপর স্মৃতি, চিহ্ন কোনো দল বা ব্যক্তির একক সম্পত্তি নয়। অনেকে বলেন, আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে দলীয় সম্পত্তি বানিয়েছিল। যদি সেই বিবেচনায় মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অগ্রাহ্য হয়; তাহলে তা আওয়ামী লীগের সম্পত্তি হিসেবেই স্বীকার করে নেওয়ার শামিল। এই জাতির অনন্য বিজয়গাথা কোনো দলের সম্পত্তি হতে পারে না; মুক্তিযুদ্ধকে খাটো করে দেখবার প্রয়াস দেশের মানুষের ধারাবাহিক সংগ্রামকেই অস্বীকার করা; এতে সাম্প্রদায়িক শক্তিই কেবল লাভবান হয়। এ দেশের মানুষ কোনো রাষ্ট্রেরই দাসত্ব করতে পারে না। যেমন ভারতের দাসত্ব করতে পারে না, তেমনি পারে না পাকিস্তানের বাহুডোরে ধরা দিতে উৎসাহী হতে। স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকবে; সব বিদেশি শক্তির সঙ্গে সমান মর্যাদা ও স্বার্থের সম্পর্ক অক্ষুণ্ন রেখে।

অসাম্প্রদায়িকতা, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ– এ দেশের মানুষের আবহমানকালের সম্পদ। এনসিপির আহ্বায়ক রাজনৈতিক দলের প্রতারণা সম্পর্কে উচ্চকিত হয়েছেন; অভ্যুত্থানের বিজয়ী তারুণ্য একইভাবে স্বদেশের মৌলিক নিজস্বতায় অবিচল থেকে গণতন্ত্রের দ্বার উন্মুক্ত করবার কাজে ব্রতী হবেন। এই লক্ষ্যে দলীয় আদর্শ ও লক্ষ্য জাতির সামনে পেশ করতে হবে। সুস্পষ্টভাবে জানাতে হবে নিজেদের রাজনৈতিক মতাদর্শ। তবে আমরা কায়মনোবাক্যে প্রত্যাশা করি, গণঅভ্যুত্থানের তরুণদের একটিই পক্ষ– ‘বাংলাদেশ’; অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তবুদ্ধির, উদার গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। যে কোনো রাজনৈতিক প্রতারণার বিরুদ্ধে তারা সুস্পষ্ট অবস্থান নেবে। অন্ধকার তাড়িয়ে আলো আনা প্রজন্মের কাছে আমাদের এই আকাঙ্ক্ষা।

মাহবুব আজীজ: উপসম্পাদক, সমকাল; সাহিত্যিক
mahbubaziz01@gmail.com

অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদি

অনলাইন ডেস্ক
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ১০:২২ পিএম
অবশেষে না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ইনকিলাব মঞ্চের ওসমান হাদি

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।

মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ও ন্যাশনাল হেলথ অ্যালায়েন্সের (এনএইচএ) সদস্য সচিব ডা. মো. আব্দুল আহাদ এবং ইনকিলাব মঞ্চের সংগঠক ফাতিমা তাসনিম।

এদিকে রাতে নিজেদের ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ।

ওই পোস্টে বলা হয়, ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদের মোকাবিলায় মহান বিপ্লবী ওসমান হাদিকে আল্লাহ শহীদ হিসেবে কবুল করেছেন।’

এ ছাড়া ওসমান হাদির ফেসবুক পেজেও একই তথ্য জানানো হয়েছে।

আলফাডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত

মো. ইকবাল হোসেন, আলফাডাঙ্গা:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৬:১০ পিএম
আলফাডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস পালিত

“দক্ষতা নিয়ে যাবে বিদেশ রেমিট্যান্স দিয়ে গড়বো স্বদেশ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে আলফাডাঙ্গার কামারগ্রাম কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) হলরুমে উপজেলা প্রশাসন ও আলফাডাঙ্গা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আয়োজনে এ বর্ণাঢ্য র‌্যালী ও আলোচনা সভা অুনষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এ.কে.এম রায়হানুর রহমান।

আলফাডাঙ্গার কামারগ্রাম কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (টিটিসি) অধ্যক্ষ শাহিনুর ইসলামের সভাপতিত্বে ও টিটিসির প্রশিক্ষক মিজানুর রহমানের পরিচালনায় এসময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- আলফাডাঙ্গা আদর্শ ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এম এম মজিবুর রহমান।

এসময় বক্তব্য প্রদান করেন, আলফাডাঙ্গা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও সমকাল প্রতিনিধি মো.ইকবাল হোসেন, প্রশিক্ষক আশিকুল ইসলাম প্রমুখ।

আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উপলক্ষে কম্পিউটার বিভাগের প্রশিক্ষক খালেদ আল আরাফাত ও ইজাজ আহম্মেদ রাজকে সেরা প্রশিক্ষক হিসেবে ক্রেস্ট তুলে দেন উপস্থিতি অতিথিবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের সভাপতি আলফাডাঙ্গার কামারগ্রাম কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (টিটিসি) অধ্যক্ষ শাহিনুর ইসলাম বলেন, ‘আমাদের প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন বিষয়ের উপর হাতে-কলমে শিক্ষা প্রদান করা হয়। এখান থেকে স্বল্প মেয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে এলাকার শত শত বেকার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। অনেকে বিদেশ গিয়ে তাদের পরিবার পরিজন নিয়ে সুখে আছে।’

তিনি আরও জানান, এখন বিদেশে পাঠানোর নাম করে দালালের খপ্পরে পড়ে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। তিনি বিদেশ গামীদের ভিসা যাচাই-বাছাই করে বিদেশ যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন এবং দেশ থেকে বিভিন্ন কাজ শিখে নিজেকে দক্ষ করে বিদেশ গেলে কাউকে বসে থাকতে হবে না। তারা সহজেই তাদের ভাগ্য পাল্টাতে পারবে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শাহিনুর ইসলাম।

ফরিদপুরে মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ৫:৫৭ পিএম
ফরিদপুরে মাদ্রাসায় পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার রূপাপাত ইউনিয়নের কাটাগড় শাগীর শাহ্ দেওয়ান দাখিল মাদ্রাসায় চলমান পরিচ্ছন্নতা কর্মী নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক অনিয়ম ও আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ উঠেছে। উক্ত মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির বিরুদ্ধে যোগ্য প্রার্থীদের উপেক্ষা করে অদক্ষ প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়ার অপচেষ্টার অভিযোগ এনে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত আবেদন জানিয়েছেন ভুক্তভোগী পরীক্ষার্থীরা।

বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) জমা দেওয়া ওই অভিযোগপত্রে পরীক্ষার্থীরা উল্লেখ করেন যে, বর্তমান নিয়োগ প্রক্রিয়াটি প্রচলিত আইন ও বিধিবিধানের পরিপন্থী এবং এতে অনৈতিকভাবে অর্থ লেনদেনের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগকারী পরীক্ষার্থী রিয়াজুল, হাসিব খাঁন, আশিক মৃধা, আজিজুর রহমান ও নাঈম ইসলাম মাদ্রাসার সুষ্ঠু পরিবেশ ও যথাযথ প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছ নিয়োগ দানে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছেন।

তাদের অভিযোগ, উপজেলার কাটাগড় গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক মোল্যার ছেলে রাকিব মোল্যাকে অবৈধ প্রক্রিয়ায় নিয়োগ দিতে মোটা অঙ্কের আর্থিক লেনদেন করেছেন মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট। বিষয়টি নিরপেক্ষভাবে তদন্ত করে একটি স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন অন্যান্য নিয়োগ প্রত্যাশীরা। আবেদনের সাথে তারা নিয়োগ পরীক্ষার প্রবেশপত্র ও বিজ্ঞপ্তির কপি সংযুক্ত করে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মাদ্রাসাটির সুপার মুহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অনিয়ম ও অর্থ লেনদেনের বিষয়টি সঠিক নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও সকলের উপস্থিতিতে শতভাগ মেধার ভিত্তিতে যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেয়া হবে।

মাদ্রাসা পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মাওলানা ফরিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। তাছাড়া অর্থ লেনদেনের কোনো প্রশ্নই উঠে না। নিয়োগ প্রার্থীদের মধ্যে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় যে প্রথম হবে তাকেই নিয়োগ প্রদান করা হবে।

বোয়ালমারী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জালাল উদ্দীন বলেন, অভিযোগ সম্পর্কে জানতে পেরেছি। এ নিয়োগ পরীক্ষায় আমি একজন সদস্য মাত্র। পরীক্ষা বন্ধ করার ক্ষমতা আমার হাতে নেই। আমার হাতে নিয়োগ বন্ধ করার ক্ষমতা থাকলে নিয়োগ বন্ধ করে দিতাম। তাছাড়া আমার স্ত্রী অসুস্থ এ কারনে নিয়োগ পরীক্ষায় আমি উপস্থিত থাকতে পারবোনা। আমার একজন প্রতিনিধি থাকবেন।

বোয়ালমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস.এম রকিবুল হাসান বলেন, আমি নির্বাচনী ট্রেনিংয়ে গত দুই দিন ঢাকায় অবস্থান করছি। যার কারণে অভিযোগ সম্পর্কে জানা নেই। তারপরও যেহেতু অভিযোগ উঠেছে অবশ্যই অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।