খুঁজুন
শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ২২ কার্তিক, ১৪৩২

ফরিদপুরে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মধুমতি তীর রক্ষা বাঁধে ধ্বস

নুর ইসলাম, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৫ আগস্ট, ২০২৫, ৬:৪৪ পিএম
ফরিদপুরে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই মধুমতি তীর রক্ষা বাঁধে ধ্বস
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার আগেই বৃষ্টির পানিতে ধ্বসে গেছে মধুমতি নদীর ডান-তীর রক্ষা বাঁধের কয়েকটি অংশ। এতে নদীর তীরে বসবাসরত শতাধিক পরিবারের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। 
এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাজের মনিটরিং ব্যবস্থা দুর্বল থাকায় এবং যথাযথ ডাম্পিং না করে সিসি ব্লক বসানোর কারণে বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ধসে পড়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে প্রকল্পের কাজ চলমান থাকায় কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তারা এখনো কাজ বুঝে পাননি। কাজে অনিয়ম হলে তার দায়ভার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকেই নিতে হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জেলার আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ও টগরবন্দ ইউনিয়নের মিলনস্থল চর আজমপুর এলাকায় ডান-তীর রক্ষায় ৩০০ মিটার বাঁধের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স লিটন মল্লিক। কিন্তু গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টির পানিতে বাঁধের আনুমানিক ৩০ মিটার ধ্বসে পড়ার দৃশ্য দেখা যায়। এতে সিসি ব্লকগুলো পর্যায়ক্রমে নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, জেলার আলফাডাঙ্গা ও মধুখালী উপজেলার সীমান্তবর্তী মধুমতি নদীর পূর্বপাড়ে দীর্ঘ কয়েক বছর তীব্র ভাঙনের কবলে পড়ে ফসলি জমি, ঘর-বাড়ি, স্কুল, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা। নদী পাড়ের অনেক বসতি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে কয়েকবার বসতি স্থাপনা পাল্টিয়েছেন। এদের মধ্যে কেউ একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। গত সরকারের আমলে এলাকাবাসীর দাবির পেক্ষিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের চেষ্টায় মধুমতি পাড়ে সাড়ে ৭ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়। যা ‘মধুমতি নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন’ নামে ২০২৩ সালের ৬ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। ওই প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৮১ কোটি ১০ লাখ টাকা।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে ২৮টি প্যাকেজে কাজটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। মধুমতি নদীর ডান তীর রক্ষায় ২৮টি প্যাকেজের মধ্যে ২ নম্বর প্যাকেজের আওতায় আলফাডাঙ্গা উপজেলার টগরবন্দ ইউনিয়নের চর আজমপুর এলাকায় ৩০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের জন্য কাজ পায় মেসার্স লিটন মল্লিক নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৩০০ মিটার বাঁধ নির্মাণের কাজটি প্রায় শেষের দিকে। গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে নির্মাণ কাজের কয়েক জায়গা ধসে পড়ায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে কাজটি চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
স্থানীয় বাসিন্দা হান্নান শরীফ (৬৩) নামে এক ব্যক্তি বলেন, নদী ভাঙন প্রতিরোধে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হলে আমরা আশায় বুক বেঁধেছিলাম। কিন্তু কাজ শেষ না হতেই বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ধ্বসে পড়েছে। দ্রুত তীর সংরক্ষণ বাঁধ মেরামত না করা হলে অর্ধশতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
শেফালী বেগম (৫৫) নামে এক বাসিন্দা জানান, স্থায়ী বাঁধ হওয়ার কারণে গত দুই মাস আগে ধারদেনা করে বাড়িতে একটা ঘর দিয়েছি। কিন্তু সেই স্থায়ী বাঁধও নদীতে যদি ভেঙে যায়। তাহলে তো আর কোথাও বলার জায়গা থাকলো না। আমরা এই এলাকায় বসবাস যাতে করতে পারি, সেই অনুযায়ী বাঁধটি যেন সরকার করেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মেসার্স লিটন মল্লিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বার্ধীকারী লিটন মল্লিককে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোনটি ধরেননি।
তবে প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, নদীতে অতিরিক্ত পানির চাপে বাঁধের কিছু অংশ ধ্বসে গেছে। জরুরি ভিত্তিতে ওই অংশে বালু ভর্তি জিও ব‍্যাগ ফেলানো হচ্ছে। পরবর্তীতে নদীর পানি কমলে তা মেরামত করে দেওয়া হবে। আমাদের বাঁধ নির্মাণের কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেনের মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে ধসে যাওয়া বাঁধ নির্মাণ কাজটির দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী মো. তৌফিকুর রহমান জানান, আমি সবেমাত্র ফরিদপুরে নতুন যোগদান করেছি। বাঁধ নির্মাণ কাজটি স্যারের (নির্বাহী প্রকৌশলী) সাথে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিষয়টি নিয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কথা হয়েছে। প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বাঁধের ধ্বসে যাওয়া অংশের কাজ পুণরায় করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কাজে কোন অনিয়ম আছে কি-না সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

চরভদ্রাসনে আওয়ামী লীগের তিন নেতা গ্রেপ্তার

মুস্তাফিজুর রহমান শিমুল, চরভদ্রান:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ৫:৪০ পিএম
চরভদ্রাসনে আওয়ামী লীগের তিন নেতা গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে উপজেলা আওয়ামী লীগের তিন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৭ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উক্ত আইনে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃত ব্যাক্তিরা হলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শ্রম বিষয়ক সম্পাদক শেখ আবুল খায়ের (৫৮), প্রচার সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোতালেব হোসেন মোল্যা (৫৪) ও আওয়ামীলীগ নেতা কামাল হোসেন মোল্যা (৫০)।

 

গ্রেপ্তারের সত্যতা নিশ্চিত করে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রজিউল্লাহ খান বলেন, সন্ত্রাস বিরোধী আইনে তাদের তিনজনকে গ্রেতার করে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।

ফরিদপুরে এম-ট্যাবের আঞ্চলিক কমিটির অনুমোদন

ফরিদপুর প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ১:৩৩ পিএম
ফরিদপুরে এম-ট্যাবের আঞ্চলিক কমিটির অনুমোদন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র অন্যতম পেশাজীবি সংগঠন এম-ট্যাব (মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ) এর ফরিদপুর আঞ্চলিক শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়েছে।

এম-ট্যাবের কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি এ কে এম মুসা লিটন ও মহাসচিব বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব বৃহস্পতিবার (০৬ নভেম্বর) ফরিদপুর, রাজবাড়ি, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, গোপালগঞ্জ জেলা নিয়ে এ আঞ্চলিক কমিটির অনুমোদন দেন।

এতে মোহাম্মদ আকতার হোসেনকে সভাপতি ও আব্দুল হাফিজকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন করা হয়।

এতে বিএমএ ও ড্যাবের জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান শামীমকে প্রধান করে ৬ জনকে উপদেষ্টা করা হয়েছে। উপদেষ্টাদের অন্যান্যরা হলেন, অধ্যাপক ডা. মোঃ রফিকুল ইসলাম, ডা. তানসিভ জুবায়ের (নাদিম), মো. আক্তারুজ্জামান খান, মো. মোফাজ্জেল হোসেন, মো. ওবায়দুল্লাহ।

কমিটির অন্যান্যরা হলেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি- মো. নুরুল আলম রাসেল, সহ-সভাপতি- মোহাম্মদ আলী, মোঃ ইমরান আলী, বুলবুল হুসাইন, উত্তম কুমার মজুমদার, সঞ্জিত বালা, মোঃ ওমর আলী মনির, মোঃ উজ্জল হোসাইন, আব্দুল হাফিজ ও আবুল হোসাইন রামিম, সহ- সাধারণ সম্পাদক- মোঃ মাহবুব হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক- ইমাম হোসেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক- মোঃ নাহিদুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক- মোঃ জাহাঙ্গীর আলম তামিম, সহ-প্রচার সম্পাদক- মোঃ আল হাসিব রাব্বি, দপ্তর সম্পাদক- মোঃ শাহিদুল ইসলাম, সহ-দপ্তর সম্পাদক- হাসান মাহমুদ, অর্থ সম্পাদক- মোঃ আসাদুল ইসলাম শান্ত, সহ-অর্থ সম্পাদক- মোঃ মনিরুজ্জামান, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক- মোঃ ওহাব আলী, সমাজকল্যাণ সম্পাদক- ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক- সঞ্জয় মন্ডল, ধর্মবিষয়ক সম্পাদক- রাইয়ানুর রহমান, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- মাহমুদা হক, সহ-মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- ইতি আক্তার, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক- সৌরভ মল্লিক, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক- মোঃ মেহেদী হাসান, শিক্ষা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক- মোঃ হাসান রাসেল, সহ-শিক্ষা ও ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক- বায়েজীদ বোস্তামী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক- মোঃ মুনিবুর রহমান, সহ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক- মোঃ গোলাম রাব্বী, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মোঃ আকাশ কুমার প্রামানিক, সহ-ক্রীডা ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক- মোঃ ওয়াসিম শেখ, কার্যকারী সদস্য- মোঃ আনিস শেখ, পারুল আক্তারী, মোঃ জিহাদুল ইসলাম, মোঃ ইমরান নাজির।

ফরিদপুরে হেমন্ত ঋতুতেই প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা

হারুন-অর-রশীদ, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৭ নভেম্বর, ২০২৫, ৭:৪০ এএম
ফরিদপুরে হেমন্ত ঋতুতেই প্রকৃতিতে শীতের আগমনী বার্তা

প্রকৃতিতে এখন ঋতুবদলের আয়োজন। শরৎ শেষে হেমন্ত নামছে। এরপর শীতকাল। কিন্তু এখনই প্রকৃতি যেন জানান দিচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। দক্ষিণের জেলা ফরিদপুরে শীত নামা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যেই প্রকৃতিতে বইতে শুরু করেছে মৃদু হিম বাতাস।

শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের ওপর ভোরের সূর্যের আলো হালকা লালচে রঙয়ের ঝিলিক দেখা গেছে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঘাসের মাথায় যেন মুক্তোর মতো শিশির কণা জমে আছে।

সারদিনের তীব্র গরম শেষে গভীর রাত থেকে শুরু হচ্ছে হালকা হিমেল হাওয়া, সঙ্গে নামছে হালকা কুয়াশা। শীতকে ঘিরে সক্রিয় হচ্ছে গ্রাম অঞ্চলের পিঠাপুলির দোকানগুলো।

ফরিদপুরের সালথার রিপন মাতুব্বর বলেন, ঘাসের ওপর শিশির কণা রৌদ্রে ঝলমল করে, হাঁটাচলা করলে শীতে পা ভিজে যায়। আমাদের এলাকায় শীতের আগমন ঘটে গেছে। শীত এলাকার মানুষের জন্য কষ্টের সঙ্গে আনন্দেরও।

ফরিদপুর সদরের সমির খাঁ বলেন, ফরিদপুরে এবার আগাম শীতের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। শীতে শাকসবজির বেশি আবাদ হয়। নতুন ধান কাটা শুরু হয়।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানান, ফরিদপুরে সকালে ও রাতে আমরা শীতের ছোঁয়া পাচ্ছি। তাপমাত্রারও কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে।