শামা ওবায়েদের গাড়ি ভাংচুর : ফরিদপুরে ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার
ফরিদপুরে শীতের তীব্রতা দিন দিন বাড়ছে। ঘন কুয়াশা, হাড় কাঁপানো ঠান্ডা আর ঠান্ডা বাতাসে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর, ছিন্নমূল ও চরাঞ্চলের বাসিন্দারা। শীতজনিত রোগেও বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা।
ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ফরিদপুর শহর ও গ্রামাঞ্চলে কুয়াশার দাপট দেখা যাচ্ছে। সকালে সড়কে যান চলাচল কমে যায়, কাজে বের হতে দেরি করছেন দিনমজুররা। ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ড ও রেলস্টেশন এলাকায় দেখা যায়, খোলা জায়গায় আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন ভাসমান মানুষজন। অনেকের গায়ে নেই পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র।
সদর উপজেলার ছুরাপ আলী নামের এক দিনমজুর ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, “শীতে কাজ কমে গেছে। ঠান্ডায় শরীর চলে না, তবু না নামলে সংসার চলবে না।” একই অবস্থা চরাঞ্চলের মানুষেরও। কাঁচা ঘর, পলিথিন আর খড়ের বেড়ায় শীত ঠেকানো কঠিন হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরিবারগুলো।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও জেলা সদর হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিউমোনিয়া, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট ও জ্বর নিয়ে প্রতিদিন উল্লেখযোগ্য সংখ্যক রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এ বিষয়ে ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহমুদুল হাসান ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, “শীতকালে শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকে। নিউমোনিয়া, ঠান্ডা ও শ্বাসকষ্টের রোগী বাড়ছে। তাইতো সবাইকে গরম কাপড় ব্যবহার, ঠান্ডা এড়িয়ে চলা এবং প্রয়োজনে দ্রুত হাসপাতালে আসার পরামর্শ দিচ্ছি।”
শীত মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
এব্যাপারে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ কামরুল হাসান মোল্যা ‘ফরিদপুর প্রতিদিন‘কে বলেন, ‘মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে ফরিদপুরের জন্য শীতবস্ত্র পাঠানো হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই হয়তো সেগুলো আমরা হাতে পেয়ে যাব। এরপর থেকেই শীতবস্ত্র বিতরণের কাজ শুরু করবো।
‘প্রকৃত অসহায়, হতদরিদ্র ও দুস্থদের তালিকা করে এ শীতবস্ত্র সহায়তা দেওয়া হবে বলেও জানান এ জেলা প্রশাসক।”
তবে স্থানীয়দের দাবি, ‘শীত যত বাড়ছে, ততই প্রয়োজন বাড়ছে সহায়তার। তাই ফরিদপুরের এই শীতে শুধু আবহাওয়ার খবর নয়—এটি মানুষের জীবনযুদ্ধের খবর। কর্তৃপক্ষের উদ্যোগের পাশাপাশি সমাজের সামর্থ্যবানদের আরও এগিয়ে আসার মধ্য দিয়েই শীতের এই দুর্ভোগ কিছুটা হলেও লাঘব হতে পারে।’
ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় লাইসেন্স ছাড়া বিএসটিআইয়ের লোগো ও ভুয়া বারকোড ব্যবহার করে নকল টয়লেট ক্লিনার, টাইলস ক্লিনার ও হ্যান্ডওয়াশ উৎপাদনের দায়ে একটি কারখানার মালিককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের আমিরাবাদ মোড় এলাকায় অবস্থিত বিজয় কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি কারখানায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা যায়, সদর ইউনিয়নের পূর্ব শ্যামপুর এলাকার হান্নান বেপারীর ছেলে আরাফাত হোসেন বিজয় (১৯) দীর্ঘদিন ধরে বিএসটিআইয়ের অনুমোদন ছাড়াই লোগো ও ভুয়া বারকোড ব্যবহার করে নকল টয়লেট ক্লিনার, টাইলস ক্লিনার এবং হ্যান্ডওয়াশ উৎপাদন করে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে কারখানায় বিভিন্ন কেমিক্যালের বোতল, জার ও প্যাকেট জব্দ করা হয়।
এ সময় কারখানায় কোনো কারিগরি ডিগ্রীসম্পন্ন বা প্রশিক্ষিত কর্মী পাওয়া যায়নি। এছাড়া উৎপাদিত নকল পণ্য বাজারজাতের প্রমাণ পাওয়ায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আনজুম পিয়া বলেন, “লাইসেন্স ছাড়া বিএসটিআইয়ের লোগো ও ভুয়া বারকোড ব্যবহার করে নকল পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করায় বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন আইন, ২০১৮ অনুযায়ী বিজয় কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিককে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।”
তিনি আরও জানান, জনস্বার্থে এ ধরনের অবৈধ কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি আবুল বাশার খান।
সোমবার (২২ ডিসেম্বর) ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশনা জাহানের কাছ থেকে আবুল বাশার খানের পক্ষে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন তাঁর আপন ছোট ভাই ওবায়দুর রহমান খান।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহকালে উপস্থিত ছিলেন আবুল বাশার খানের ঘনিষ্ঠ সমর্থক শাহ কামাল মাকসুর, মোহাম্মদ মিন্টুসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও শুভানুধ্যায়ীরা।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ওবায়দুর রহমান খান। তিনি বলেন, “ফরিদপুর-১ আসন থেকে আমার বড় ভাই শিল্পপতি আবুল বাশার খান স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন। এ লক্ষ্যে আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছি। আমরা সবসময় সাধারণ মানুষের পাশে থাকতে চাই এবং সমাজের নানা অনিয়ম ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে চাই।”
তিনি আরও বলেন, “এই অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন ও মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমরা একটি ইতিবাচক পরিবর্তন চাই। এলাকাবাসীর ন্যায্য দাবি ও প্রত্যাশা সংসদে তুলে ধরতে পারাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এজন্য সকলের দোয়া, ভালোবাসা ও সমর্থন কামনা করছি।”
এ সময় তিনি দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেন, “আপনাদের দেওয়া দায়িত্ব ও আমানত আমরা কখনো নষ্ট করব না। ফরিদপুর-১ আসনের মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে আবুল বাশার খান কাজ করে যাবেন ইনশাআল্লাহ।”
মনোনয়নপত্র সংগ্রহের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর-১ আসনে নির্বাচনী মাঠে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবুল বাশার খানের আনুষ্ঠানিক প্রস্তুতি শুরু হলো বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
আপনার মতামত লিখুন
Array