খুঁজুন
শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ, ১৪৩২

ফরিদপুরে ভাইরাল অজ্ঞাত মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর পচন ধরা হাত কেটে জীবন বাঁচালেন চিকিৎসকরা

ফরিদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫, ১০:২৮ এএম
ফরিদপুরে ভাইরাল অজ্ঞাত মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর পচন ধরা হাত কেটে জীবন বাঁচালেন চিকিৎসকরা
গত ২৫ এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের এক ভাইরাল পোস্ট ফরিদপুরের স্থানীয়দের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এক অজ্ঞাত মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর মর্মান্তিক অবস্থার দিকে। তার একটি হাতে পচন ধরে মারাত্মক সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছিল। তবে স্থানীয় তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের তৎপরতা এবং চিকিৎসকদের নিবিড় প্রচেষ্টায় সেই নারীর জীবন রক্ষা পেয়েছে, যা মানবিকতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
‘ফরিদপুর লাইভ’ ফেসবুক পেজে ২৫ এপ্রিল প্রকাশিত একটি পোস্টে নারীর শোচনীয় শারীরিক অবস্থার বিবরণ প্রকাশ পায়। পোস্টে উল্লেখ করা হয়, নারীর একটি হাত মারাত্মকভাবে পচে গিয়েছিল এবং পোকায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে গিয়েছিল। এই হৃদয়বিদারক তথ্য জানার পর স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী তরুণরা দ্রুত পদক্ষেপ নেন। শয়ন, রাইয়ান আহমেদ সৌরভ, বৈশাখী, আর. এম. হৃদয়, নাজমুল, নাইস, আনিসুর, সজল, ওয়ালিদসহ একদল তরুণ তাকে খুঁজে বের করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
হাসপাতালে প্রাথমিক পরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানান, নারীর হাতের সংক্রমণ এতটাই গুরুতর যে জরুরি অপারেশন ছাড়া তার জীবন বাঁচানো সম্ভব নয়। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিক সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. মো. শাহীন জোদ্দারের নেতৃত্বে ৪ মে ২০২৫ তারিখে একটি চিকিৎসক দল জরুরি অপারেশনের মাধ্যমে তার আক্রান্ত হাতটি কেটে ফেলেন।
ডা. শাহীন জোদ্দার বলেন, “রোগীর অবস্থা ছিল অত্যন্ত সংকটাপন্ন। সংক্রমণ রক্তে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। সময়মতো অপারেশন না হলে তার মৃত্যু অনিবার্য ছিল। এই তরুণ স্বেচ্ছাসেবীদের দ্রুত উদ্যোগ এবং মানবিকতা সত্যিই প্রশংসনীয়। তারা নিয়মিত হাসপাতালে এসে রোগীর দেখাশোনা করছেন, যা আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করে।”
তিনি আরও জানান, “বর্তমানে রোগীর অবস্থা স্থিতিশীল এবং তার স্বাস্থ্যের উন্নতি হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, তিনি শীঘ্রই সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন। তবে, তার মানসিক প্রতিবন্ধকতার কারণে দীর্ঘমেয়াদী মনোসামাজিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি।”
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ৪ মে অপারেশনের পর নিয়মিত পর্যবেক্ষণে নারীর শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। চিকিৎসকরা আশা করছেন, শিগগিরই তাকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া যাবে।
উদ্ধারকারী তরুণদের মধ্যে সৌরভ, বৈশাখী ও হৃদয় বলেন, “‘ফরিদপুর লাইভ’ পেজের পোস্ট দেখে আমরা তাকে খুঁজতে বেরিয়েছিলাম। তার হাতের অবস্থা দেখে আমরা স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলাম। দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পেরে আমরা স্বস্তি পেয়েছি। এখন আমাদের একমাত্র লক্ষ্য, তাকে তার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া।”
নারীর জীবন বাঁচাতে চিকিৎসক ও স্বেচ্ছাসেবীদের এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা ফরিদপুরবাসীর মাঝে মানবিকতার এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে। তবে, নারীর পরিচয় ও পরিবারের সন্ধান পেতে স্থানীয় প্রশাসন এবং গণমাধ্যমের সহযোগিতা কামনা করেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা।
এ ঘটনা প্রমাণ করে, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধতা এবং মানবিকতার শক্তি যেকোনো সংকটে আশার আলো জ্বালাতে পারে। ফরিদপুরের চিকিৎসক, স্বেচ্ছাসেবী ও সাধারণ মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে এই নারীর জীবন রক্ষা পাওয়া মানবতার এক অম্লান বিজয়।

সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

সালথা প্রতিনিধি:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৫১ পিএম
সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে সালথায় মানববন্ধন 

গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে নির্মমভাবে হত্যার প্রতিবাদে এবং দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফরিদপুরের সালথায় মানববন্ধন করেছে স্থানীয় সাংবাদিকরা।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট ) বিকেলে সালথা প্রেসক্লাবের আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

সালথা প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. সেলিম মোল্লার সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নাহিদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন, সালথা প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মনির মোল্লা, সহ-সভাপতি হারুন-অর-রশীদ, সাইফুল ইসলাম, রেজাউল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, অর্থ সম্পাদক শরিফুল হাসান, দপ্তর সম্পাদক জাকির হোসেন, প্রচার সম্পাদক লাভলু মিয়া, সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সম্পাদক পারভেজ মিয়া, সাহিত্য ও পাঠাগার সম্পাদক আকাশ সাহা, কার্যনির্বাহী সদস্য এম কিউ হুসাইন বুলবুল, বিডি২৪লাইভ-এর ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি মো. এহসানুল হক মিয়া প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা তুহিন হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করেন। এসময় বক্তারা বলেন, তুহিন হত্যার সাথে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। দেশের সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তায় কুপিয়ে ও জবাই করে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিনকে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

আব্দুল মান্নান, ভাঙ্গা:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪৭ পিএম
বিস্ফোরক মামলা : ভাঙ্গায় ইউপি চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার মালিগ্রাম এলাকায় থেকে ভাঙ্গা থানার একটি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে একইদিন দুপুরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লার বিরুদ্ধে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ছাত্রদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল। তাছাড়া ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর থেকে সে কিছুটা গা ডাকা দিয়েছিল। তিনি যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফরিদপুর-৪ আসনের সাবেক এমপি মজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরীর আস্তাভাজন ছিলেন।

এবিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, শুক্রবার সকালে ভাঙ্গা উপজেলার চান্দ্রা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল খালেক মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ভাঙ্গা থানাযর বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়।

ফরিদপুরে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

এন কে বি নয়ন, ফরিদপুর:
প্রকাশিত: শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫, ৮:৪২ পিএম
ফরিদপুরে পাট শুকানোকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে চলাচলের সড়কে পাট শুকানোর বাঁশপুতাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার (০৮ আগস্ট) সকালে উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৭ জনকে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে উত্তম সরকার (৩০) নামে একজনকে আশঙ্কজনক অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

গুরুতর আহতরা হলেন, বাজিদাদপুর গ্রামের বিশ্বাস গ্রুপের জগদীশ বিশ্বাস (৬০), জয়ন্ত বিশ্বাস (২৬) ও অপূর্ব বিশ্বাস (৩৫) এবং বালা গ্রুপের শিবু বালা (৬০), রতন বালা (৪০) ও সুজন সরকার (২৫)। তারা সকলেই ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এছাড়া জগদীশের স্ত্রী ইতি বিশ্বাস (৫২), সুশান্ত বিশ্বাস (৩০), রবিন বিশ্বাস (৫০), সমীর বিশ্বাস (৪০), সুজন সরকার (৩০), শুক্লা বিশ্বাস (৩৩)সহ বাকিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার শেখর ইউনিয়নের বাজিদাদপুর গ্রামের নীতিশ কুমার বালা (৫৫) ও জগদ্বীশ কুমার বিশ্বাসের (৬০) মধ্যে বাড়ির সামনে রাস্তা সংলগ্ন জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক বসে। সম্প্রতি শালিশ মিমাংসা করে সীমানা নির্ধারণ পিলার বসিয়ে দেওয়া হয়। শুক্রবার সকালের দিকে জগদিশ বিশ্বাসরা সড়কের ওপর পাট শুকানো বাঁশ পুঁততে গেলে প্রতিপক্ষ নীতিশ কুমার বালার লোকজন বাঁধা দেয়। এ সময় বাঁশ সরানো নিয়ে দুইপক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উভয়পক্ষের ৭ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।

সংঘর্ষের ঘটনাস্থল পরিদর্শনকারী শেখর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবু সাইদ (পান্নু) জানান, সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুইপক্ষকে নিবৃত করার চেষ্টা করি। সংঘর্ষ থেমে যাওয়ার খবর পেয়ে টহল পুলিশ অর্ধেক পথ থেকে ফিরে গেছেন।

বোয়ালমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সাবরিনা হক রুম্পা জানান, একটি মারামারির ঘটনায় ১৭ জন হাসপাতালে আসেন। সেখান থেকে ৭জনকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বোয়ালমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।